‘ভারতের আরেক মসজিদের জায়গাতেও হিন্দু মন্দির ছিল’

টুইট ডেস্ক : ভারতের বারাণসী বা কাশীতে জ্ঞানবাপী মসজিদের বর্তমান কাঠামো তৈরির আগে ওই জায়গায় একটি হিন্দু মন্দির ছিল বলে এক সমীক্ষার পর জানিয়েছে ভারতের প্রত্নতত্ত্ব বিভাগ বা আর্কিওলজিকাল সার্ভে অব ইন্ডিয়া (এএসআই)। গত বছর জুলাই মাসে বারাণসী জেলা আদালত এএসআইকে ওই মসজিদ চত্বরে সমীক্ষা করার নির্দেশ দিয়েছিল।

এএসআই-এর সেই রিপোর্ট, যা এখন জনসমক্ষে প্রকাশ করা হয়েছে, তাতে জানানো হয়েছে চার মাসের জরিপ, বৈজ্ঞানিক পর্যবেক্ষণ এবং স্থাপত্যের অবশেষ, বৈশিষ্ট্য, নিদর্শন, শিলালিপি, শিল্প ও ভাস্কর্যের অধ্যয়নের উপর ভিত্তি করে এটা সহজেই বলা যায় বর্তমান কাঠামো নির্মাণের আগে সেখানে একটা হিন্দু মন্দিরের অস্তিত্ব ছিল।

এ বিষয়ে মুসলিম পক্ষ জানিয়েছে বৃহস্পতিবার (২৫ জানুয়ারি) গভীর রাতে এএসআই রিপোর্টের একটি প্রতিলিপি তারা পেয়েছে। এখন আইনজীবীদের কাছে রয়েছে সেই রিপোর্ট।

জ্ঞানবাপী মসজিদ পরিচালনার দায়িত্বে থাকা আঞ্জুমান ইন্তেজামিয়া মসজিদের যুগ্ম সম্পাদক এস এম ইয়াসিন বলেন, এটা একটা রিপোর্ট, কোনও সিদ্ধান্ত নয়। প্রতিবেদনটা ৮৩৯ পৃষ্ঠার। এর সমীক্ষা ও বিশ্লেষণ করতে সময় লাগবে। বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ নেওয়া হবে। বিবেচনার জন্য আদালতে তোলা হবে।

সম্রাট আকবরের আমলেরও প্রায় ১৫০ বছর আগে থেকে জ্ঞানবাপী মসজিদে নামাজ পড়তে যেতেন মুসলিমরা। এস এম ইয়াসিন বলেন, এরপর সব আল্লাহর ইচ্ছা। আমাদের দায়িত্ব মসজিদ সামলানো। হতাশা হারাম। ধৈর্য ধরে কাজ করতে হবে। বিতর্ক এড়িয়ে চলতে আবেদন জানাচ্ছি। মামলার প্রধান বাদী রাখী সিংয়ের আইনজীবী অনুপম দ্বিবেদীর কাছ থেকে ৮০০ পৃষ্ঠারও বেশি প্রতিবেদনের একটি প্রতিলিপি পেয়েছে বিবিসি-ও।

এএসআই-র রিপোর্ট অনুসারে, একটি কক্ষের ভিতরে পাওয়া আরবি-ফার্সি ভাষায় লেখা শিলালিপিতে উল্লেখ করা হয়েছে মসজিদটি আওরঙ্গজেবের রাজত্বের ২০ তম বছরে (১৬৭৬-৭৭) নির্মাণ করা হয়েছিল। এ থেকে বোঝা যায়, সপ্তদশ শতাব্দীতে আওরঙ্গজেবের রাজত্বকালে আগের যে কাঠামো ছিল তা ভেঙে ফেলা হয় এবং এর কিছু অংশ বদলে ফেলে বর্তমানে যে কাঠামো রয়েছে, সেখানে ব্যবহার করা হয়েছে।

প্রসঙ্গত, এএসআইয়ের এই সমীক্ষায় জ্ঞানবাপী মসজিদের সিল করা ওজুখানার বৈজ্ঞানিক সমীক্ষা করা হয়নি। হিন্দু পক্ষের দাবি, ওই ওজুখানায় একটি শিবলিঙ্গ রয়েছে, যাকে মসজিদের কর্তৃপক্ষ ‘ফোয়ারা’ বলে থাকে।

রাখী সিংয়ের (বাদী পক্ষ) উকিল অনুপম দ্বিবেদী এই সমীক্ষাকে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ আখ্যা দিয়ে বলেছেন, এএসআই বলেছে যে ঔরঙ্গজেবের মসজিদ নির্মাণের আগে মসজিদ চত্বরে একটি হিন্দু কাঠামো এবং মন্দির ছিল। এটা যে আমাদের মামলাকে শক্তিশালী করে তুলবে সে বিষয়ে আমি নিশ্চিত। সাক্ষ্য-প্রমাণের দিক থেকে এটি মামলাগুলোর জন্য খুব গুরুত্বপূর্ণ”, জানান তিনি।

কোন কোন বিষয়ে সমীক্ষা?

বর্তমান কাঠামোর কেন্দ্রীয় কক্ষ এবং আগের যে কাঠামো রয়েছে তার মূল প্রবেশ দ্বার, পশ্চিমের কক্ষ ও দেওয়াল, বর্তমান কাঠামোর ভিতরে যে অংশ আগে থেকে বিদ্যমান ছিল সেখানকার স্তম্ভ এবং ভিত্তি স্তম্ভের পুনরায় ব্যবহারের বিষয়ে, শিলালিপিতে আরবি এবং ফার্সি ভাষায় যা লেখা আছে, বেসমেন্টে পাওয়া ভাস্কর্যের অবশিষ্টাংশ।

জ্ঞানবাপীতে বিদ্যমান কাঠামোর প্রকৃতি এবং সময় সম্পর্কে বিশদ বিবরণ দিয়ে এএসআই রিপোর্টে বলা হয়েছে, বিদ্যমান স্থাপত্যের অবশেষ, দেওয়ালে সাজানো অংশ, কেন্দ্রীয় কক্ষের কর্ণ রথ এবং প্রতিরথ, পশ্চিম কক্ষের পশ্চিম দেয়ালের তোরণ-সহ একটা বড় প্রবেশদ্বার, অলংকরণের ভিতরে এবং খোদাই করা পাখি এবং প্রাণীর চিত্র থেকে বোঝা যায় যে পশ্চিম দেয়ালটা হিন্দু মন্দিরের অবশিষ্ট অংশ।

শিল্প ও স্থাপত্যের উপর ভিত্তি করে, আগে থেকে উপস্থিত ওই কাঠামোকে হিন্দু মন্দির হিসাবে চিহ্নিত করা যেতে পারে। বৈজ্ঞানিক গবেষণা ও পর্যবেক্ষণের পর বলা হয়েছে বিদ্যমান কাঠামো নির্মাণের আগে সেখানে একটি বড় হিন্দু মন্দির ছিল।

এএসআই বলছে, জরিপে মসজিদের একটি কক্ষ থেকে এই পাথর উদ্ধার করা হলেও মসজিদ নির্মাণ ও তার সম্প্রসারণ সংক্রান্ত তথ্য মুছে ফেলা হয়েছে।

এএসআই জানিয়েছে, একটা পাথরে খোদাই করে লেখা আছে মুঘল সম্রাট ঔরঙ্গজেবের রাজত্বকালে (১৬৭৬-৭৭) তৈরি হয়েছিল ওই মসজিদ।

এই বিষয়ের উল্লেখ এএসআইয়ের রেকর্ডেও ছিল। সেখানে বলা হয়েছিল, পাথরের গায়ে মসজিদের সাহন (আঙিনা) মেরামতির উল্লেখ করা হয়েছে। ১৯৬৫-৬৬ সালের এএসআই রেকর্ডে এই পাথরের ছবিও রয়েছে।

কিন্তু এএসআই বলছে, জরিপে মসজিদের একটি কক্ষ থেকে এই পাথর উদ্ধার করা হলেও মসজিদ নির্মাণ ও তার সম্প্রসারণ সংক্রান্ত তথ্য মুছে ফেলা হয়েছে।

ঔরঙ্গজেবের জীবনী মসির-এ-আলমগিরি থেকে জানা গিয়েছে ঔরঙ্গজেব তার অধীনস্থ সমস্ত প্রদেশের গভর্নরদের ‘কাফেরদের স্কুল ও মন্দির ভেঙে ফেলার’ নির্দেশ দিয়েছিলেন।

এএসআই সূত্রে জানা গেছে, ১৯৪৭ সালে যদুনাথ সরকারের ‘মসির-এ-আলমগিরি’র ইংরেজি অনুবাদেও এর উল্লেখ রয়েছে।

যদুনাথ সরকারের ‘মসির-এ-আলমগিরি’র ইংরেজি অনুবাদ উদ্ধৃত করে এএসআই তাদের রিপোর্টে লিখেছে, ১৬৬৯ সালের ২রা সেপ্টেম্বর সম্রাট আওরঙ্গজেবের নির্দেশে তার আধিকারিকরা কাশীতে বিশ্বনাথের মন্দির ভেঙে ফেলেন। এএসআই রিপোর্টে বলা হয়েছে, মসজিদের কাঠামোতে মোট ৩৪টি শিলালিপি পাওয়া গিয়েছে।

এ প্রসঙ্গে এএসআই রিপোর্টে বলা হয়েছে, মসজিদের কাঠামোতে মোট ৩৪টি শিলালিপি ও ৩২টি স্ট্যাম্পিং পাওয়া গিয়েছে এবং নথিভুক্ত করা হয়েছে।

এই শিলালিপিগুলো হিন্দু মন্দিরের পাথরের উপর আগে থেকেই ছিল যা মসজিদ নির্মাণ ও মেরামতের জন্য ব্যবহৃত হয়েছিল বলেও ওই রিপোর্টে জানানো হয়েছে। এই শিলালিপি দেবনাগরী, তেলুগু এবং কন্নড় ভাষায় লেখা।

এ থেকে এএসআই এই সিদ্ধান্তে পৌঁছেছে যে আগে থেকে বিদ্যমান কাঠামো ভেঙে তা মসজিদ নির্মাণ ও মেরামতের জন্য ব্যবহার করা হয়ে।

এএসআই জানিয়েছে, শিলালিপিতে জনার্দন, রুদ্র ও উমেশ্বর- এই তিন দেবতার নামও পাওয়া গিয়েছে। এএসআই ‘মহামুক্তি মণ্ডপ’-এর তিনটি শিলালিপি খুঁজে পাওয়াও অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বলে বর্ণনা করেছে।

এএসআই জানিয়েছে, মসজিদের পূর্ব অংশে বেসমেন্ট বানানো হয়েছিল।একই সঙ্গে মসজিদে যাতে অনেক মানুষ একসঙ্গে নামাজ পড়তে পারেন সেই জন্য জায়গা তৈরি করা হয়েছিল।

এএসআই তাদের রিপোর্টে জানিয়েছে, মন্দিরের স্তম্ভগুলো পূর্ব দিকের বেসমেন্ট তৈরির জন্য ব্যবহৃত হয়েছিল। এন-২ নামের একটা বেসমেন্টে যে স্তম্ভ ব্যবহার করা হয়েছিল তাতে ঘণ্টা, প্রদীপ, খোদাই করা শিলালিপি রয়েছে। এস-২ নামের বেসমেন্টে মাটির নিচে চাপা পড়া হিন্দু দেব-দেবীর মূর্তিও পাওয়া গেছে।

মসজিদ সম্প্রসারণ করতে এবং এর সহন (উঠোন) তৈরি করতে ইতিমধ্যে বিদ্যমান মন্দিরের স্তম্ভগুলোর কিছুটা পরিবর্তন করা হয়েছিল। স্তম্ভগুলি পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে পরীক্ষা করে জানা গিয়েছে সেগুলো বিদ্যমান হিন্দু মন্দিরেরই অংশ ছিল, জানিয়েছে এএসআই।

মসজিদ নির্মাণের জন্য যখন এই স্তম্ভগুলো ব্যবহার হয়, সে সময়ে পদ্মের পদকের পাশে থাকা ভায়ালা মূর্তি সরিয়ে ফেলা হয়েছিল। এর পরিবর্তে তৈরি করা হয়েছিল ফুলের নকশা। এএসআই বলছে, বিদ্যমান কাঠামোর (মসজিদ) পশ্চিম দেয়ালের অবশিষ্ট অংশটা হিন্দু মন্দিরের।

এএসআইয়ের মতে, পশ্চিমের দেয়াল পাথরের তৈরি এবং অনুভূমিক ছাঁচ দিয়ে সাজানো। এই পশ্চিম দেওয়াল, পশ্চিম কক্ষগুলির অবশিষ্ট অংশ, কেন্দ্রীয় কক্ষের পশ্চিম অভিক্ষেপ এবং উত্তর ও দক্ষিণে দুটো প্রকোষ্ঠের পশ্চিম দেয়াল নিয়ে তৈরি। দেওয়ালের সঙ্গে যুক্ত কেন্দ্রীয় কক্ষ এখনও রয়েছে। পরিবর্তন করা হয়েছে পাশের দুই কক্ষের।

মন্দিরের উত্তর ও দক্ষিণের প্রবেশদ্বারগুলো সিঁড়িতে রূপান্তরিত হয়েছিল এবং উত্তরের হলঘরের প্রবেশদ্বারের সিঁড়ি আজও ব্যবহার করা হয়।

এএসআই-এর রিপোর্ট বলছে, মন্দিরে একটা বড় কেন্দ্রীয় কক্ষ ছিল এবং উত্তর, দক্ষিণ, পূর্ব ও পশ্চিমেও একটা করে কক্ষ ছিল। এএসআই এর রিপোর্ট বলছে, পূর্ববর্তী কাঠামোর (মন্দির) কেন্দ্রীয় কক্ষ এখন বিদ্যমান কাঠামোর (মসজিদ) কেন্দ্রীয় কক্ষ।

এএসআইয়ের বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, মন্দিরের কেন্দ্রীয় কক্ষের প্রধান প্রবেশদ্বারটা পশ্চিম দিক থেকে ছিল, যা পাথরের গাঁথুনি দিয়ে অবরুদ্ধ করা হয়। আর পাথর দিয়ে অবরুদ্ধ মূল প্রবেশদ্বারের অন্যদিকে কিবলা নির্মাণ করা হয়।

জরিপের বিরুদ্ধে মসজিদের পক্ষ

আদালতের সামনে রাখা লিখিত ও মৌখিক সাক্ষ্যপ্রমাণ থেকে যদি আদালত কোনও সিদ্ধান্তে না পৌঁছাতে পারে, সেক্ষেত্রেই জরিপ প্রয়োজন বলে মনে করে মসজিদ পক্ষ।

অন্যদিকে, হিন্দু পক্ষ আদালতে জানিয়েছিল, নির্মাণশৈলী দেখে কাঠামোর কৃত্রিম দেওয়ালের আড়ালে লুকিয়ে থাকা কোনও বস্তুর কোনও প্রমাণ তাদের কাছে নেই। কিন্তু মুসলিম (মসজিদ) পক্ষ মনে করে আইন এএসআইকে হিন্দু পক্ষের দাবির সঙ্গে সম্পর্ক রয়েছে এমন প্রমাণ সংগ্রহ করার অনুমতি দেয় না।

মসজিদ পক্ষের দাবি, ১৯৯১ সালের উপাসনাস্থল আইন লঙ্ঘন করেছে এএসআইয়ের এই সমীক্ষা। এই আইন ভারতের স্বাধীনতার সময় (১৯৪৭) বিদ্যমান ধর্মীয় স্থানগুলির ধর্মীয় চরিত্র পরিবর্তনের অনুমতি দেয় না।

মসজিদ পক্ষ আরও বলেছে যে এলাহাবাদ হাইকোর্ট ইতিমধ্যে জ্ঞানবাপীর জমির মালিকানা সম্পর্কিত মামলায় এএসআই জরিপ নিষিদ্ধ করেছে। তাহলে অন্য কোনও ক্ষেত্রে সমীক্ষার অনুমতি দেওয়া হবে কী করে? যদিও মন্দির পক্ষর (হিন্দু পক্ষ) বক্তব্য ছিল যে এএসআই সমীক্ষা আদালতে চলতে থাকা এই মামলার সহায়তা করবে।

তাদের বক্তব্য, হিন্দু ও মুসলিম উভয় পক্ষই এএসআইয়ের সমীক্ষার ফলাফলের বিরোধিতা এবং সে বিষয়ে বক্তব্য পেশ করার সুযোগ পাবে। একই সঙ্গে সেই রিপোর্টকে আদালতে চ্যালেঞ্জ জানানোরও সুযোগ পাবে।

মন্দির পক্ষ ১৯৯১ সালের উপাসনাস্থল আইনকে জরিপ পরিচালনার ক্ষেত্রে বাধা বলে মনে করে না। বরং তারা দাবি করে স্বাধীনতার আগে এবং পরে হিন্দুরা সেখানে উপাসনা করে এসেছে। মন্দির পক্ষ মনে করে যে এএসআইয়ের কাজ ঐতিহাসিক কাঠামো সংরক্ষণ ও রক্ষা করা। তাই সমীক্ষায় জ্ঞানবাপীর ক্ষতি হতে পারে, মুসলিম পক্ষের এই আশঙ্কা একেবারে ভিত্তিহীন বলেও তাদের দাবি।

জ্ঞানবাপীর এএসআই সমীক্ষার প্রসঙ্গে উঠে এসেছে অযোধ্যার কথাও। এ প্রসঙ্গে মসজিদ পক্ষের আইনজীবী এসএফএ নকভি বলেন, ১৯৯১ সালের উপাসনাস্থল আইনে বলা হয়েছে, ১৯৪৭ সালের ১৫ আগস্ট বাবরি মসজিদের মালিকানার মামলা বিচারাধীন ছিল। উপাসনাস্থল আইনে জ্ঞানবাপী বা অন্য কোনও বিষয়ের উল্লেখ নেই এবং অযোধ্যার জমির মালিকানা মামলায় আদালত উপাসনাস্থল আইনের বৈধতা প্রতিষ্ঠা করেছে।

নকভি বলেন, অযোধ্যায় এএসআইয়ের সমীক্ষা হয়েছিল ভিন্ন পরিস্থিতিতে। অযোধ্যায় এএসআই সমীক্ষা ধ্বংসের পরে হয়েছিল, তার আগে নয়। জরিপটি ১৯৯২ সালের পরে করা হয়েছিল, তার আগে নয়। সূত্র- বিবিসি