হাদিকে হারিয়ে শোকস্তব্ধ দেশ, সমবেদনা জানাল মার্কিন দূতাবাস

মার্কিন দূতাবাসের শোক: যুব নেতা শরীফ ওসমান হাদির মৃত্যুতে গভীর সমবেদনা।

স্টাফ রিপোর্টার: যুব নেতা ও ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরীফ ওসমান হাদির মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করেছে ঢাকাস্থ যুক্তরাষ্ট্রের দূতাবাস।

শুক্রবার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রকাশিত এক বিবৃতিতে দূতাবাস জানায়, বাংলাদেশের জনগণের সাথে একাত্মতা প্রকাশ করে তারা এই তরুণ নেতার মৃত্যুতে শোকাহত। বিবৃতিতে বলা হয়, “The U.S. Embassy joins the people of Bangladesh in mourning the loss of youth leader Sharif Osman Hadi and offers our deepest condolences to his family, friends, and supporters.”

গতকাল বৃহস্পতিবার (১৮ ডিসেম্বর) রাতে সিঙ্গাপুরের একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান শরীফ ওসমান হাদি (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)। গত ১২ ডিসেম্বর ঢাকার পুরানা পল্টন এলাকায় দুর্বৃত্তদের গুলিতে গুরুতর আহত হয়েছিলেন তিনি। উন্নত চিকিৎসার জন্য ১৫ ডিসেম্বর তাঁকে এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে সিঙ্গাপুর নেওয়া হয়। সেখানে সিঙ্গাপুর জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তাঁর মৃত্যু হয়।

শরীফ ওসমান হাদি ২০২৪ সালের জুলাই গণঅভ্যুত্থানের অন্যতম সম্মুখসারির যোদ্ধা ছিলেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ছাত্র এবং ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক হিসেবে তিনি সাম্প্রতিক রাজনৈতিক আন্দোলনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। ঢাকা-৮ আসন থেকে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনে অংশ নেওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন তিনি। তাঁর মৃত্যুকে দেশের গণতান্ত্রিক আন্দোলনের জন্য অপূরণীয় ক্ষতি হিসেবে অভিহিত করেছেন অনেকে।

হাদির মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়ার পর দেশজুড়ে বিক্ষোভ ও প্রতিবাদ ছড়িয়ে পড়ে। শাহবাগসহ ঢাকার বিভিন্ন স্থানে হাজারো মানুষ জড়ো হয়ে হত্যাকারীদের গ্রেপ্তার ও বিচারের দাবি জানান। কিছু স্থানে সহিংসতার ঘটনাও ঘটে।

অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস তাঁর মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করে আগামী শনিবার (২০ ডিসেম্বর) রাষ্ট্রীয় শোক ঘোষণা করেছেন। তিনি হাদির পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানিয়ে বলেন, তাঁর ত্যাগ দেশের গণতান্ত্রিক অগ্রযাত্রাকে অনুপ্রাণিত করবে।

বিএনপি, জামায়াতে ইসলামীসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও সংগঠনও হাদির মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করেছে। তাঁকে একজন সাহসী ও প্রতিবাদী যুব নেতা হিসেবে স্মরণ করছে যুব সমাজের বড় একটি অংশ। হাদির মরদেহ শুক্রবার সন্ধ্যায় দেশে পৌঁছানোর কথা রয়েছে।

এই মৃত্যু বাংলাদেশের চলমান রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে নতুন উত্তেজনা সৃষ্টি করেছে এবং আসন্ন নির্বাচনের প্রেক্ষাপটে নিরাপত্তা ও স্থিতিশীলতার প্রশ্ন তুলে ধরেছে।