নেই তদারকি, গরুর মাংস যাত্রাবাড়িতে ৭৫০ মানিকনগরে ৭৮০

টুইট ডেস্ক : রাজধানীর যাত্রাবাড়িতে গরুর মাংস বিক্রি হচ্ছে ৭৫০ টাকায়। তবে যাত্রবাড়ি থেকে দেড় কিলোমিটার দূরে মানিকনগর বাজারে গরুর মাংস ৭৮০ টাকা কেজি দরে বিক্রি করছেন ব্যবসায়ীরা।

সিটি করপোরেশনসহ সংশ্লিষ্টদের তদারকির অভাবে এলাকাভেদে মাংসের দামের এই তারতম্য হচ্ছে বলে অভিযোগ ক্রেতাদের। মাংসের দাম কমানোর উদ্যোগ নেওয়ার পাশাপাশি কঠোর তদারকির দাবি জানিয়েছেন ক্রেতারা।

শনিবার (১৬ মার্চ) সকালে সরেজমিনে রাজধানীর যাত্রাবাড়ি বাজার, ধলপুর বাজার, গোলাপবাগ বাজার ও মানিকনগর বাজার ঘুরে এ চিত্র দেখা গেছে।

যাত্রাবাড়ি বাজারের মাংস বিক্রেতা আলম শেখ বলেন, শবে বরাতের দিন থেকে ৭৫০ টাকা কেজি দরে মাংস বিক্রি করছি। জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে ৭০০ টাকা কেজি দরে মাংস বিক্রি করেছি।

মাংসের দাম বৃদ্ধির কারণ প্রসঙ্গে যাত্রাবাড়ি বাজারের আরেক মাংস ব্যবসায়ী মো. সুমন বলেন, গরুর মাংসের দাম যদি কমাতে চান সর্বপ্রথম গরুর খাদ্যের দামটা কমাতে হবে।

খাদ্যের দাম যদি কমে যায় তাহলে অটোমেটিক্যালি মাংসের দাম কমে আসবে। খাদ্যের দাম কম থাকলে কৃষক আমাদের কাছে কম দামে গরু বিক্রি করবে।

গরু কমদামে কিনতে পারলে আমরা তখন এমনিই কমদামে বিক্রি করব। আর চামড়ার ব্যাপারটা যদি সরকার ভালোভাবে খেয়াল করে তাহলে গরুর মাংস ৫০০ টাকা কেজি বিক্রি সম্ভব।

ইলেকট্রিক মিস্ত্রির কাজ করেন বেলাল হোসেন। তিনি যাত্রবাড়ি বাজারে মাংস কিনতে এসেছেন। বেলাল বলেন, আমরা মেসে তিনজন থাকি। আজকেই প্রথম মাংস কিনলাম। ১ কেজি কিনেছি। দাম অনেক। মাংসের দাম কমালে ভাল হয়।

তাহলে আমাদের মতো স্বল্প আয়ের মানুষ মাংস খেতে পারবে। আরেক ক্রেতা হেলাল উদ্দিন বলেন, রমজান মাসে মাংসের দাম কমিয়ে ৭০০ টাকা করলেও আমাদের মতো ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা সপ্তাহে অন্তত একদিন মাংস খেতে পারতো।

গোলাপবাগ বাজারে গিয়ে দেখা যায়, আলী হোসেন নামে এক কসাইও ৭৫০ টাকা কেজি দরে গরুর মাংস বিক্রি করছেন। তিনি বলেন, প্রথম রোজা থেকে ৭৫০ টাকা করে মাংস বিক্রি করছি। মানিকনগরের আরেক মাংস বিক্রেতা শরিফ উদ্দিনকেও ৭৮০ টাকা কেজি দরে মাংস বিক্রি করতে দেখা গেছে।

তবে আরেকটু এগিয়ে মানিকনগর গিয়ে ভিন্ন চিত্র দেখা যায়। মানিকনগর বাজারের মাংসের দোকান মিম ইন্টারপ্রাইজে গিয়ে মাংসের দাম জানতে চাইলে বিক্রেতা বলেন, একদাম ৭৮০ টাকা।

সাংবাদিক পরিচয় দিলে একটু ঘাবড়ে যান বিক্রেতা। তখন তিনি সুর পাল্টে বলেন,৭৫০ টাকা কেজি দরে বিক্রি করছি। তবে ওই দোকান থেকে মাংস কেনা তিনজন ক্রেতার সঙ্গে কথা বলে জানা যায় তারা ৭৮০ টাকা কেজি দরে মাংস কিনেছেন।

পরে দোকানের মালিক মহিম উদ্দিন বলেন, আমাদের তো দোষ নেই। সিটি করপোরেশন থেকে মাংস বিক্রির কোন চার্ট টানিয়ে দেওয়া হয়নি। আমাদের মতো করে আমরা বিক্রি করছি।

বাজার করতে আসা আয়ুব আলী নামে এক ক্রেতা বলেন, মনিটরিংয়ের অভাবে বিক্রেতা নিজেদের মনমর্জি দরে মাংস বিক্রি করছেন। একেক বাজারে একেক দামে মাংস বিক্রি হচ্ছে। মনিটরিং জোরদার করা উচিত বলে মনে করেন তিনি।

এদিকে যাত্রবাড়ি বাজারে ডিম ডজন ১১৪ টাকা করে বিক্রি হচ্ছে। ডিমের দাম রোজার মধ্যে কমেছে বলে জানান বিক্রেতা আলী আহম্মদ।