যুক্তরাষ্ট্রে এবার ‘ভয়ংকর’ পদ্ধতিতে কার্যকর হবে মৃত্যুদণ্ড

টুইট ডেস্ক : নতুন পদ্ধতিতে কার্যকর করা হবে মৃত্যুদণ্ড। যুক্তরাষ্ট্রের আলবামা রাজ্যের এই নতুন নিয়মকে ‘ভয়ংকর পদ্ধতি’ হিসেবে বর্ণনা করা হচ্ছে। বর্তমানে এক আসামির মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের প্রস্তুতি চলছে। সবকিছু ঠিক থাকলে আগামী ২৫ জানুয়ারি তার দণ্ড কার্যকর হবে।

ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম দ্য গার্ডিয়ান জানিয়েছে, কেনেথ স্মিথ নামের ৫৮ বছর বয়সী ওই ব্যক্তির দণ্ড কার্যকর হবে নাইট্রোজেন গ্যাস ব্যবহার করে। তাকে একটি খাটে শোয়ানো হবে। এরপর তার মুখে নাইট্রোজেন গ্যাসের একটি মাস্ক পরানো হবে। এরপর শ্বাসের মাধ্যমে নাইট্রোজেন গ্যাস শ্বাসনালীর ভেতর নিতে বলা হবে তাকে। যখন তার দেহে শ্বাসের মাধ্যমে নাইট্রোজেন গ্যাস প্রবেশ করবে; তখন অক্সিজেন চলাচল বন্ধ হয়ে মৃত্যু হবে তার।

সংবাদমাধ্যমটি বলছে, কর্মক্ষেত্রে দুর্ঘটনার রিপোর্ট ছাড়া এই পদ্ধতিটি মানুষের জন্য যাচাই-বাছাই করা হয়নি। আগে অনিচ্ছাকৃতভাবে নাইট্রোজেন সমৃদ্ধ পরিবেশে আটকে পড়ে মানুস মারা যাওয়ার রেকর্ড আছে।

তারা জানিয়েছেন, অসুস্থ পশুদের কষ্টবিহীন মৃত্যু পরীক্ষা-নিরীক্ষা করতে তারা এই পদ্ধতি ব্যবহার করেছিলেন। কিন্তু এটি ততটা কার্যকরী ছিল না।

যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপের প্রাণী চিকিৎসক কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, স্তন্যপায়ী প্রাণীদের মধ্যে শূকর ছাড়া আর কোনো প্রাণীর মধ্যে তারা এই পদ্ধতির উল্লেখযোগ্য কার্যকারিতা দেখেননি। এ কারণে এই পদ্ধতিতে কোনো প্রাণীকে হত্যা করার আগে অজ্ঞান করার কথা বলেছেন তারা।

গত সপ্তাহে, একজন ফেডারেল বিচারক নাইট্রোজেন গ্যাস ব্যবহার করে স্মিথের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করার জন্য সবুজ সংকেত দেন। বন্দীর দাবি, অ-পরীক্ষিত পদ্ধতির জন্য তিনি ‘অসহ্য ক্ষতির শিকার’ হতে পারেন।

এদিকে নয়া এ পদ্ধতি কার্যকরের খবরে আন্তর্জাতিক চাপ বাড়ছে। মঙ্গলবার জেনেভায় জাতিসংঘের মানবাধিকারের হাইকমিশনার উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেছেন, স্মিথের প্রস্তাবিত মৃত্যুদণ্ডকে ‘নাইট্রোজেন গ্যাস দ্বারা শ্বাসরোধ’ হিসেবে বর্ণনা করা হয়েছে। পাশাপাশি একে আন্তর্জাতিক আইনের অধীনে নিষিদ্ধ নির্যাতন বা নিষ্ঠুর, অমানবিক বা অবমাননাকর আচরণ হতে পারে বলেও সতর্ক করা হয়েছে।

জাতিসংঘের সংস্থাটি উল্লেখ করেছে, আমেরিকান ভেটেরিনারি মেডিক্যাল অ্যাসোসিয়েশন (এভিএমএ) বড় প্রাণীদেরও এই পদ্ধতিতে ‘ইথানাইজ’ করার সময় অজ্ঞান করে নেয়ার সুপারিশ করে। কিন্তু আলাবামার নাইট্রোজেন শ্বাসরোধের মাধ্যমে মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করার আগে এ ধরণের কোনো ব্যবস্থা রাখেনি।