গোপালগঞ্জে চার হত্যা মামলা, আসামি ৫৪০০

টুইট ডেস্ক: গোপালগঞ্জে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) পদযাত্রাকে ঘিরে সংঘর্ষে হতাহতের ঘটনায় পৃথক চারটি হত্যা মামলা দায়ের করেছে পুলিশ। সবকটি মামলায় বলা হয়েছে, নিহতরা আওয়ামী লীগ ও তার সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মী ও দুষ্কৃতিকারীদের গুলিতে নিহত হয়েছে। চার মামলায় মোট আসামি করা হয়েছে পাঁচ হাজার চারশ জনকে।

অপর দিকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে মারা যাওয়া গুলিবিদ্ধ রমজান মুন্সির বিষয়ে আলাদা একটি হত্যা মামলা করা হবে বলে জানা গেছে।

শনিবার গভীর রাতে চার উপপরিদর্শক (এসআই) বাদী হয়ে গোপালগঞ্জ সদর থানায় হত্যা মামলা চারটি দায়ের করেন।

গোপালগঞ্জ সদর থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মো. আইয়ুব হোসেন বাদী হয়ে রমজান কাজী নিহতের ঘটনায় মামলা দায়ের করেন। এ মামলায় আসামি করা হয়েছে ৮০০ থেকে ৯০০ জনকে।

মামলায় তিনি উল্লেখ করেন, গত বুধবার (১৬ জুলাই) এনসিপির শান্তিপূর্ণ সমাবেশ শেষে পৌর পার্ক থেকে দুপুরে মাদারীপুরের উদ্দেশে গাড়িবহর নিয়ে রওনা দিয়ে নেতৃবৃন্দ গোপালগঞ্জ শহরের এসকে সালেহিয়া মাদ্রাসার কাছে পৌঁছালে আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মী এবং দুষ্কৃতকারীরা গাড়ি বহরে দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র ও আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে হামলা করে। পুলিশ, সেনাবাহিনীসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনী এতে বাধা দেয়। হামলাকারীরা ক্ষিপ্ত হয়ে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ওপর গুলি চালায়। এ সময় রমজান কাজী (১৭) গুলিবিদ্ধ হয়ে মারাত্মক আহত হন। স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে গোপালগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

গোপালগঞ্জে পুলিশের ওপর হামলা ও গাড়ি ভাঙচুরের ঘটনায় মামলা, আসামি ৪৭৫ জন
৭১ কোটি টাকা আত্মসাৎ : আসামি সাবেক মন্ত্রী মোশাররফ ও নাফিজ সরাফত পরিবার
দীপ্ত সাহা (২৭) নিহতের ঘটনায় সদর থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মো. শামীম হোসেন বাদী হয়ে ১৯ জুলাই গভীর রাতে অজ্ঞাতনামা ১ হাজার ৪০০ থেকে ৫০০ জনকে আসামি করে ওই থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। মামলায় তিনি উল্লেখ করেন, গত বুধবার (১৬ জুলাই) এনসিপির গাড়ি বহরে আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মী এবং দুষ্কৃতকারীদের হামলার ঘটনা শহরে ছড়িয়ে পড়ে। কলেজ মসজিদের পাশে মিলন ফার্মেসির সামনের আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী এটি প্রতিরোধ করতে গেলে হামলাকারীরা গুলি করে। সেখানে দীপ্ত সাহা গুলিবিদ্ধ হয়ে গুরুতর আহত হন। সংকটজনক অবস্থায় তাকে গোপালগঞ্জ হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।

মোবাইল ব্যবসায়ী সোহেল রানা মোল্লা নিহতের ঘটনায় বাদী হয়ে মামলা দায়ের করেন একই থানার উপপরিদর্শক (এসআই) আবুল কালাম আজাদ। আসামি করা হয়েছে ১ হাজার ৪০০ থেকে ৫০০ জন। মামলায় তিনি উল্লেখ করেন, লঞ্চঘাট এলাকায় হোটেল রাজের সামনে আওয়ামী লীগ ও তার অঙ্গ সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মী ও দুষ্কৃতকারীরা এনসিপির কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দের ওপর হামলা চালায়। পুলিশ ও সেনাবাহিনী এগিয়ে এলে তাদেরকে লক্ষ্য করে গুলি চালায় তারা। এ সময় সোহেল রানা মোল্লা (৩০) মারাত্মক আহত হন। তাকে উদ্ধার করে গোপালগঞ্জ হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

অপরদিকে সদর থানা পুলিশের উপপরিদর্শক (এসআই) শেখ মিজানুর রহমান বাদী হয়ে ১ হাজার ৪০০ থেকে ৫০০ জনকে অজ্ঞাত আসামি করে ইমন তালুকদার হত্যা মামলা দায়ের করেন। মামলায় তিনি উল্লেখ করেন, ঘটনার দিন গত ১৬ জুলাই আসামিরা শহরের পুরাতন সোনালী ব্যাংকের সামনে এনসিপির গাড়ি বহরে হামলা করে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী এতে বাধা দিলে দুষ্কৃতকারী আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীরা গুলি করে। গুলিবিদ্ধ হয়ে ইমন তালুকদার আহত হয়। পরে হাসপাতালে নিলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করে।

গোপালগঞ্জ সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মির মো. সাজেদুর রহমান বলেন, পাঁচজন নিহতের ঘটনায় চারটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। আরেকটি মামলা রাতে হতে পারে। তিনটি মামলায় আসামি করা হয়েছে ১৪০০ থেকে ১৫০০ জন করে। আরেকটি মামলায় আসামি করা হয়েছে ৮০০ থেকে ৯০০ জনকে।