দিরাইয়ের সরমঙ্গল ইউপি চেয়ারম্যান মোয়াজ্জেম হোসেন জুয়েল বরখাস্ত
“ক্ষমতার অপব্যবহার ও অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডের অভিযোগে পদচ্যুত”
সুনামগঞ্জ প্রতিনিধি: ক্ষমতার অপব্যবহার ও অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডের অভিযোগে সুনামগঞ্জের দিরাই উপজেলার সরমঙ্গল ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোয়াজ্জেম হোসেন জুয়েলকে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করা হয়েছে।
স্থানীয় সরকার (ইউনিয়ন পরিষদ) আইন, ২০০৯ এর ৩১(১) ধারা অনুযায়ী এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
১৬ জানুয়ারি স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের স্থানীয় সরকার বিভাগ ইউপি-১ শাখার উপসচিব আবু রাফা মোহাম্মদ আরিফ স্বাক্ষরিত এক প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে এই আদেশ জারি করা হয়। রাষ্ট্রপতির আদেশক্রমে জারিকৃত এই প্রজ্ঞাপনের অনুলিপি সুনামগঞ্জের জেলা প্রশাসক এবং দিরাই উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে পাঠানো হয়েছে।
প্রজ্ঞাপনে উল্লেখ করা হয়েছে, মোয়াজ্জেম হোসেন জুয়েল চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণের পর ক্ষমতার অপব্যবহার করে জারুলিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের দাতা তাঁর দাদা মরহুম আসকির মিয়ার নাম বদলে নিজের পিতা মরহুম আব্দুল মতলিবের নাম বসান। এ ঘটনায় তাঁর দুই চাচাতো ভাই সাংবাদিক জাকারিয়া হোসেন জুসেফ ও জুহান প্রতিবাদ জানান।
২০২৩ সালের ৪ সেপ্টেম্বর চেয়ারম্যান মোয়াজ্জেম হোসেন জুয়েল তাঁর সহযোগীদের নিয়ে দিরাই শহরের আরামবাগ এলাকায় সাংবাদিক জাকারিয়া ও জুহানের বাড়িতে হামলা চালান। হামলায় বাড়ির আসবাবপত্র ভাঙচুর এবং দুই ভাইকে কুপিয়ে ও পিটিয়ে গুরুতর আহত করা হয়। আহতদের স্থানীয় হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে সিলেট ওসমানী মেডিকেলে ভর্তি করা হয়।
এই ঘটনায় সাংবাদিক জাকারিয়া হোসেন জুসেফ বাদী হয়ে দিরাই থানায় একটি মামলা দায়ের করেন (মামলা নং: ৮৫/২৩)। মামলার পর চেয়ারম্যান আদালতে আত্মসমর্পণ করলে বিচারক তাঁর জামিন আবেদন নামঞ্জুর করে তাঁকে কারাগারে পাঠান। ২৪ দিন কারাভোগের পর জামিনে মুক্তি পেলেও মামলার চার্জশিট দাখিলের পর তদন্তে অভিযোগের সত্যতা মেলায় মন্ত্রণালয় তাঁকে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করে।
সুনামগঞ্জের জেলা প্রশাসক ড. মোহাম্মদ ইলিয়াছ মিয়া জানান, মন্ত্রণালয়ের নির্দেশ অনুযায়ী সরমঙ্গল ইউপি চেয়ারম্যান মোয়াজ্জেম হোসেন জুয়েলকে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করা হয়েছে।
স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের এই পদক্ষেপ সুশাসন প্রতিষ্ঠা ও অনিয়ম রোধে একটি দৃষ্টান্তমূলক উদ্যোগ হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।