গ্রামীণ ব্যাংকে আসছে বড় পরিবর্তন, কমছে সরকারি হস্তক্ষেপ

টুইট ডেস্ক: নোবেলজয়ী ক্ষুদ্রঋণ প্রতিষ্ঠান গ্রামীণ ব্যাংকের মালিকানা কাঠামো ও পরিচালনা পর্ষদে বড় ধরনের পরিবর্তন আসতে যাচ্ছে। সরকারের অংশীদারিত্ব ২৫ শতাংশ থেকে কমিয়ে ৫ শতাংশে নামিয়ে আনার পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে।

নতুন এই পরিকল্পনাটি আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত নতুন অধ্যাদেশের খসড়ায় দেওয়া হয়েছে, যেখানে ২০১৩ সালের গ্রামীণ ব্যাংক আইন সংশোধনের কথাও বলা হয়েছে।

বর্তমানে, গ্রামীণ ব্যাংক ১৯৮৩ সালের অধ্যাদেশ অনুযায়ী, ২৫ শতাংশ মালিকানা সরকারের এবং বাকি ৭৫ শতাংশ ঋণগ্রহীতাদের হাতে রয়েছে। তবে প্রস্তাবিত সংশোধনীর মাধ্যমে ঋণগ্রহীতাদের কাছে ব্যাংকের ৯৫ শতাংশ শেয়ার হস্তান্তরের পরিকল্পনা রাখা হয়েছে।

নতুন খসড়া অনুযায়ী, ব্যাংকের পরিশোধিত মূলধন ৩০০ কোটি টাকা নির্ধারণ করা হবে এবং ঋণগ্রহীতারা ধীরে ধীরে মূলধনে অবদান বাড়িয়ে ৯৫ শতাংশ মালিকানা অর্জন করবেন। যে কোনো লভ্যাংশ মূলধনের ভিত্তিতে আনুপাতিকভাবে বিতরণ করা হবে।

আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ পরিবর্তন হলো, সরকার-নিযুক্ত পরিচালকের সংখ্যা তিনজন থেকে কমিয়ে একজনে নামানো হবে এবং ব্যাংকটির চেয়ারম্যান নিয়োগে সরকারের ভূমিকা বাতিল করার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। এর ফলে ব্যাংকের স্বায়ত্তশাসন আরও সুদৃঢ় হবে বলে আশা করা হচ্ছে।

এছাড়া, খসড়ায় একটি ব্যাখ্যা যুক্ত করা হয়েছে, যেখানে বলা হয়েছে, গ্রামীণ ব্যাংক প্রকল্প বলতে ১৯৭৬ সালে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের অধীনে চট্টগ্রামের হাটহাজারী উপজেলার জোবরা গ্রামে পরিচালিত ক্ষুদ্রঋণ কার্যক্রমকে বোঝানো হয়। এই কার্যক্রম পরবর্তীতে বাংলাদেশ ব্যাংকের অনুমোদন পায় এবং বিভিন্ন ব্যাংক এতে অংশগ্রহণ করে।

নতুন প্রস্তাবে, ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালকের মেয়াদ সর্বোচ্চ ৬৫ বছর পর্যন্ত বাড়ানো যেতে পারে, যদি ব্যাংকের কার্যক্রমে তা প্রয়োজনীয় মনে হয়। নবনির্বাচিত পরিচালকেরা তাদের দায়িত্ব গ্রহণ না করা পর্যন্ত নির্বাচিত পরিচালকেরা তাদের পদে থাকবেন।

গ্রামীণ ব্যাংক প্রতিষ্ঠার পর থেকে সরকারের প্রতি সমালোচনা ও আলোচনা হয়েছে, বিশেষ করে শেখ হাসিনা সরকারের ১৫ বছরের শাসনামলে। ২০১১ সালে, গ্রামীণ ব্যাংকের প্রতিষ্ঠাতা প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূস, আওয়ামী সরকারের চাপের কারণে পদত্যাগ করেন।

এখন নতুন এই প্রস্তাবিত পরিবর্তনগুলো যদি বাস্তবায়িত হয়, তাহলে গ্রামীণ ব্যাংক আরও বেশি স্বায়ত্তশাসিত ও স্বাধীনভাবে কাজ করতে সক্ষম হবে।