হাদি হত্যাকাণ্ডে পুরস্কার ঘোষণা শিখ সংগঠনের

শহীদ শরীফ ওসমান হাদি হত্যাকাণ্ড: পুরস্কার ঘোষণা শিখ সংগঠনের, ভারতের বিরুদ্ধে অভিযোগ।

টুইট প্রতিবেদক: ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র ও জুলাই বিপ্লবের অন্যতম নেতা শহীদ শরীফ ওসমান হাদির হত্যাকারীদের শনাক্ত ও গ্রেপ্তারে সহায়তার জন্য যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক শিখ অধিকার সংগঠন শিখস ফর জাস্টিস (এসএফজে) ৫৫ লাখ টাকা পুরস্কার ঘোষণা করেছে। সংগঠনটির জেনারেল কাউন্সেল গুরপতবন্ত সিং পান্নুন এক বিবৃতিতে এ ঘোষণা দেন।

বিবৃতিতে পান্নুন দাবি করেন, হাদি হত্যাকাণ্ডের পেছনে ভারতের মোদি সরকার ও দেশটির গোয়েন্দা সংস্থা রিসার্চ অ্যান্ড অ্যানালিসিস উইং (RAW)-এর সম্পৃক্ততা থাকতে পারে। তবে এ অভিযোগের পক্ষে কোনো স্বাধীন বা আন্তর্জাতিকভাবে যাচাইযোগ্য প্রমাণ এখনো সামনে আসেনি।

পুরস্কার ঘোষণার উদ্দেশ্য

এসএফজে জানায়, বিশ্বাসযোগ্য তথ্যের মাধ্যমে হত্যাকারীদের অবস্থান শনাক্ত, গ্রেপ্তার এবং আইনের আওতায় আনতে এই পুরস্কার ঘোষণা করা হয়েছে। সংগঠনটির দাবি, হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত সন্দেহভাজনরা বাংলাদেশ ছেড়ে ভারতে আশ্রয় নিয়েছে। এটি ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) প্রাথমিক তদন্তের তথ্যের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ বলেও তারা উল্লেখ করেছে।

আন্তর্জাতিক প্রতিক্রিয়া ও বিক্ষোভ

হাদি হত্যার প্রতিবাদে এসএফজে-র ব্যানারে যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, কানাডা, ইতালি ও অস্ট্রেলিয়াসহ বিভিন্ন দেশে ভারতীয় কূটনৈতিক মিশনের সামনে বিক্ষোভ অনুষ্ঠিত হয়েছে। বিক্ষোভকারীরা হত্যাকাণ্ডের সুষ্ঠু তদন্ত ও দোষীদের বিচারের দাবি জানান।

৩২ বছর বয়সী শরীফ ওসমান হাদি গত ১২ ডিসেম্বর ঢাকার পল্টন এলাকায় মুখোশধারীদের গুলিতে গুরুতর আহত হন। পরবর্তীতে চিকিৎসার জন্য সিঙ্গাপুরে নেওয়া হলে ১৮ ডিসেম্বর তিনি মারা যান। তার মৃত্যুর পর দেশের বিভিন্ন স্থানে উত্তেজনা ও সহিংসতার ঘটনা ঘটে।

ডিএমপি জানিয়েছে, হত্যাকাণ্ডের তদন্ত চলমান রয়েছে এবং কয়েকজন সন্দেহভাজনকে চিহ্নিত করা হয়েছে। অন্তর্বর্তী সরকার দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালের মাধ্যমে মামলাটি পরিচালনার আশ্বাস দিয়েছে।

উল্লেখ্য, শিখস ফর জাস্টিস একটি খালিস্তানপন্থী সংগঠন, যাকে ভারত সরকার নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছে। ভারত সরকার হাদি হত্যায় নিজেদের সম্পৃক্ততার অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করেছে। বিশ্লেষকদের মতে, এ ধরনের পারস্পরিক অভিযোগ দক্ষিণ এশীয় রাজনীতিতে নতুন কূটনৈতিক ও রাজনৈতিক বিতর্কের জন্ম দিতে পারে।

তদন্তের অগ্রগতি ও সরকারি অবস্থান ঘিরে পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে।

সূত্র: আল জাজিরা, দ্য হিন্দু, ডেইলি টাইমস (পাকিস্তান), প্রথম আলো, বাংলা ট্রিবিউন, চ্যানেল ২৪।