বাংলাদেশ-মিয়ানমার মানবিক করিডোর গড়তে বাংলাদেশের নীতিগত সম্মতি

টুইট ডেস্ক: রোহিঙ্গা সংকটের দীর্ঘমেয়াদি সমাধানের লক্ষ্যে জাতিসংঘ বাংলাদেশ ও মিয়ানমারের মধ্যে একটি মানবিক করিডোর স্থাপনের প্রস্তাব দিয়েছে, যা রোহিঙ্গাদের নিজ দেশে নিরাপদ ও সম্মানজনক প্রত্যাবাসনের পথ সুগম করতে পারে।

বাংলাদেশ এই প্রস্তাবে শর্তসাপেক্ষে সম্মতি জানিয়েছে।

জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস সম্প্রতি ঢাকা সফরে এসে জানান, রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনের জন্য মিয়ানমারে মানবিক সহায়তা পৌঁছানো জরুরি।

তিনি বলেন, “পরিস্থিতি অনুকূল হলে বাংলাদেশ থেকে মিয়ানমারে মানবিক সহায়তা পাঠানোর বিষয়ে আলোচনা হয়েছে, তবে এটি সংঘাতে জড়িত পক্ষগুলোর অনুমোদন ও সহযোগিতা সাপেক্ষ।”

বাংলাদেশ সরকার শর্তসাপেক্ষে এই প্রস্তাবে সম্মতি জানিয়েছে, যা রোহিঙ্গাদের স্বেচ্ছায়, নিরাপদ ও সম্মানজনক প্রত্যাবাসনের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হতে পারে।

বাংলাদেশের কক্সবাজারে প্রায় ১১ লাখ রোহিঙ্গা শরণার্থী আশ্রয় নিয়েছে, যাদের অধিকাংশই ২০১৭ সালে মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে সেনাবাহিনীর দমন-পীড়নের পর পালিয়ে এসেছে। বর্তমানে, মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে তাতমাদাও (সেনাবাহিনী) ও আরাকান আর্মির মধ্যে সংঘর্ষ চলছে, যার ফলে সেখানে মানবিক পরিস্থিতি আরও অবনত হয়েছে।

সম্প্রতি, যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপীয় দেশগুলো রোহিঙ্গা শরণার্থীদের জন্য মানবিক সহায়তা কমিয়ে দিয়েছে, যা জাতিসংঘ মহাসচিব “অপরাধ” হিসেবে উল্লেখ করেছেন। তিনি বলেন, “আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় রোহিঙ্গাদের ভুলে যেতে পারে না।”

মানবিক করিডোরের মাধ্যমে রাখাইন রাজ্যে সরাসরি সহায়তা পৌঁছানো সম্ভব হলে, তা রোহিঙ্গাদের জন্য নিরাপদ পরিবেশ সৃষ্টি করতে সহায়ক হবে এবং তাদের প্রত্যাবাসনের পথ সুগম করবে। এছাড়া, এটি বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গাদের ওপর চাপ কমাতে সাহায্য করবে।

বাংলাদেশ ও জাতিসংঘের এই যৌথ উদ্যোগ রোহিঙ্গা সংকটের সমাধানে একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ। তবে, এর সফল বাস্তবায়নের জন্য আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সমর্থন ও মিয়ানমারের অভ্যন্তরীণ পরিস্থিতির উন্নয়ন অপরিহার্য।