মামলার আসামিদের বিষয়ে পুলিশ সদর দপ্তরের নতুন নির্দেশনা

নিজস্ব প্রতিবেদক : ছাত্র-জনতার আন্দোলনকে কেন্দ্র করে দায়ের হওয়া মামলার আসামিদের নিয়ে সারা দেশের থানার ওসিদের নির্দেশনা দিয়েছে পুলিশ সদর দপ্তর।

গত মঙ্গলবার (১০ সেপ্টেম্বর) পুলিশ সদর দপ্তর থেকে নতুন নির্দেশনা নিয়ে একটি চিঠি তৈরি করা হয়। পুলিশ সদর দপ্তরের ডিআইজি (কনফিডেন্সিয়াল) মো. কামরুল আহসান স্বাক্ষর করা ওই চিঠিটি সারাদেশের প্রত্যেক থানার ওদিদের পাঠানো হয়েছে। বৃহস্পতিবারের মধ্যেই রাজশাহীর ২০টিসহ সারা দেশের থানাগুলোতে ওই চিঠি পৌঁছেছে।

চিঠিতে পুলিশ সদর দপ্তর থেকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে, প্রাথমিক তদন্তে কোনো আসামির সম্পৃক্ততা না পাওয়া গেলে মামলা থেকে তার নাম প্রত্যাহার করা হবে। একইসঙ্গে সঠিক তথ্য প্রমাণ ছাড়া এসব মামলায় কোনো সরকারি কর্মকর্তা কর্মচারীকে গ্রেপ্তার করা যাবে না।

চিঠিতে আরও উল্লেখ্য করা হয়, আইনশৃঙ্খলা সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদ কমিটির প্রথম সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে শাহাদত বরণকারী পরিবার বা সংক্ষুব্ধ ব্যক্তির বিভিন্ন আদালত বা থানায় দায়ের করা মামলায় সঠিক তথ্য প্রমাণ ছাড়া সরকারি কর্মকর্তা কর্মচারীকে গ্রেপ্তার না করা। পাশাপাশি গণঅভ্যুত্থান কেন্দ্রিক দায়ের করা হত্যাকাণ্ড ও অন্যান্য মামলায় তদন্তের পূর্বে কোনো কর্মকর্তা বা ব্যক্তির সম্পৃক্ততার প্রাথমিক সত্যতা পাওয়া না গেলে তাদের নাম প্রত্যাহারে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ সরকারের মন্ত্রী, সংসদ সদস্য ও দলটির নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে সারা দেশের বিভিন্ন থানা ও আদালতে বহু মামলা হয়েছে। এসব মামলায় নাম উল্লেখ করে আসামি করা ছাড়া অজ্ঞাতপরিচয় হিসেবেও অসংখ্য আসামি করা হয়েছে।

ছাত্র-জনতার আন্দোলন দমনে জুলাইয়ের দ্বিতীয় সপ্তাহ থেকে গত ৫ আগস্ট পর্যন্ত আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে গুলি চালাতে নির্দেশ দিয়ে হত্যা ও নির্যাতন চালানোর অভিযোগ আনা হয়েছে এসব মামলায়। সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নামেই ১৬৫টি মামলার তথ্য পাওয়া গেছে, যার মধ্যে ১৪৭টিতে হত্যার অভিযোগ আনা হয়েছে। বাকি ১৮টি মামলা হয়েছে হত্যাচেষ্টা ও অপহরণের অভিযোগে।

গণ-আসামি করে করা এসব মামলার বিচারের ভবিষ্যৎ কী, তা নিয়ে সংশয় প্রকাশ করেছেন বিশ্লেষকেরা। তাঁরা বলছেন, জুলাই-আগস্টের গণ-আন্দোলনে হতাহতের বিচার চেয়ে দেশজুড়ে যেসব মামলা হচ্ছে, সেগুলোর ধরন যেন আওয়ামী লীগ আমলের ‘গায়েবি’ মামলার মতোই। এতে করে ভুক্তভোগীর পরিবার সঠিক বিচার পাবে কি না, তা নিয়ে শঙ্কা থেকে যাচ্ছে।

যাচাই-বাছাই না করে মিথ্যা বা ভুয়া মামলা দিয়ে নিরপরাধ মানুষকে হয়রানি না করার অনুরোধ এসেছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের পক্ষ থেকেও।