বিএনপি নেতা আবদুল্লাহ আল নোমান আর নেই
টুইট ডেস্ক: বিএনপির কেন্দ্রীয় ভাইস চেয়ারম্যান, সাবেক মন্ত্রী বীর মুক্তিযোদ্ধা আবদুল্লাহ আল নোমান মারা গেছেন।
মঙ্গলবার ভোর ৬টার দিকে ঢাকায় তার মৃত্যু হয় বলে দলের জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী জানিয়েছেন। ৮৩ বছর বয়সী নোমান দীর্ঘদিন ধরে বার্ধক্যজনিত নানা রোগে ভুগছিলেন। স্ত্রী, এক ছেলে ও এক মেয়ে রেখে গেছেন তিনি।
তার ব্যক্তিগত সহকারী নুরুল আজিম হিরু জানান, ভোরে ধানমন্ডির বাসায় অসুস্থ হয়ে পড়েন নোমান। দ্রুত স্কয়ার হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসকরা তাকে মৃত করেন। নোমানের মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়লে দলের নেতা-কর্মীদের মধ্যে শোকের ছায়া নেমে আসে। অনেকে তার ধানমন্ডির বাসায় ছুটে যান।
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, স্থায়ী কমিটির সদস্য ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকুসহ জ্যেষ্ঠ নেতারাও সেখানে যান।
প্রয়াত এই বিএনপি নেতার জানাজা ও দাফনের বিষয়ে এখনো কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি। দলীয় ও পারিবারিক সিদ্ধান্তের পর তার মরদেহ চট্টগ্রামে নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন হিরু।
বিএনপির কেন্দ্রীয় ভাইস চেয়ারম্যান আবদুল্লাহ আল নোমান চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির সভাপতি ও দলটির চট্টগ্রাম বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেছেন।
চট্টগ্রামের রাউজান উপজেলার গহিরা গ্রামের সন্তান নোমান একসময় বাম রাজনীতিতে যুক্ত ছিলেন । ষাটের দশকের শুরুতে হামিদুর রহমান শিক্ষা কমিশনের বিরুদ্ধে আন্দোলন করতে গিয়ে তিনি ছাত্র ইউনিয়নে যোগ দেন।
মেননপন্থি ছাত্র ইউনিয়নের চট্টগ্রাম মহানগরীর সাধারণ সম্পাদক, বৃহত্তর চট্টগ্রামের সভাপতি এবং কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদকের দায়িত্বও পালন করেন।
ছাত্রজীবন শেষে মওলানা আব্দুল হামিদ খান ভাসানীর হাত ধরে নোমান যোগ দেন শ্রমিক রাজনীতিতে। পূর্ববাংলা শ্রমিক ফেডারেশনের সহ-সভাপতি ছিলেন তিনি। গোপনে ভাসানীপন্থি ন্যাপের রাজনীতির সঙ্গেও জড়িত হন। ১৯৭০ সালে ন্যাপের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক হন।
১৯৭১ সালে তিনি সক্রিয়ভাবে মুক্তিযুদ্ধে যোগ দেন। যুদ্ধ শেষে ন্যাপের রাজনীতিতে তার পথ চলা। এরপর ১৯৮১ সালে যোগ দেন বিএনপিতে।
১৯৯১ ও ২০০১ সালে চট্টগ্রাম-৯ আসন থেকে ধানের শীষ প্রতীক নিয়ে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন নোমান। খালেদা জিয়ার দুই সরকারের আমলে মৎস্য ও পশু সম্পদ, শ্রম ও কর্মসংস্থান, বন ও পরিবেশ এবং খাদ্য মন্ত্রণায়ের মন্ত্রীর দায়িত্ব তিনি পালন করেন।
এই প্রয়াত নেতার মৃত্যুতে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান, মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর পৃথক বিবৃতিতে শোক প্রকাশ করেছেন।
তথ্য ও সম্প্রচার উপদেষ্টা নাহিদ ইসলামও এই প্রবীণ রাজনীতিবিদের মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করেছেন।