নির্বাচন বানচাল চেষ্টার পরিণতি ভালো হবে না : শেখ হাসিনা
টুইট ডেস্ক : নির্বাচন বানচালের চেষ্টা করলে তার পরিণতি ভালো হবে না বলে হুঁশিয়ার করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। শনিবার সকালে বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয় থেকে দলীয় মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ করে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন শেখ হাসিনা।
আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, “আজকে শুভ দিন, যারা প্রার্থী তারা সবাই ফরম নেবে এবং নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবে। কিন্তু নির্বাচন বানচাল করার যদি কেউ চেষ্টা করে আর যদি অগ্নি সন্ত্রাস অব্যাহত রাখে এর পরিণিতি ভালো হবে না।”
তিনি বলেন, “যারা (অগ্নিসন্ত্রাস) করবে আমাদের দেশের মানুষই সেই শাস্তি দেবে এবং দেশের মানুষকে আমি সেই আহ্বানটাই জানাচ্ছি। আজদের দিনে আমার এটাই আহ্বান- আামাদের অনেক কষ্টে অর্জিত এই গণতান্ত্রিক ধারাটা যেন কেউ ব্যাহত করতে না পারে।
“তাই দেশবাসীর অধিকার ভোটের অধিকার, তারা ভোট দিয়ে তাদের পছন্দের নেতা নির্বাচিত করবে যারা সংসদে বসবে, আইন পাস করবে, রাষ্ট্র পরিচালনা করবে। কাজেই এটা হচ্ছে জনগণের অধিকার, জনগণের অধিকার যারা কাটতে চেষ্টা করবে, জনগণের অধিকার কেড়ে নেওয়ার জন্য যারা অগ্নিসন্ত্রাস করবে জনগণই তাদের প্রতিরোধ করবেন আমি জনগণের কাছে সেই আহ্বান জানাই।”
আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে স্থাপিত ১০টি বুথ থেকে দলের মনোনয়ন ফরম বিতরণ করা হচ্ছে। সব বিভাগের জন্য একটি করে বুথ রাখা হলেও ঢাকা ও চট্টগ্রাম বিভাগের জন্য দুটি করে বুথ করা হয়েছে বলে জানান শেখ হাসিনা।
সংসদ সদস্যদের নম্বর অনুযায়ী ফরমগুলো সাজানো হবে জানিয়ে তিনি বলেন, “এরপর দলের সংসদীয় বোর্ডে উপস্থাপন করবে। সংসদীয় বোর্ড বসে প্রার্থীর যোগ্যতা দেখে, তাদের জনপ্রিয়তা বা কার্যক্রম দেখে সবগুলো বিবেচনা করেই আমরা নমিনেশন দিয়ে থাকি। আওয়ামী লীগ সবসময় অত্যন্ত সুগঠিত ও সুন্দরভাবে প্রত্যেকটা কাজ করে থাকে, বিশেষ করে দলীয় কাজগুলো সব সময় আমাদের গঠনতন্ত্র মেনে করি।
“যারাই প্রার্থী হোক সবাই যোগ্য এতে কোনো সন্দেহ নেই, কিন্তু একটি সিট দিতে হবে একজনকে, একজনকে বাছাই করা বোর্ডের কাজ, আমরা তৃণমূল থেকেও মতামত নিই, আমাদের ওরকম একটি পদ্ধতিও করা আছে। তৃণমূল থেকেও আমাদের জানানো হয়, সেটি দেখে আমরা প্রার্থী নির্বাচন করব এবং নির্বাচনে অংশগ্রহণ করব।”
শেখ হাসিনা বলেন, “আমরা ভেবেছিলাম যে, অন্যান্য দল এভাবে নির্বাচনে আসবে। তবে যেসমস্ত দল নির্বাচনে আসার জন্য সিদ্ধান্ত নিয়েছে তাদেরকে সাদুবাদ জানাই, ধন্যবাদ জানাই।
“যাদের বোধ হয় মানুষের ওপর বিশ্বাস নেই, আস্থা নেই বা দল হিসেবে সুসংগঠিত না, তারাই নির্বাচন বানচালের একটি চেষ্টা করে যাচ্ছে। অথচ একটা নির্বাচন বানচাল করলে একটি দেশে যে ক্ষতি হয় সেটিই হচ্ছে দুঃখজনক।”
নির্বাচন ঠেকাতে ২০১৩, ২০১৪ সালে অগ্নিসন্ত্রাসে বহু মানুষের প্রাণহানির প্রসঙ্গ তুলে ধরে তিনি বলেন, “এটা কোন ধরনের রাজনীতি যে অগ্নিসন্ত্রাস করে জাতীয় সম্পদ ও ব্যক্তিগত সম্পদকে নষ্ট করা? এই ধনসম্পদ নষ্ট করা? ধ্বংসাত্মক কাজ করে নির্বাচন বানচাল করা হয় অর্থাৎ গণতান্ত্রিক ধারাকে ব্যাহত করতে চায়, এদের ব্যাপারে দেশের মানুষের কাছে আহ্বান থাকবে- যারা এ ধরনের ধ্বংসাত্মক কাজ করছে, জাতীয় সম্পদ নষ্ট করছে, আগুন দিয়ে পোড়াচ্ছে, সাধারণ মানুষের ওপর তারা পেট্রল বোমা মারছে অথবা তাদের আগুন দিয়ে পোড়াচ্ছে, এদেরকে প্রতিরোধ করতে হবে দেশবাসীর।
“কারণ জনগণের ভোটের অধিকার অনেক আন্দোলন সংগ্রামের মধ্য দিয়ে আমরা প্রতিষ্ঠা করেছি। আমরা চাই জনগণের ভোটের অধিকারটা অব্যাহত থাকবে। ভোটের মধ্য দিয়ে সরকার পরিবর্তন হবে।”
উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখার প্রত্যাশা জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, “আগামীতে আমাদের স্মার্ট বাংলাদেশে গড়ে তুলব। আমি সবার দোয়া চাই, দেশবাসীর দোয় চাই যেন সুষ্ঠুভাবে নির্বাচনটা হয়।
“আর নির্বাচন যারা বানচাল করতে চায়, অগ্নিসন্ত্রাস করে, মানুষকে পুড়িয়ে মারে, আমাদের এত সুন্দর রাস্তাঘাট, মেট্রোরেল থেকে শুরু করে থার্ড টার্মিনাল সবকিছু করে দিয়েছি, এগুলো যারা ধ্বংস করতে যাবে, আমি জনগণকে আহ্বান করব তাদেরকে প্রতিরোধ করতে।
‘‘হরতাল ডেকে আজকে ছেলেমেয়েদের পড়াশোনা নষ্ট, মানুষকে অত্যাচার করেই যেন এই বিএনপি-জামায়াত আনন্দ পায়, এটিই হচ্ছে সবথেকে দুর্ভাগ্যের বিষয়।”