বিডিআর হত্যাকাণ্ডে চূড়ান্ত বিচার শীঘ্রই: স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী

নিজস্ব আইনে চারহাজারের বেশি জওয়ানের সাজা হয়েছে ।

টুইট ডেস্ক: বাংলাদেশের ইতিহাসের একটি অত্যন্ত দু:খদায়ক ঘটনা হল বিডিআর হত্যাকাণ্ড। এই হত্যাকাণ্ডে বাংলাদেশ রাইফেলসের কয়েকজন সদস্য সশস্ত্র বিদ্রোহ করে, যা ২০০৯ সালে প্রথমবার ঘটে।

পিলখানা সদর দপ্তরের দরবার হলে ঘটনার সময়ে তারা ৫৭ জন সেনা কর্মকর্তাসহ ৭৪ জনকে হত্যা করে। এ হত্যাকাণ্ডে মোট ৫৮টি মামলা হয়, এর মধ্যে একটি হত্যা ও লুটপাটের অভিযোগে আর বাকিগুলো বিদ্রোহের অভিযোগে।

বিচার প্রক্রিয়ার প্রস্তুতির মধ্যে এখন বাংলাদেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল জানিয়েছেন যে কোন ধরনের গাফিলতি নেই।

দিনটি উপলক্ষ্যে রোববার স্থানীয় সময় সকাল ৯ টা ৮ মিনিটে রাষ্ট্রপতির পক্ষে রাষ্ট্রপতির সামরিক সচিব এবং প্রধানমন্ত্রীর পক্ষে প্রধানমন্ত্রীর সামরিক সচিব শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। এরপর শ্রদ্ধা নিবেদন করেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল।

পরে, সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল এস এম শফিউদ্দিন আহমেদ, নৌবাহিনী প্রধান অ্যাডমিরাল এম নাজমুল হাসান ও বিমান বাহিনী প্রধান এয়ার চিফ মার্শাল শেখ আব্দুল হান্নান শ্রদ্ধা নিবেদন করেন।

তিন বাহিনী প্রধানের পর স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের সিনিয়র সচিবের পক্ষে জননিরাপত্তা বিভাগের অতিরিক্ত সচিব ও বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের মহাপরিচালক মেজর জেনারেল মোহাম্মদ আশরাফুজ্জামান সিদ্দিকী শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। এরপর শহীদ পরিবারের সদস্য ও নিকট আত্মীয়রা শ্রদ্ধা জানান।

বনানীর সামরিক কবরস্থানে শহীদদের কবরে শ্রদ্ধা অর্পন শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল বলেন, ‘চূড়ান্ত বিচার অল্প কিছুদিনের মধ্যে শেষ হয়ে যাবে বলে আমরা আশা করছি। এটা সম্পূর্ণই বিচারিক কার্যক্রমের ওপর নির্ভর করছে।’

তিনি আরও বলেন, ‘অনেকে এখানে জড়িত ছিল। এগুলোর তদন্ত শেষ করা একটা বিরাট কর্মকাণ্ড। এগুলো শেষ হয়েছে। আপনারা দেখেছেন প্রাথমিক একটা বিচার হয়েছে।’

পুষ্পস্তবক অর্পণ শেষে শহীদদের প্রতি সম্মান প্রদর্শনে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়। এরপর শহীদদের আত্মার মাগফিরাত কামনা করে দোয়া করা হয়।

২০০৯ সালের ২৫ ফেব্রুয়ারি তিন দিনের ‘বিডিআর সপ্তাহ’ চলাকালে পিলখানা সদর দপ্তরের দরবার হলে বাংলাদেশ রাইফেলসের কয়েক শ সদস্য সশস্ত্র বিদ্রোহ করে। তারা ৫৭ জন সেনা কর্মকর্তাসহ ৭৪ জনকে হত্যা করে।

ওই ঘটনায় মোট ৫৮টি মামলা হয়, এর মধ্যে একটি হত্যা ও লুটপাটের অভিযোগে আর বাকিগুলো বিদ্রোহের অভিযোগে।

এই হত্যা মামলায় ১৫২ জনকে মৃত্যুদণ্ড এবং ৪২৩ জনকে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড দেওয়া হয়। এছাড়া দেশের সবচেয়ে বড় হত্যাকাণ্ডের এ মামলায় ২৭৭ জন আসামি খালাস পেয়েছে।বিডিআর বিদ্রোহের ঘটনায় যে ১৫ বছর পার হলেও শেষ হয়নি দুই মামলার চূড়ান্ত বিচার। একটি মামলা আপিল পর্যায়ে থাকলেও আরেকটি মামলার সাক্ষ্যগ্রহণ এখনো শেষ হয়নি। ফলে আলোচিত এই ঘটনার বিচার কবে শেষ হবে, তা বলতে পারছেন না রাষ্ট্রপক্ষ বা আসামিপক্ষের কোন আইনজীবী।

এ ঘটনায় করা হত্যা মামলায় বিচারিক আদালতের পর হাইকোর্টেও কার্যক্রম শেষ হয়েছে, তবে মামলাটি আপিল বিভাগে গিয়ে আটকে রয়েছে।