পাকিস্তানে নিরাপত্তা বাহিনীর অভিযানে ভারত-মদদপুষ্ট ১২ সন্ত্রাসী নিহত: আইএসপিআর

খাইবার পাখতুনখোয়া ও বেলুচিস্তানে পৃথক গোয়েন্দাভিত্তিক অভিযান!
বিশ্ব ডেস্ক: পাকিস্তানের খাইবার পাখতুনখোয়া (কে পি) ও বেলুচিস্তান প্রদেশে নিরাপত্তা বাহিনীর পৃথক গোয়েন্দাভিত্তিক অভিযানে মোট ১২ জন সন্ত্রাসী নিহত হয়েছে। পাকিস্তান সেনাবাহিনীর মিডিয়া উইং আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তর (আইএসপিআর) এক বিবৃতিতে এ তথ্য নিশ্চিত করেছে।
রোববার (২৮ ডিসেম্বর) পরিচালিত এ অভিযানগুলো পাকিস্তানের চলমান সন্ত্রাসবিরোধী কার্যক্রমের অংশ।
খাইবার পাখতুনখোয়ায় অভিযান
কে পি প্রদেশের কারাক জেলার বাহাদুর খেল এলাকায় কাউন্টার টেরোরিজম ডিপার্টমেন্ট (সিটিডি) ও পুলিশের যৌথ অভিযানে ৮ জন সন্ত্রাসী নিহত হয়। গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে শুরু হওয়া এ অভিযানে সন্ত্রাসীদের একাধিক আস্তানা ধ্বংস করা হয়েছে।
নিরাপত্তা বাহিনী ও সন্ত্রাসীদের মধ্যে তীব্র গুলি বিনিময়ের সময় দুই পুলিশ সদস্য আহত হন। আহতদের দ্রুত হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে এবং তাদের অবস্থা স্থিতিশীল বলে জানিয়েছে কর্তৃপক্ষ।
আঞ্চলিক পুলিশ কর্মকর্তা (আরপিও) কোহাট আব্বাস মাজিদ মারওয়াত বলেন, “এই ধরনের গোয়েন্দাভিত্তিক অভিযান সন্ত্রাসী নেটওয়ার্ক ভেঙে দিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে এবং অঞ্চলে স্থায়ী শান্তি প্রতিষ্ঠায় সহায়ক হবে।”
বেলুচিস্তানে অভিযান
অন্যদিকে, বেলুচিস্তানের কালাত জেলায় পৃথক এক অভিযানে আরও ৪ জন সন্ত্রাসী নিহত হয়েছে। আইএসপিআরের বিবৃতি অনুযায়ী, নিহতরা ভারতীয় সমর্থিত বলে অভিযুক্ত ‘ফিতনা আল হিন্দুস্তান’ নামক একটি সন্ত্রাসী গোষ্ঠীর সদস্য। পাকিস্তান কর্তৃপক্ষ এই গোষ্ঠীটিকে বেলুচ বিচ্ছিন্নতাবাদী সংগঠনের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট বলে দাবি করে আসছে।
অভিযানের সময় তীব্র গুলি বিনিময়ের পর নিহত সন্ত্রাসীদের কাছ থেকে বিপুল পরিমাণ অস্ত্র, গোলাবারুদ ও বিস্ফোরক উদ্ধার করা হয়েছে। নিরাপত্তা সূত্র জানায়, তারা এলাকায় একাধিক সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে জড়িত ছিল।
প্রধানমন্ত্রীর প্রতিক্রিয়া
পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরিফ কালাত অভিযানের সাফল্যের জন্য নিরাপত্তা বাহিনীর প্রশংসা করেন। এক বিবৃতিতে তিনি বলেন, “সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে এ ধরনের সফল অভিযান জাতির জন্য বড় অর্জন। পুরো জাতি সশস্ত্র বাহিনীর পাশে রয়েছে।”
বেলুচিস্তান ও খাইবার পাখতুনখোয়া দীর্ঘদিন ধরেই পাকিস্তানের সবচেয়ে অস্থিতিশীল অঞ্চলগুলোর মধ্যে অন্যতম। ২০২৫ সালে দেশটিতে সন্ত্রাসী হামলা ও সংঘর্ষ উল্লেখযোগ্য হারে বেড়েছে। বিভিন্ন প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, চলতি বছরে যুদ্ধ ও সন্ত্রাসসংক্রান্ত মৃত্যুর সংখ্যা প্রায় ৭৩ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে।
আইএসপিআরের মতে, এসব অভিযান চলমান ‘আজম-ই-ইস্তেহকাম’ অভিযানের অংশ, যার লক্ষ্য বিদেশি মদদপুষ্ট সন্ত্রাসবাদ নির্মূল করা। তবে ভারতীয় সমর্থনের অভিযোগ আন্তর্জাতিকভাবে স্বাধীনভাবে নিশ্চিত করা যায়নি বলে বিভিন্ন বিশ্লেষক উল্লেখ করেছেন।
নিরাপত্তা বিশ্লেষকদের মতে, সাম্প্রতিক এই অভিযানগুলো পাকিস্তানের সন্ত্রাসবিরোধী প্রচেষ্টাকে আরও জোরদার করবে। একই সঙ্গে এটি আঞ্চলিক নিরাপত্তা ও স্থিতিশীলতার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে বলে মনে করা হচ্ছে।






