বিপজ্জনক গোষ্ঠীশাসনের কবলে যুক্তরাষ্ট্র : বাইডেন

টুইট ডেস্ক : শেষ হতে চলেছে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট হিসেবে জো বাইডেনের মেয়াদ। আগামী ২০ জানুয়ারি দেশটির নতুন প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ নেবেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। এদিকে প্রেসিডেন্ট হিসেবে নিজের শেষ ভাষণ দিয়েছেন বাইডেন।

সেখানে তিনি যুক্তরাষ্ট্রে গোষ্ঠীশাসনের বিপদের কথা বলেছেন। তার মতে, যুক্তরাষ্ট্রে গোষ্ঠীশাসন গণতন্ত্রের বিপদের কারণ হয়ে উঠছে। সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতা বিপদের মুখে রয়েছে বলেও জানিয়েছেন তিনি।

বৃহস্পতিবার (১৬ জানুয়ারি) পৃথক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে সংবাদমাধ্যম ডয়চে ভেলে এবং এনডিটিভি।

সংবাদমাধ্যম বলছে, আগামী সোমবার (২০ জানুয়ারি) হোয়াইট হাউস থেকে তার বিদায়ের পরেই যুক্তরাষ্ট্রে ‘বিপজ্জনক গোষ্ঠীশাসন’ শুরু হতে চলেছে। স্থানীয় সময় বুধবার ওভাল অফিস থেকে জাতির উদ্দেশে দেওয়া বিদায়ী ভাষণে এই আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন।

হোয়াইট হাউসে তার উত্তরসূরি ডোনাল্ড ট্রাম্পের নাম না নিলেও বিদায়ী ভাষণে বাইডেনের ‘নিশানা’ ছিল স্পষ্ট। তিনি বলেন, “বিপুল সম্পদ, ক্ষমতা, প্রতিপত্তি নিয়ে একটি অভিজাত গোষ্ঠীর শাসন প্রতিষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। এই পরিস্থিতি দেশের অভ্যন্তরীণ গণতন্ত্রের জন্য বিপজ্জনক। আমাদের মৌলিক অধিকার ও স্বাধীনতা রক্ষার জন্য অগ্রণী ভূমিকা নিতে হবে।”

বাইডেন বলেছেন, “অল্প কিছু ধনী মানুষের হাতে ক্ষমতা কেন্দ্রিভূত হওয়ার প্রবণতা বাড়ছে। এটা ভয়ঙ্কর প্রবণতা এবং তা মার্কিণ গণতন্ত্রে বিপদের কারণ। যুক্তরাষ্ট্রে আজ গোষ্ঠীশাসনতন্ত্র তার রূপ নিতে শুরু করেছে।

প্রভূত বিত্তশালী ও তাদের ক্ষমতা ও প্রভাব আমাদের গোটা গণতন্ত্রকে বিপদের মুখে ঠেলে দিয়েছে। আমাদের মূল স্বাধীনতা ও অধিকার বিপন্ন হতে পারে।”

বাইডেন তার ভাষণে কারও নাম করেননি, কিন্তু ৫০ বছরের বেশি সময় ধরে জনজীবনে থাকা বিদায়ী প্রেসিডেন্ট খুব সম্ভবত টেসলা ও স্পেস এক্সের সিইও ইলন মাস্ক, অ্যামাজনের প্রতিষ্ঠাতা জেফ বেজোস এবং মেটার সিইও মার্ক জাকারবার্গ যেভাবে নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের পাশে এসে দাঁড়িয়েছেন, তার দিকেই ইঙ্গিত করেছেন।

আগামী ২০ জানুয়ারি ট্রাম্প যখন প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব নেবেন, তখন এই তিনজনই উপস্থিত থাকবেন।

বাইডেন বলেছেন, “আমি পরিবেশকে বাঁচিয়ে দেশকে আর্থিক অগ্রগতির দিকে নিয়ে যেতে চেয়েছিলাম। কিন্তু আমরা পরিবেশ বাঁচাতে যে পদক্ষেপ নিয়েছিলাম, ক্ষমতাশালীরা তাদের বিপুল ও অনিয়ন্ত্রিত প্রভাব খাটিয়ে তা নষ্ট করতে চায়।”

বাইডেন জানিয়েছেন, “যুক্তরাষ্ট্রের মানুষ ভুল তথ্যের নিচে চাপা পড়ে যাচ্ছেন। এই মিথ্যা তথ্য ছড়িয়ে ক্ষমতার অপব্যবহার করা হচ্ছে। সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতাও বিপদের মুখে। স্বাধীন সংবাদমাধ্যমের ধারণা ভেঙে পড়ছে। সামাজিক মাধ্যমে ফ্যাক্ট চেক হচ্ছে না।”

যুক্তরাষ্ট্রের বিদায়ী এই প্রেসিডেন্ট বলেছেন, তিনি সংবিধানের সংশোধন চান। তিনি চান, কোনও প্রেসিডেন্ট যদি তার কার্যকালে কোনও অপরাধ করেন, তবে তার বিচার হবে।

মূলত ট্রাম্প প্রথম মেয়াদে প্রেসিডেন্ট থাকাকালীন ২০১৬ থেকে ২০২০ সালে নানা বিতর্কিত পদক্ষেপ করেছিলেন। সে দিকে ইঙ্গিত করেই বাইডেন বুধবার এসব কথা বলেন।