স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার পদত্যাগ দাবিতে গভীর রাতে উত্তাল ঢাবি
টুইট ডেস্ক: স্বাস্থ্য, নিরাপত্তা এবং সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের বিরুদ্ধে সরকারের কার্যকারিতা নিয়ে তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করতে এবং স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী (অব.) পদত্যাগ দাবি করতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা গভীর রাতে বিক্ষোভে অংশ নেন।
এই আন্দোলনটি দেশের বিভিন্ন স্থানে ছিনতাই ও সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড বেড়ে যাওয়ার প্রেক্ষাপটে উঠে এসেছে, যেখানে প্রশাসনিক অব্যবস্থাপনা এবং সন্ত্রাস দমন কার্যক্রমে ব্যর্থতার অভিযোগ তোলা হয়েছে।
রোববার (২৩ ফেব্রুয়ারি) রাত ১টা ১০ মিনিটে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের হলপাড়া এলাকা থেকে শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভ মিছিল শুরু করেন। তারা প্লাকার্ড এবং ব্যানার হাতে শ্লোগান দিয়ে এই মিছিলটি পরিচালনা করেন। শিক্ষার্থীরা ‘স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার পদত্যাগ’, ‘নিরাপত্তা নিশ্চিত করো’, ‘নির্বাচনী কার্যক্রমে ব্যর্থতা’সহ নানা দাবি সামনে তুলে ধরেন।
বিক্ষোভে অংশ নেওয়া শিক্ষার্থীরা বলেন, দেশে প্রতিদিনই ছিনতাই, সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড, রাজনৈতিক সহিংসতা ও অপরাধের ঘটনা বেড়ে চলেছে। এসব বিষয়ে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণে সরকারের ব্যর্থতা এবং স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার অকার্যকারিতার কারণে জনগণের নিরাপত্তা ঝুঁকিতে রয়েছে। শিক্ষার্থীরা আরও অভিযোগ করেন, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী এবং প্রশাসনের চরম অকার্যকারিতার ফলে সাধারণ মানুষ অসহায় অবস্থায় পড়েছে।
শিক্ষার্থীরা দাবি করেছেন, স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার অবিলম্বে পদত্যাগ করুন এবং তার পদে একজন যোগ্য ব্যক্তিকে নিয়োগ দেয়া হোক। পাশাপাশি, সন্ত্রাস দমন এবং জনগণের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে কঠোর পদক্ষেপ নেওয়ার দাবি জানান তারা। তারা বলেন, প্রশাসনের ব্যর্থতার কারণে সাধারণ মানুষের জীবন ও সম্পদ বিপদের মুখে পড়ছে।
বিক্ষোভ মিছিলটি শিক্ষার্থীদের সমবেত হওয়ার পর কিছু সময়ের জন্য ক্যাম্পাসের প্রধান সড়কে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করে। পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে ক্যাম্পাসের আশেপাশে অবস্থান নেয় এবং বিক্ষোভকারীদের সাথে আলোচনা শুরু করে। পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে উঠলেও পুলিশের যথেষ্ট সহনশীলতা ও শৃঙ্খলার কারণে কোনো বড় ধরনের সহিংস ঘটনা ঘটেনি।
মিছিল শেষে শিক্ষার্থীরা তাদের দাবি সুরক্ষিত রাখতে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন হলের সামনে অবস্থান নেন। তারা আবারও সরকারের বিরুদ্ধে তাদের অভিযোগ ও দাবি জানিয়ে বলেন, জনগণের নিরাপত্তা নিশ্চিত না হলে এই বিক্ষোভ চলমান থাকবে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা এই আন্দোলনকে আরও বড় পরিসরে ছড়িয়ে দেওয়ার পরিকল্পনা করছেন এবং দাবি জানান, যতদিন পর্যন্ত সরকার এবং সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ কার্যকর পদক্ষেপ না নেবে, ততদিন তাদের আন্দোলন অব্যাহত থাকবে।
এই বিক্ষোভের মাধ্যমে বাংলাদেশের রাজনীতির এক গুরুত্বপূর্ণ বিষয় উত্থাপিত হয়েছে—শিক্ষার্থীদের প্রতি সরকারের দায়িত্ব এবং জনগণের নিরাপত্তা। এখন দেখার বিষয় হলো, সরকারের পক্ষ থেকে কতটুকু ব্যবস্থা নেওয়া হয়।