রাশিয়া ইউক্রেনের ওপর চাপাচ্ছে বিমান বিধ্বস্তের দায়

সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করা ভিডিওতে দেখা গেছে, স্থানীয় সময় বেলা ১১টার দিকে (০৮:০০) বেলগোরোড শহরের উত্তর-পূর্বে ৭০ কিলোমিটার (৪৪ মাইল) দূরে ইয়াবলোনোভো গ্রামের কাছে একটি বিমান বিস্ফোরণ ও আগুনের গোলা দিয়ে নিচে নামছে। বেলগোরোড অঞ্চলে একটি রাশিয়ান বিমান বিধ্বস্ত হওয়ার মুহূর্তটি দেখানো এই ভিডিওটি বিবিসি যাচাই করেছে । ছবি : সংগৃহীত

বিশ্ব ডেস্ক: রাশিয়ার বেলগোরদে সামরিক বিমান বিধ্বস্তের দায় ইউক্রেনকে দিয়েছেন একজন রাশিয়ান সামরিক কর্মকর্তা। এর আগে ওই অঞ্চলের গভর্নর জানান, বিমানটি বিধ্বস্ত হওয়ায় এতে থাকা ইউক্রেইনের ৬৫ যুদ্ধবন্দিসহ ৭৪ আরোহীর সবাই নিহত হয়েছেন।

এই বিষয়ে রাশিয়ান মিনিস্ট্রি অফ ডিফেন্স জানিয়েছে, মস্কোর কাছাকাছি একটি বিমান ঘাঁটি থেকে বেলগোরদের উদ্দেশে যুদ্ধবন্দি নিয়ে ইলিউশিন আইএল-সেভেন সিক্স মডেলের ওই বিমানটি যাত্রা করে।

রাশিয়ান সামরিক বাহিনীর ব্যবহৃত একটি ইলিউশিন আইএল-সেভেন সিক্স মডেলের বিমান। ছবি : সংগৃহীত।

ইউক্রেন সীমান্তের কাছে হওয়ায় সাম্প্রতিক সপ্তাহগুলোতে বেলগোরদ প্রায়ই ইউক্রেনের বিমান হামলার শিকার হয়েছে।

কোনো ধরণের তথ্য বা প্রমাণ উপস্থাপন না করে রাশিয়ান মিনিস্ট্রি অফ ডিফেন্স জানিয়েছে যে, তাদের র‍্যাডারে বিমানটির দিকে দুইটি ইউক্রেইনিয়ান ক্ষেপণাস্ত্র ছোঁড়ার বিষয়টি ধরা পড়েছে।

ডিফেন্স মিনিস্ট্রির এমন দাবির উদ্ধৃতি দিয়ে রাশিয়ার রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থা- আরআইএ নভস্তি বলেছে, ‘বন্দি বিনিময়ের উদ্দেশ্যে বিমানটিতে ৬৫ জন ইউক্রেনিয়ান সেনা সদস্যকে বেলগোরদে নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল। এতে আরও ছয়জন ক্রু ও তিন নিরাপত্তাকর্মী ছিলেন।’

ডিফেন্স মিনিস্ট্রি তাদের দাবির স্বপক্ষে কোনো প্রমাণ উপস্থাপন করেনি।

রাশিয়ান ডিফেন্স মিনিস্ট্রির ঘনিষ্ঠ রাশিয়ান এমপি আন্দ্রেই কার্তাপোলভ দাবি করেছেন, বিমানটি লক্ষ্য করে তিনটি ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালানো হয়, যেগুলো অ্যামেরিকা অথবা জার্মানির তৈরি করা।

তিনি বলেন, ‘বন্দি বিনিময় ব্যাহত করার জন্য উদ্দেশ্যপ্রণোদিত হয়েই এই হামলা করা হয়েছে।’

ক্রেমলিন সাংবাদিকদেরকে জানিয়েছে যে, তারা এই ঘটনাটির তদন্ত করছে।

বিমানটিতে কাদেরকে বহন করা হচ্ছিল এবং তারা সংখ্যায় কতোজন ছিলেন সে সম্পর্কে তাদের কাছে কোন নির্ভরযোগ্য তথ্য ছিল না বলে ইউক্রেন দাবি করেছে।

ইউক্রেনের মিনিস্ট্রি অফ ডিফেন্স এর মেইন ইনটেলিজেন্স ডিরেক্টোরেট আন্দ্রিয়ে ইউসভ জানিয়েছেন, বুধবার (২৪ জানুয়ারি) রাশিয়া ও ইউক্রেইনের মধ্যে একটি যুদ্ধবন্দি বিনিময়ের প্রস্তুতি নেয়া হচ্ছিল। চেক রিপাবলিক ভিত্তিক বার্তাসংস্থা রেডিও ফ্রি ইউরোপ এর উদ্ধৃতি দিয়ে এই বিষয়ে প্রতিবেদন প্রকাশ করে ইউক্রেইনের রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থা সাসপিলনে।

ইউসভ আরও জানিয়েছেন যে, সবশেষ হামলাটির কারণে যুদ্ধবন্দি বিনিময় প্রক্রিয়া আর এগিয়ে নেয়া সম্ভব হবে না।

রাশিয়ান নিরাপত্তা বাহিনীর সংশ্লিষ্ট বাজা নামের একটি টেলিগ্রাম চ্যানেলের প্রকাশিত একটি ভিডিওতে দেখা যায়, একটি বিশাল আকারের বিমান বিধ্বস্ত হয়ে ভূপাতিত হওয়ার সময় বিস্ফোরিত হচ্ছিল।