বাপ্পি লাহিড়ীর ব্যবহার করা সোনা এখন কার কাছে?
টুইট ডেস্ক : ৮০ দশকে হিন্দি ছবির গানের দিশা বদলে দিয়েছিলেন এ বাঙালি সঙ্গীত পরিচালক। পরিচিতি পেয়েছিলেন ‘ডিস্কো কিং’ নামে। নাম অলোকেশ লাহিড়ী, যদিও পৃথিবী তাঁকে চেনে বাপ্পি লাহিড়ী হিসাবে। ২০২২ সালে স্লিপ অ্যাপনিয়ায় মৃত্যু হয়েছিল বাপ্পি লাহিড়ীর। বয়স হয়েছিল ৬৯ বছর।
গানের পাশাপাশি বাপ্পি লাহিড়ী জনপ্রিয় ছিলেন তার ফ্যাশনের জন্য। ভারতের ‘গোল্ড ম্যান’ হিসেবেও পরিচিত ছিলেন তিনি। সোনার গয়না, রঙিন সানগ্লাসে ভিড়ের মধ্যেও আলাদা হয়ে থাকতেন এই প্রতিভাধর।
গয়নার প্রতি ঝোঁক বরাবরের। হাতে চওড়া ব্রেসলেট, গলায় নানান মাপের সোনার গয়না পরে থাকতেন তিনি। বাপ্পির গলায় হরেক রকমের সোনার গয়না দেখে বিস্মিত হয়েছিলেন মাইকেল জ্যাকসনও।
গয়না পরতে খুবই ভালবাসতেন বাপ্পি লাহিড়ি। তাঁর মৃত্যুর সঙ্গে সঙ্গে সেই সব গয়নার কী হয়েছে? কোথায় রাখা আছে? বদলে গিয়েছে কি মালিকানা? ভারতীয় গণমাধ্যম বলছে, ২০১৪ সালেই এক এফিডেবিট করে গিয়েছিলেন কিংবদন্তী গায়ক। সেখানে উল্লেখ ছিল তার কাছে মোট ৭৫৪ গ্রাম সোনা রয়েছে।
যার বাজারমূল্য সেই সময় ছিল ভারতীয় মুদ্রায় ৩৮ লাখ ৭১ হাজার ৭৯০ টাকা। লেখা ছিল, তার মৃত্যুর পর তাঁর যাবতীয় অলঙ্কারের দায়িত্ব পাবেন ছেলে বাপ্পা ও মেয়ে রিমা।
তার মৃত্যুর পর তার ইচ্ছাকে মর্যাদা দিয়ে সেই অলঙ্কার গচ্ছিত রয়েছে রিমা ও বাপ্পার কাছেই। তবে তা সবটাই সযত্নে রাখা রয়েছে, বিক্রি করেননি দুই ছেলেমেয়ের কেউই। স্মৃতি হিসেবে তা গচ্ছিত রয়েছে পরিবারের কাছে।
প্রসঙ্গত, সোনার গয়না পরার কারণ নিজেই একবার এক সাক্ষাৎকারে জানিয়েছিলেন বাপ্পি লাহিড়ি। তিনি বলেছিলেন, ‘গোল্ড ইজ মাই গড!’ জানিয়েছিলেন, সোনা তাঁর লাকি চার্ম। আমেরিকান রকস্টার এলভিস প্রেসলির থেকেই তিনি উৎসাহ পেয়েছিলেন এই ব্যাপারে। জানিয়েছিলেন, আমি ছিলাম প্রেসলির বড় ভক্ত।
আমি ভাবতাম আমি যদি কখনও সাফল্য পাই, তাহলে আমি নিজের ইমেজ আলাদাভাবে তৈরি করব। ভগবানের আশীর্বাদে আমি সোনা দিয়ে তা করতে পেরেছি। অনেক লোকই ভাবেন আমি দেখনদারির জন্য সোনার গয়না পরি। কিন্তু তা সত্যি নয়। সোনার আমার জন্য খুব পয়া।
১৯৫২, ৭ নভেম্বর জলপাইগুড়ির ব্রাহ্মণ পরিবারে জন্ম হয় বাপ্পি লাহিড়ির। অপরেশ লাহিড়ি ও বিষ্ণু লাহিড়ীর সন্তান ছিলেন তিনি অলকেশ লাহিড়ী। পরে নিজের নাম রাখেন ‘বাপ্পি’। মাত্র ৩ বছর বয়সে তবলা বাজানো শুরু করেন তিনি।
১৯ বছর বয়সে দাদু নামে বাংলা চলচ্চিত্রে প্রথম কাজ করেন শিল্পী। মুম্বাই চলে আসেন মামার মতো বলিউডে কাজ করার ইচ্ছে নিয়ে। হিন্দি ইন্ডাস্ট্রিতে প্রথম কাজ ‘নানহা শিকারি’। ছবিতে গীতিকারের ভূমিকায় ছিলেন তিনি।
ক্যারিয়ারের মোড় ঘুরে যায় ‘জখমি’ ছবি দিয়ে। এই সিনেমায় গীতিকারের পাশাপাশি প্লেব্যাকও করেন তিনি। ১৯৮৩ থেকে ১৯৮৫ সালের মধ্যে ১২টি সুপার-হিট জুবিলি সিনেমার সুর দেন তিনি। যেটি একটি রেকর্ড।