কাশ্মিরে বিচ্ছিন্নতাবাদীদের হা’মলায় ৪ ভারতীয় পুলিশ নি(হত)
টুইট ডেস্ক: ভারতশাসিত জম্মু-কাশ্মিরে বিচ্ছিন্নতাবাদীদের সাথে ভারতীয় নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যদের তুমুল সংঘর্ষ ও বন্দুকযুদ্ধ হয়েছে। এতে চার পুলিশ সদস্য নিহত হয়েছে। আহত হয়েছে আরও বেশ কয়েকজন।
সংঘর্ষে দুজন বিচ্ছিন্নতাবাদীও নিহত হয়েছেন। বেশ কয়েকটি সূত্রের বরাত দিয়ে শুক্রবার (২৮ মার্চ) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি।
সংবাদমাধ্যমটি বলছে, জম্মু ও কাশ্মিরের কাঠুয়া জেলায় বিচ্ছিন্নতাবাদীদের সাথে সংঘর্ষে চার পুলিশ সদস্য নিহত হয়েছেন বলে বৃহস্পতিবার বেশ কয়েকটি সূত্র জানিয়েছে। দুই বিচ্ছিন্নতাবাদীও গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত হয়েছেন এবং তিন থেকে চার বিচ্ছিন্নতাবাদী এখনও লুকিয়ে আছেন।
এছাড়া পুলিশের একজন ডেপুটি সুপারিনটেনডেন্টসহ পাঁচজন নিরাপত্তা কর্মী আহত হয়েছেন এবং তাদের হাসপাতালে চিকিৎসা চলছে।
এনডিটিভি বলছে, ভারতীয় সেনাবাহিনী, জাতীয় নিরাপত্তা রক্ষী, সীমান্তরক্ষী বাহিনী, পুলিশ, বিশেষ অভিযান গোষ্ঠী এবং কেন্দ্রীয় রিজার্ভ পুলিশ বাহিনীর দল গত পাঁচ দিন ধরে কাশ্মিরের ওই এলাকায় তল্লাশি চালিয়ে আসছিল। গত রোববার সেখানে গুলিবিনিময় হয় এবং মঙ্গলবার স্থানীয় এক বাসিন্দা পুলিশকে জানান, সেনাবাহিনীর পোশাক পরা দুই ব্যক্তি এলাকায় খাবার খাওয়ার সময় তার কাছে পানি চেয়েছিল।
এরপর বৃহস্পতিবার পুলিশ জঙ্গলের গভীরে প্রবেশ করে ভারী অস্ত্রশস্ত্রে সজ্জিত বিচ্ছিন্নতাবাদীদের সাথে ঘনিষ্ঠ সংঘর্ষে জর্জরিত হওয়ার পর হতাহতের শিকার হয় পুলিশ সদস্যরা। পরবর্তীতে বন্দুকযুদ্ধে দুই বিচ্ছিন্নতাবাদী নিহত হয়। তবে বিচ্ছিন্নতাবাদীদের নিষ্ক্রিয় করার আগে ওই চার পুলিশ সদস্য নিহত হন এবং আরও পাঁচজন আহত হন বলে অভিযানে জড়িত একজন কর্মকর্তা জানিয়েছেন।
একজন কর্মকর্তা বলেছেন, “প্রতিকূল ভূখণ্ড এবং সেখানে আরও বিচ্ছিন্নতাবাদীদের উপস্থিতির কারণে আমরা এখনও পর্যন্ত নিহত পুলিশ সদস্যদের মৃতদেহ উদ্ধার করতে পারিনি।”
জম্মু ও কাশ্মির পুলিশের মহাপরিচালক নলিন প্রভাত কাঠুয়ায় এই বড় বিচ্ছিন্নতাবাদবিরোধী অভিযানের নেতৃত্ব দিচ্ছেন। প্রভাত দুই বিচ্ছিন্নতাবাদী নিহত হওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন এবং বলেছেন, অন্যান্য লুকিয়ে থাকা বিচ্ছিন্নতাবাদীদেরও নিষ্ক্রিয় করা হবে।
এনডিটিভি বলছে, গত রোববার সান্যাল বনে কমপক্ষে পাঁচজন বিচ্ছিন্নতাবাদী আটকা পড়ে। পুলিশের সাথে তীব্র বন্দুকযুদ্ধের পর তারা পালিয়ে যেতে সক্ষম হয় এবং ২০ কিলোমিটার দূরে জুথানায় পৌঁছায়। তারা প্রথমবারের মতো সংঘর্ষস্থলে যুক্তরাষ্ট্রের তৈরি এম৪ রাইফেলের ম্যাগাজিন রেখে যায়, যা ইঙ্গিত দেয়- তাদের কাছে অত্যাধুনিক অস্ত্র রয়েছে।
বৃহস্পতিবার সকালে জুথানা বনে পুলিশ আবার তাদের ঘিরে ফেলে এবং ভয়াবহ সংঘর্ষ শুরু হয়। হেলিকপ্টার, ড্রোন, বুলেটপ্রুফ যানবাহন এবং স্নিফার কুকুরের সহায়তায় অভিযানটি পরিচালনা করা হয়। এছাড়া গত মঙ্গলবার দুটি গ্রেনেড এবং অন্যান্য জিনিসপত্র উদ্ধার করে নিরাপত্তা বাহিনী।
ভারতীয় সংবাদ সংস্থা আইএএনএসের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সান্যাল বনে বিপুল পরিমাণ গোলাবারুদ এবং অন্যান্য উপকরণের মধ্যে পাওয়া ট্র্যাকস্যুটগুলো গত বছরের জুন এবং আগস্টে আসার বন এবং ডোডায় নিহত চার বিচ্ছিন্নতাবাদীর পরা ট্র্যাকস্যুটের মতোই ছিল।