মাদারীপুরে দুই পক্ষের সং’ঘর্ষে বাবা-ছেলেসহ নি’হত ৩
টুইট ডেস্ক : মাদারীপুরের কালকিনি উপজেলায় আধিপত্য বিস্তার নিয়ে দুই পক্ষের সংঘর্ষের সময় হাতবোমার আঘাতে বাবা-ছেলেসহ তিনজন নিহত হয়েছেন। এছাড়া আহত হয়েছেন অন্তত ১০ জন।
শুক্রবার (২৭ ডিসেম্বর) ভোরে উপজেলার বাঁশগাড়ী ইউনিয়নের মধ্যেরচর এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
নিহতরা হলেন- মধ্যেরচর এলাকার মতিউর রহমান শিকদারের ছেলে আক্তার শিকদার (৪২), আক্তার শিকদারের ছেলে মারুফ শিকদার (২০) এবং খুনেরচর গ্রামের সিরাজুল চৌকিদার (৩৫)।
আক্তার শিকদার বাঁশগাড়ী ইউনিয়নের ৮ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য এবং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের জ্যেষ্ঠ সহ-সভাপতি ছিলেন। আর সিরাজুল পেশায় কৃষক ও দিনমজুর ছিলেন।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, মধ্যেরচর এলাকায় ফকির ও শিকদার বংশের লোকজনের মধ্যে আধিপত্য বিস্তার নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলে আসছিল। ৫ আগস্ট সরকার পতনের পর আওয়ামী লীগ নেতা আক্তার শিকদার এলাকা ছাড়েন।
আজ ভোররাতে শরীয়তপুরের নতুনবাজার দিয়ে আক্তার শিকদার তার লোকজন নিয়ে মধ্যেরচর এলাকায় প্রবেশ করছেন, এমন খবর পেয়ে এলাকায় মাইকিং করে স্থানীয় লোকজনকে জড়ো করেন জলিল ফকিরের লোকজন। পরে আক্তার ও জলিলের লোকজন দেশী অস্ত্র নিয়ে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েন।
এসময় বেশ কয়েকটি হাতবোমার বিস্ফোরণ ঘটিয়ে এলাকায় আতঙ্ক সৃষ্টি করা হয়। হাতবোমার আঘাতে আক্তার শিকদার ঘটনাস্থলেই নিহত হন। বোমায় গুরুতর আহত হন তার ছেলে মারুফ শিকদার।
মারুফকে উদ্ধার করে শরীয়তপুর সদর হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান। আর সিরাজুল চৌকিদারকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়ার পথে তিনি মারা যান।
সংঘর্ষে উভয় পক্ষের অন্তত ১০ জন আহত হয়েছেন। আহত ব্যক্তিরা বরিশালের মুলাদি ও শরীয়তপুরের ডামুড্যা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সসহ বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছেন। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে বাঁশগাড়ী এলাকায় র্যাব, পুলিশ ও সেনাবাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে।
কালকিনি থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হুমায়ুন কবির বলেন, সংঘর্ষে একপক্ষেরই তিনজন নিহত হয়েছেন। বাবা-ছেলের পর তাদের অনুসারী সিরাজুল চৌকিদার নামে একজন ঢাকা নেওয়ার পথে মারা গেছেন।
এ ঘটনায় অপরাধীদের ধরতে অভিযান চলছে। বর্তমানে পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে। মরদেহগুলো ময়নাতদন্তের জন্য সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠানোর প্রক্রিয়া চলছে।
মাদারীপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন ও অর্থ) ভাস্কর সাহা বলেন, বর্তমানে পরিস্থিতি স্বাভাবিক আছে। এ ঘটনায় জড়িতদের ধরতে পুলিশের যৌথ অভিযান শুরু হয়েছে। আবার সংঘর্ষ এড়াতে পুলিশ, র্যাব, সেনাবাহিনী নিয়োজিত আছে।