“হার্টের রিং” দাম কমাতে সরকারের প্রজ্ঞাপন

টুইট ডেস্ক : দেশের ২৭টি উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানের ৪৪ ধরনের কার্ডিয়াক স্টেন্টের (হার্টের রিং) দাম ২ হাজার থেকে ৫৬ হাজার টাকা পর্যন্ত কমিয়েছে । ডিজিডিএ জানিয়েছে, এর মাধ্যমে স্টেন্ট প্রতি ৩ শতাংশ থেকে ৪৬ শতাংশ পর্যন্ত দাম কমছে। এই নতুন দাম ১৬ ডিসেম্বর থেকে কার্যকর হবে।

হৃদরোগের চিকিৎসা প্রদানকারী সব হাসপাতালের নোটিশ বোর্ডে করোনারি স্টেন্টের মূল্যতালিকা প্রদর্শনের নির্দেশ দিয়েছে ডিজিডিএ। এটি হৃদরোগীদের জন্য কিছুটা সুখবর!

অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মেজর জেনারেল মোহাম্মদ ইউসুফ সাক্ষরিত এক প্রজ্ঞাপনে গতকাল মঙ্গলবার বলা হয়, ঔষধ ও কসমেটিকস আইন ২০২৩ এর ৩০(১) ধারা অনুযায়ী, ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তর করোনারি স্টেন্টের সর্বোচ্চ খুচরা মূল্য পুনরায় নির্ধারণ করা হলো।

একইসাথে, হৃদরোগের চিকিৎসা প্রদানকারী সব হাসপাতালের সার্জারি সহ সব চিকিৎসা প্রদানকারীকে স্টেন্টের সর্বোচ্চ খুচরা মূল্য প্যাকেজে অন্তর্ভুক্ত না করার ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।

ডিজিডিএ মহাপরিচালক মেজর জেনারেল মোহাম্মদ ইউসুফ প্রতিষ্ঠানগুলির প্রতি এক প্রজ্ঞাপনে উল্লেখ করেছেন যে, এখন থেকে স্টেন্টের নাম, সর্বোচ্চ খুচরা মূল্য (এমআরপি) এবং উৎপাদনকারীর নাম উল্লেখসহ পৃথক ক্যাশ মেমো সরবরাহ করতে হবে।

অধিদপ্তরের তথ্য বলছে, অ্যালেক্স প্লাস কার্ডিয়াক স্টেন্টের দাম ৫৩ হাজার টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে এতদিন এই স্টেন্টের দাম ছিল ৮০ হাজার টাকা।

একইভাবে আল্টিমাস্টারের দাম ৬৩ হাজার টাকা থেকে কমিয়ে ৬০ হাজার টাকা, কোরোফ্লেক্স আইএসএআর করোনারি স্টেন্ট সিস্টেমের দাম ৫৯ হাজার ১১৯.৪০ টাকা থেকে কমিয়ে ৫৩ হাজার, রিসলিউট ইন্টিগ্রিটির দাম ১ লাখ ৮ হাজার ১৬০.৪০ টাকা থেকে কমিয়ে ৭৮ হাজার ৪০০ টাকা, বায়ো ফ্রিডম স্টেন্টের দাম এক লাখ ২১ হাজার ৬০০ টাকা থেকে কমিয়ে ৬৫ হাজার নির্ধারণ করা হয়েছে।

ভারতসহ পার্শ্ববর্তী দেশগুলোতে করোনারি স্টেন্টের দাম বাংলাদেশের তুলনায় কম। হৃদরোগের চিকিৎসকেরা দাম কমাতে কয়েক মাস ধরে আলোচনা চালিয়ে আসছিলেন।

ব্যবসায়ীদের প্রতি সরকারের নির্দেশ: ডলার সংকটের এই সময়ে ব্যবসায়ীরা কম দামে স্টেন্ট বিক্রি করতে রাজি হবে কি না, এ বিষয়ে অধিদপ্তরের মুখপাত্র ও উপ-পরিচালক নুরুল আলম বলেছেন, ‘আমাদের দেশে স্টেন্ট উৎপাদন করা হয় না, আমদানি করে প্রতিষ্ঠানগুলো। মার্কেটে এখন অনেক বেশি কম্পিটিটর আছে। যারা কম দামে দামে বিক্রি করতে রাজি হবে, আমরা তাদের আমদানির অনুমোদন দেব।’

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একটি করোনারি স্টেন্ট সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠানের মালিক বলেন, ‘ডলারের দাম বেড়েছে, ব্যাংকে এলসি খুলতে জটিলতা দেখা দিয়েছে। তবুও স্টেন্টের দাম কমিয়েছে সরকার। এতে আমদানি জটিলতা বাড়বে। আমরা ব্যবসা করি কিছু মুনাফার জন্য। এ দামে স্টেন্ট দিলে আমাদের কিছুই থাকবে না। তবুও সরকারের আদেশ মানতে হবে।’

নির্দেশনা না মানলে জেল-জরিমানা: নুরুল আলম বলেন, কোনো প্রতিষ্ঠান বা হাসপাতাল যদি বেশি দামে স্টেন্ট বিক্রি করে, তাহলে ওষুধ ও কসমেটিক আইন অনুযায়ী দুই বছরের সশ্রম কারাদণ্ড বা দুই লাখ টাকা বা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত হবে। আমরা আশা করছি হৃদরোগীরা এখন থেকে কম খরচে চিকিৎসা পাবে।