গৃহবধূকে দলবদ্ধ ধর্ষণে ১০ জনের ফাঁসি, ৬ জনের যাবজ্জীবন

নিজস্ব প্রতিবেদক: পাঁচ বছর আগে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ভোটের রাতে নোয়াখালীর সুবর্ণচরে গৃহবধূকে দলবদ্ধ ধর্ষণের দায়ে ১০ জনকে মৃত্যুদণ্ড ও ৬ জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। তাঁদের ৫০ হাজার টাকা করে জরিমানা, অনাদায়ে আরও ২ বছর করে কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। সোমবার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে নোয়াখালী নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-২-এর বিচারক (জেলা জজ) ফাতেমা ফেরদৌস এ রায় ঘোষণা করেন।

মৃত্যুদণ্ড পাওয়া আসামিরা হলেন, রুহুল আমিন, হাসান আলী, সোহেল, স্বপন, ইব্রাহিম খলিল, আবুল হোসেন, সালাউদ্দিন, জসিম উদ্দিন, মুরাদ ও জামাল।

এ ছাড়া যাবজ্জীবন কারাদণ্ড পেয়েছেন, হানিফ, চৌধুরী, বাদশা আলম, মোশারফ ও পলাতক আসামি মিন্টু।

এর আগে রায় ঘোষণা উপলক্ষে আদালত প্রাঙ্গণে বিশেষ নিরাপত্তাব্যবস্থা নেওয়া হয়। বিপুলসংখ্যক পুলিশ মোতায়েন করা হয় আদালত এলাকায়। সকাল ১০টার দিকে নোয়াখালী জেলা কারাগার থেকে মামলার ১৫ আসামিকে কড়া নিরাপত্তার মধ্য দিয়ে জেলা জজ আদালতের হাজতখানায় আনা হয়। তখন হাজত প্রাঙ্গণে আসামিদের স্বজনদের ভিড় ও কান্নাকাটি করতে দেখা যায়।

আদালতে রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী সালেহ আহমদ সোহেল খান বলেন, আলোচিত ওই মামলায় রাষ্ট্রপক্ষ ২৩ জন সাক্ষী উপস্থাপন করেছে। মামলায় রুহুল আমিন মেম্বারসহ ১৬ জন আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করা হয়। এর মধ্যে ১৫ জন আসামিকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। আসামি মিন্টু ওরফে হেলাল (২৮) ঘটনার পর থেকে পলাতক।

২০১৮ সালের ৩০ ডিসেম্বর একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের রাতে স্বামী-সন্তানদের বেঁধে রেখে এক নারীকে (৪০) মারধর ও দলবদ্ধ ধর্ষণ করা হয়। নির্যাতনের শিকার নারী চার সন্তানের জননী। তাঁর অভিযোগ ছিল, ভোটকেন্দ্রে থাকা ব্যক্তিদের পছন্দের প্রতীকে ভোট না দেওয়ার জেরে ওই হামলা ও ধর্ষণের ঘটনা ঘটে। ঘটনাটি তখন দেশে-বিদেশে ব্যাপক আলোচিত হয়।

ওই ঘটনার পরদিন (৩১ ডিসেম্বর) নির্যাতনের শিকার নারীর স্বামী বাদী হয়ে চর জব্বর থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে একটি মামলা করেন। পরে মামলার তদন্ত শেষে সুবর্ণচর উপজেলা আওয়ামী লীগের বহিষ্কৃত প্রচার সম্পাদক রুহুল আমিন মেম্বারসহ ১৬ জনের বিরুদ্ধে ২০১৯ সালের ২৭ মার্চ আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করে জেলা গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)।