গোদাগাড়ীতে জেন্ডারভিত্তিক সহিংসতা রোধে প্রশাসনের সঙ্গে বার্ষিক সভা

নিজস্ব প্রতিবেদক : রাজশাহীর গোদাগাড়ীতে জেন্ডারভিত্তিক সহিংসতা (জিবিভি) প্রতিরোধে কিশোর-কিশোরী ও যুবদের অংশগ্রহণে উপজেলা প্রশাসনের সঙ্গে বার্ষিক সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
রোববার (২১ ডিসেম্বর) সচেতন সোসাইটি বাস্তবায়িত জিবিভি প্রতিরোধ প্রকল্পের আওতায় বিজয়নগর দীপশিখা এনজিওর মিটিং রুমে এ সভার আয়োজন করা হয়।
সভায় উপজেলা পর্যায়ের বিভিন্ন সরকারি দপ্তরের কর্মকর্তা, কিশোর-কিশোরী ও যুব প্রতিনিধি, সাংবাদিক, ধর্মীয় নেতা এবং সুশীল সমাজের প্রতিনিধিরা অংশগ্রহণ করেন। প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন উপজেলা যুব উন্নয়ন কর্মকর্তা সোহেল হোসেল রানা।
অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন বাসির আহমেদ ও রইস হেমব্রম। স্বাগত বক্তব্য রাখেন প্রকল্পের অ্যাডমিন ও ফাইন্যান্স অফিসার একেএম আবুল হাসেম।
সভায় কিশোর-কিশোরী ও যুব ক্লাবের অন্তর্ভুক্ত ১৫টি কমিটির পক্ষ থেকে ক্লাব পরিচালনা কমিটি এবং শিশু সুরক্ষা কমিটির সভাপতিরা তাদের বার্ষিক পরিকল্পনা ও অর্জন তুলে ধরেন। পাশাপাশি পরিকল্পনা বাস্তবায়নের পথে যেসব প্রতিবন্ধকতার মুখোমুখি হচ্ছেন, তা উল্লেখ করে সংশ্লিষ্ট সরকারি দপ্তরের সহযোগিতা কামনা করেন।
উপস্থাপিত বার্ষিক পরিকল্পনায় বাল্যবিবাহ ও শিশু শ্রম বন্ধ, পারিবারিক ও যৌন নির্যাতন প্রতিরোধ, পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষায় বৃক্ষরোপণ কর্মসূচি এবং স্থানীয় সড়ক সংস্কারের বিষয়গুলো বিশেষ গুরুত্ব পায়।
কিশোর-কিশোরীরা জানান, বিভিন্ন উদ্যোগ গ্রহণ করা হলেও এখনো পুরোপুরি বাল্যবিবাহ ও শিশু শ্রম বন্ধ করা সম্ভব হচ্ছে না। এসব সামাজিক সমস্যা সমাধানে সরকারের আরও সক্রিয় ভূমিকা প্রয়োজন বলে তারা মত প্রকাশ করেন।
সভায় বক্তব্য রাখতে গিয়ে উপজেলা যুব উন্নয়ন কর্মকর্তা সোহেল রানা বলেন,
“জেন্ডারভিত্তিক সহিংসতা প্রতিরোধ একটি চলমান সামাজিক দায়িত্ব। শুধু আইন প্রয়োগ করলেই হবে না, বরং সচেতনতা বৃদ্ধি ও মানসিকতার পরিবর্তনের মাধ্যমেই সহিংসতা রোধ করতে হবে।”
তিনি কিশোর-কিশোরীদের কার্যক্রম আরও জোরদার করার ওপর গুরুত্বারোপ করেন।
সভায় চলতি বছরের কার্যক্রম পর্যালোচনা করা হয়। আলোচনায় নারী ও শিশু নির্যাতন, পারিবারিক সহিংসতা, বাল্যবিবাহ, যৌন হয়রানি ও সাইবার সহিংসতা প্রতিরোধে করণীয় বিষয়গুলো গুরুত্ব পায়। এ লক্ষ্যে সচেতনতামূলক কার্যক্রম, উঠান বৈঠক, কিশোর-কিশোরী ক্লাব সক্রিয়করণ এবং ভুক্তভোগীদের জন্য কাউন্সেলিং ও আইনি সহায়তা জোরদারের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
সভা শেষে অংশগ্রহণকারীরা আশা প্রকাশ করেন, সমন্বিত উদ্যোগ ও কার্যকর বাস্তবায়নের মাধ্যমে ভবিষ্যতে গ্রাম পর্যায়ে একটি নিরাপদ, সহিংসতামুক্ত ও সমতাভিত্তিক সমাজ গড়ে তোলা সম্ভব হবে।






