‘আমি একজন রেমিট্যান্স যোদ্ধা, আমাকে ছেলের লাশ উপহার দিছে দেশ’

টুইট ডেস্ক : কোটা আন্দোলন ঘিরে গত ২০ জুলাই বিকেলে রাজধানীর রায়েরবাগে গোলাগুলির সময় বাসার সামনে দাঁড়িয়ে ছিলেন আব্দুর রহমান জিসান। হঠাৎই একটি গুলি এসে লাগে।

গুলিটি জিসানের চোখ ভেদ করে বেরিয়ে যায় মাথার পেছন দিয়ে। স্বামীর এমন মৃত্যুর শোক সইতে না পেরে ৯ দিনের মাথায় আত্মহত্যা করেন জিসানের স্ত্রী মিষ্টি বেগম। ১৪ মাস আগেই তারা ভালোবেসে বিয়ে করেছিলেন।

মায়ের স্নেহ, স্ত্রীর ভালোবাসা আর প্রবাসী বাবার আদরের একমাত্র অবলম্বন ছিলেন আব্দুর রহমান জিসান। এখন শুধু অক্ষত আছে তার ছবিগুলো। একটি বুলেটের আঘাতে তছনছ হয়ে গেছে পুরো পরিবার।

ছেলের মৃত্যুর খবরের একদিন পর দেশে ছুটে এসেছিলেন জিসানের দক্ষিণ আফ্রিকা প্রবাসী বাবা বাবুল সরদার। সেই শোক না কাটাতেই পুত্রবধূর আত্মহত্যা। এমন অবস্থায় দিশেহারা তিনি। ছেলের মৃত্যু প্রসঙ্গে তিনি বলেন, পুলিশ এলোপাতাড়ি গুলি ছোড়ে। আমার ছেলেটা দোকানের সামনে তখন দাঁড়িয়ে ছিল। তার কপালে গুলি লেগে মাথার পিছে দিয়ে বের হয়ে যায়।

বাবুল সরদার বলেন, আমি আজ সাড়ে আট বছর ধরে দেশের বাইরে থাকি আমার ছেলে-মেয়েকে মানুষ করার জন্য। আমি একজন রেমিট্যান্স যোদ্ধা, কিন্তু আজ আমাকে আমার ছেলের মরদেহ উপহার দিয়েছে এই দেশ।

তিনি আরও বলেন, আমার ছেলেটার ওপর আমার অনেক ভরসা ছিল। বিদেশ নেওয়ার জন্য অনেক চেষ্টা করেছি কিন্তু সে যায়নি। আমাকে গুলি করে মেরে ফেলতো আমার কষ্ট হতো না। আমার ছেলেটা তখন আমার সংসারের হাল ধরতে পারতো। এখন আমার কিছু হলে সংসারের কী হবে।