বায়ুদূষণ বন্ধে ৭ দিনের মধ্যে পদক্ষেপের নির্দেশ
টুইট ডেস্ক: আগামী সাতদিনের মধ্যে বায়ুদূষণ বন্ধে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ ও ইতোপূর্বে দেওয়া ৯ দফা নির্দেশনা বাস্তবায়ন করতে নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট।
একই সঙ্গে আগামী ২৬ জানুয়ারি এ বিষয়ে আদালতে প্রতিবেদন দাখিল করতে বলা হয়েছে।
রবিবার (১২ জানুয়ারি) বিচারপতি ফারাহ মাহবুব ও বিচারপতি দেবাশীষ রায় চৌধুরীর হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন। আদালতে আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী মনজিল মোরসেদ। তাকে সহায়তা করেন অ্যাডভোকেট সঞ্জয় মন্ডল ও অ্যাডভোকেট সেলিম রেজা। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল তানিম খান।
মনজিল মোরসেদ জানান, ঢাকার বায়ুদূষণ বন্ধে মানবাধিকার ও পরিবেশবাদী সংগঠন হিউম্যান রাইটস অ্যান্ড পিস ফর বাংলাদেশ (এইচআরপিবি) ২০১৯ সালে একটি রিট পিটিশন দাখিল করেন। ওই রিটের শুনানি শেষে আদালত বিবাদীদের প্রতি রুল জারি করে শহর ও তার আশপাশের এলাকার বায়ুদূষণ বন্ধে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণের নির্দেশ দেন।
এছাড়া একটি বিশেষজ্ঞ কমিটি গঠন করতে বলেছেন। পরে এই বিষয়ে কার্যকরী পদক্ষেপ না নেওয়া হলে আদালত ৯ দফা নির্দেশনা জারি করে তা বাস্তবায়নের নির্দেশ দেন।
৯ দফা নির্দেশনা:
১. ঢাকা শহরে মাটি/বালি/বর্জ্য পরিবহনকারী ট্রাক ও অন্যান্য গাড়িতে মালামাল ঢেকে রাখা।
২. নির্মাণাধীন এলাকায় মাটি/বালু/সিমেন্ট/পাথর/নির্মাণ সামগ্রী ঢেকে রাখা।
৩. সিটি করপোরেশনের মাধ্যমে রাস্তায় পানি ছিটানো।
৪. রাস্তা/কালভার্ট/কার্পেটিং/খোঁড়াখুঁড়ি কাজে টেন্ডারের শর্ত পালন নিশ্চিত করা।
৫. কালো ধোঁয়া নিঃসরণকৃত গাড়ি জব্দ করা।
৬. সড়ক পরিবহন আইন অনুসারে গাড়ির চলাচল সময়সীমা নির্ধারণ ও উত্তীর্ণ হওয়ার সময়সীমার পরে ওই গাড়ি চলাচল বন্ধ করা।
৭. অবৈধ ইটভাটাগুলো বন্ধ করা।
৮. পরিবেশ অধিদপ্তরের অনুমোদন ব্যতীত চলমান টায়ার ফ্যাক্টরি বন্ধ করা।
৯. মার্কেট/দোকানগুলোতে প্রতিদিনের বর্জ্য ব্যাগ ভরে রাখা ও অপসারণ নিশ্চিত করতে সিটি করপোরেশনের পদক্ষেপ গ্রহণ করা।
অ্যাডভোকেট মনজিল মোরসেদ জানান, আদালতের নির্দেশনা থাকার পরেও কর্তৃপক্ষ অতিসামান্য ব্যবস্থা গ্রহণ করায় এবং অধিকাংশ নির্দেশনা পালন না করায় সম্প্রতি ঢাকা শহর বায়ুদূষণে বিশ্বে প্রথম স্থান অধিকার করেছে।
তবে কর্তৃপক্ষ ২০২৩ সালের মাঝামাঝি পর্যন্ত কিছু পদক্ষেপ গ্রহণ করায় ঢাকার বায়ুদূষণের মাত্রা কিছুটা কমে, কিন্তু পরে নির্দেশনাগুলোর সঠিক বাস্তবায়ন না থাকায় ঢাকা আবারও বায়ু দূষণের শীর্ষ শহরে পরিণত হয়েছে বলে গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশিত হয়।
প্রকাশিত সংবাদ নজরে এলে আদালতের নির্দেশনা ও বাস্তবায়ন চেয়ে একটি আবেদন করা হয়। শুনানিতে আদালত বর্তমান বায়ুদূষণ পরিস্থিতি নিয়ে উৎকণ্ঠা প্রকাশ করেন।
শুনানি শেষে আদালত আদেশ দেন যে, আগামী সাতদিনের মধ্যে বিবাদীরা বায়ুদূষণ বন্ধের কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করবে এবং ৯ দফা নির্দেশনা বাস্তবায়িত করে আগামী ২৬ জানুয়ারি আদালতে প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।