গত বছরে ৮,৫৬৫ অভিবাসীর মৃত্যু: জাতিসংঘ

ছবি : প্রতীকী

বিশ্ব ডেস্ক: জাতিসংঘের অভিবাসন সংস্থা (আইওএম) একটি বিবৃতিতে জানিয়েছে যে, ২০২৩ সালে বিশ্বব্যাপী মোট ৮,৫৬৫ জন অভিবাসী মৃত্যু হয়েছে। এতে বলা হয়েছে, পানিতে ডুবে বেশিরভাগ অভিবাসীর মৃত্যু হয়েছে এবং এটি মূলত মেডিটেরেনিয়ান সিতে ঘটেছে। এছাড়াও, আফ্রিকা ও এশিয়ায় একাধিক দেশে অভিবাসী মৃত্যু বেড়েছে বলে জানিয়েছে আইওএম।

প্রকাশিত তথ্যে, মেডিটেরেনিয়ান সি একটি সংকটগ্রস্ত এলাকা হিসেবে পরিচিত এবং এখানে অভিবাসী মৃত্যু হয়েছে সংখ্যার অনুযায়ী একটি রেকর্ড স্তরে। এছাড়াও, আফগানিস্থান এবং সিরিয়া সংকটের কারণে ২০১৬ সালে মেডিটেরেনিয়ান সিতে সর্বাধিক ৫১৩৬ জন অভিবাসী মারা গিয়েছিলেন।

আইওএম জানায়, ২০২২ সালের তুলনায় গত বছরে মেডিটেরেনিয়ান সিতে মৃত্যুর সংখ্যা খুব বেশি ছিল যা মোট অভিবাসী মৃত্যুর রেকর্ডে বড় ভূমিকা রাখে।

মেডিটেরেনিয়ান সিতে ২০২২ সালে অভিবাসী মৃত্যুর সংখ্যা ছিল ২৪১১ জন যা গত বছর বেড়ে দাঁড়ায় ৩১২৯ জনে।

তবে, ২০১৬ সালে সিরিয়া ও আফগানিস্থান সংকটের কারণে মেডিটেরেনিয়ান সিতে সর্বোচ্চ ৫১৩৬ জন মারা যায়।

আইওএম বলেছে, ২০২৩ সালে অভিবাসী মৃত্যুর মোট সংখ্যা এর আগের বছরের তুলনায় প্রায় ২০% বেশি ছিল।

এতে বলা হয়, গত বছর পানিতে ডুবে বেশিরভাগ অভিবাসীর মৃত্যু হয়েছে যার সংখ্যা প্রায় ৩,৭০০।

সমুদ্র পার হওয়ার সময় নিখোঁজ হওয়া এবং যাদের মৃতদেহ না পাওয়া যায় তাদেরকেও মৃত বলে ধরে নিয়ে এ অভিবাসী মৃত্যুর তালিকায় যুক্ত করা হয় বলে জানায় সংস্থাটি।

আইওএম সতর্ক করে বলেছে, উন্নত তথ্য সংগ্রহের অসুবিধার কারণে তাদের দেয়া মৃত্যুর পরিসংখ্যানটি থেকে প্রকৃত মৃত্যু সংখ্যা আরও বেশি হতে পারে।

এ বিষয়ে আইওএমের ডেপুটি ডিরেক্টর জেনারেল উগোচি ড্যানিয়েলস এক বিবৃতিতে বলেন, ‘এ মৃত্যুগুলোর প্রত্যেকটিই ভয়ানক মানবিক ট্র্যাজেডি যা পরিবার এবং সম্প্রদায়ের মধ্যে আগামী অনেক বছর ধরে প্রতিধ্বনিত হয়।’

সামগ্রিকভাবে সাম্প্রতিক বছরগুলোতে এশিয়ায় অভিবাসী মৃত্যু সংখ্যা সবচেয়ে বেশি দেখা গেছে।

এশিয়ায় গত বছর ২১৩৮ জন অভিবাসী মারা গেছেন যা ২০২২ সালের তুলনায় ৬৮ জন বেশি৷

প্রাথমিকভাবে প্রতিবেশি ইরানের মতো জায়গায় পালিয়ে আসা আফগান অভিবাসী এবং সামুদ্রিক পথে রোহিঙ্গা শরণার্থীদের ক্রমবর্ধমান মৃত্যুর কারণে এশিয়ায় এ সংখ্যা বাড়ছে বলে এক ইমেলে এ তথ্য জানিয়েছেন আইওএমের মুখপাত্র হোর্হে গালিন্দো।

আইওএম বলেছে, গত বছর আফ্রিকাতেও রেকর্ড ১৮৬৬টি মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে যাদের বেশিরভাগ সাহারা মরুভূমিতে এবং ক্যানারি দ্বীপপুঞ্জের সমুদ্রপথে মারা গেছেন।

সাউথ অ্যামেরিকা থেকে উত্তরের পথে পাড়ি দেয়ার জন্য পানামার বিপজ্জনক ডারিয়েন গ্যাপের মতো প্রত্যন্ত অঞ্চলে ডেটা সংগ্রহে অসুবিধার কথা উল্লেখ করেছে সংস্থাটি।

২০১৪ সালে মেডিটেরেনিয়ান সিতে মৃত্যু বৃদ্ধি এবং তিউনিসিয়ার পাশের দ্বীপ ল্যাম্পেডুসায় অভিবাসীদের আগমনের পর আইওএম নিখোঁজ অভিবাসী প্রকল্পটি প্রতিষ্ঠা করে।

আইওএম এ সতর্কতা দেওয়া হয়েছে যে, তথ্য সংগ্রহের অসুবিধার কারণে এই সংখ্যা আরও বেড়ে যেতে পারে। এটি মোতাবেক, মৃত্যু হওয়া অভিবাসীদের সংখ্যা সামাজিক এবং মানবিক ট্র্যাজেডির একটি দু:খজনক বিষয় হিসেবে পরিচিত হয়েছে।