কোলন ক্যান্সারে আক্রান্ত হচ্ছেন অল্পবয়সী আমেরিকানরা

টুইট ডেস্ক : আমেরিকান ক্যান্সার সোসাইটির প্রকাশিত একটি গবেষণা অনুসারে, কোলন ক্যান্সার, স্তন ক্যান্সার, জরায়ুর ক্যান্সার এবং অন্যান্য ধরণের ক্যান্সারে আমেরিকানরা উচ্চ হারে আক্রান্ত হচ্ছেন। বুধবার এই গবেষণা প্রকাশ করা হয়।

বহু ক্ষেত্রে রোগীদের ক্যান্সার ধরা পড়ছে অল্পবয়সেই।

‘আ ক্যান্সার জার্নাল ফর ক্লিনিশিয়ানস’-এ প্রকাশিত গবেষণায় বলা হয়েছে, অতীতে ৫০ বছরের কম বয়সীদের ক্যান্সারে মৃত্যুর প্রধান কারণগুলোর মধ্যে চতুর্থ কারণ ছিল কোলোরেক্টাল ক্যান্সার। তবে এখন পুরুষদের ক্ষেত্রে এটি তালিকার প্রথমে অবস্থান করছে এবং নারীদের ক্ষেত্রে রয়েছে দ্বিতীয় অবস্থানে।

সেন্টার্স ফোর ডিজিজ কন্ট্রোল অ্যান্ড প্রিভেনশনের (সিডিসি) তথ্য অনুযায়ী, হৃদরোগের পর অ্যামেরিকান প্রাপ্তবয়স্কদের মধ্যে মৃত্যুর দ্বিতীয় প্রধান কারণ ক্যান্সার।

আশাব্যঞ্জক তথ্য হচ্ছে, ক্যান্সারে মৃত্যুর হার কমে যাওয়ার ধারা অব্যাহত আছে। বিশেষজ্ঞরা সতর্ক করে দিয়ে বলেছেন, ক্যান্সারের সবচেয়ে মারাত্মক রূপগুলো নির্ণয় করা হচ্ছে, মৃত্যুর সংখ্যা আরও বাড়তে পারে।

সিবিএস নিউজের প্রধান স্বাস্থ্যসেবা প্রতিনিধি গ্যাস্ট্রোএন্টারোলজিস্ট জন লাপুক বলেন, ‘আমরা বছরের পর বছর ধরে কোলন ক্যান্সারের প্রকোপের ঝুঁকি বাড়তে দেখছি। মৃত্যুর সংখ্যা বাড়তে কয়েক বছর লেগে যায়। কারণ ক্যান্সারে আক্রান্ত হলে কেউ সঙ্গে সঙ্গেই মারা যায় না।’

তিনি আরও বলেন, ‘যদিও মৃত্যুর সংখ্যা এখনও বাড়েনি, তবে এটি একটি সতর্ক সংকেত। পরবর্তীতে মৃত্যুর সংখ্যা আরও বাড়তে পারে।’

অনকোলজি হসপিটালিস্ট টিম টিউটান বলেন, কোলোরেক্টাল ক্যান্সার, জরায়ুর ক্যান্সার, কিডনি ক্যান্সার, গ্যাস্ট্রিক বা পাকস্থলীর ক্যান্সার এবং অগ্ন্যাশয়ের ক্যান্সার বাড়ছে। ধূমপান হ্রাস পাওয়ায় ফুসফুস ক্যান্সারের হার হ্রাস পেয়েছে।

দেহের মাইক্রোবায়োমকে প্রভাবিত করে এমন লাইফস্টাইলের কারণে কোলোরেক্টাল ক্যান্সারের হার ঊর্ধ্বমুখী হতে পারে বলে ধারণা করছেন গবেষকরা।

লাপুক বলেন, ‘সম্ভাব্য কারণগুলো সবই তাত্ত্বিক। স্থূলত্ব বাড়ছে, তাই এটি স্থূলত্বের সঙ্গে যুক্ত। একটি আকর্ষণীয় তত্ত্ব হল মাইক্রোবায়োম। আমাদের অন্ত্রে হাজার হাজার প্রজাতির ট্রিলিয়ন ব্যাকটেরিয়া রয়েছে। যা কোলন ক্যান্সারের ঝুঁকির সঙ্গে যুক্ত থাকতে পারে। আমরা অ্যান্টিবায়োটিক এবং ডায়েটের মাধ্যমে আমাদের মাইক্রোবায়োম পরিবর্তন করছি।’

টিউটান বলেছেন, মাংস ও প্রক্রিয়াজাত খাবার যেমন প্যাকেটজাত কুকিজ, চিপস ও পিৎজার পাশাপাশি অ্যালকোহল ও তামাক ব্যবহার এবং অলস জীবনধারা কোলোরেক্টাল ক্যান্সার বৃদ্ধিতে অবদান রাখতে পারে।

ভালো খবর হচ্ছে, ক্যান্সারে আক্রান্ত ব্যক্তিরা দীর্ঘদিন বেঁচে আছেন এবং তাদের মারা যাওয়ার হার খুব কম। গবেষণা অনুযায়ী, ক্যান্সার হওয়ার ৫ বছর পর পর্যন্ত বেঁচে থাকার হার ৬৯ শতাংশ। ২০২১ সালের হিসেব অনুযায়ী সামগ্রিক মৃত্যুর হার ৩৩ শতাংশ হ্রাস পেয়েছে।

তবে এরপরও গবেষকরা আশঙ্কা করেছেন যে, এই বছর আমেরিকায় ৬০০ হাজারেরও বেশি রোগী ক্যান্সারে মারা যাবে। যার অর্থ প্রতিদিন প্রায় ১,৬৮০ জন ক্যান্সারে প্রাণ হারাবেন।