ফ্রান্সের ইতিহাসে কমবয়সী প্রধানমন্ত্রী হলেন গ্যাব্রিয়েল অ্যাটাল

ফ্রান্সের নতুন প্রধানমন্ত্রী গ্যাব্রিয়েল অ্যাটাল। ছবি: সংগৃহীত

বিশ্ব ডেস্ক: ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ তার দ্বিতীয় মেয়াদে মন্ত্রিসভায় ব্যাপক রদবদল আনার পরিকল্পনা করেছে। তারই প্রেক্ষিতে ফ্রান্সের ইতিহাসে সবচেয়ে কমবয়সী প্রধানমন্ত্রী হয়েছে ‘গ্যাব্রিয়েল অ্যাটাল।’

প্রধানমন্ত্রী হওয়ার পর সাহসের সঙ্গে জীবনযাত্রার ক্রমবর্ধমান খরচ মোকাবিলার জন্য মধ্যবিত্তদের দ্রুত সাহায্য করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন তিনি।

সাবেক মন্ত্রী, সরকারের মুখপাত্র ও একজন ঘনিষ্ঠ মিত্র অ্যাটালকে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে নিয়োগ দেয়ার পর ম্যাক্রোঁ তার উদ্দেশ্যে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে লেখেন, “প্রিয় গ্যাব্রিয়েল অ্যাটাল, আমি জানি আমি যে সংস্কারের প্রক্রিয়ার কথা ঘোষণা করেছি তা নিশ্চিত করার জন্য আমি আপনার সক্ষমতা ও প্রতিশ্রুতির ওপর নির্ভর করতে পারি।”

‘ফ্রেঞ্চ রাজনীতির একজন জনপ্রিয় ও মিডিয়া-সচেতন উদীয়মান তারকা ৩৪ বছর বয়সী অ্যাটাল এর নিয়োগ ম্যাক্রোঁর বিভাজনমূলক রদবদল বা সংস্কারের বাইরে গিয়ে জুনে ইউরোপিয়ান পার্লামেন্টের নির্বাচনে তার মধ্যপন্থী দলের জয়ের সম্ভাবনা বাড়ানোর ইচ্ছারই ইঙ্গিত দেয়।’

ফ্রান্সে জীবনযাত্রার ক্রমবর্ধমান ব্যয় ও গত বছরের পেনশন সংস্কার নিয়ে জনগণের ব্যাপক অসন্তোষ সেখানে ম্যাক্রোঁর জনপ্রিয়তায় বড় আঘাত হয়ে এসেছে। এর ফলে ইইউ এর ভোটের ক্ষেত্রে তার দল মেরিন লা-পেন এর অতি-ডানপন্থী দলের চেয়ে পিছিয়ে পড়েছে।

প্রধানমন্ত্রী হিসেবে নিয়োগ পাওয়া অ্যাটাল বলেন, “যে প্রেক্ষাপটে আমি এই পদে নিয়োগ পেয়েছি তা সম্পর্কে আমি ভালভাবে অবগত।”

নিজেদের ভবিষ্যৎ নির্ধারণ করতে ও ফ্রান্সের সম্ভাবনা বাড়িয়ে তোলার প্রতিশ্রুতি দিয়ে আ্যাটাল বলেন, ‘অনেক ফ্রেঞ্চ নাগরিকই এই দেশের সক্ষমতা, নিজেদের বিষয়ে ও আমাদের ভবিষ্যতের বিষয়ে সন্দেহ পোষণ করেন।’ ‘বিশেষ করে মধ্যবিত্ত শ্রেণীর মানুষেরা, যারা কাজে যাওয়ার জন্য প্রতিদিন সকালে ঘুম থেকে ওঠেন এবং দিনশেষে নিজেদের চাহিদা মেটাতে ব্যর্থ হন।’

পার্লামেন্টে একটি কার্যকরী সংখ্যাগরিষ্ঠতা না থাকায় ম্যাক্রোঁ তার দ্বিতীয় মেয়াদের সংস্কার এজেন্ডাকে এগিয়ে নেয়ার জন্য লড়াই করেছেন। তিনি এখন সবার জন্য কর্মসংস্থান নিশ্চিত করার মতো লক্ষ্যগুলোর ওপর বেশি মনোযোগ দেবেন।

সাম্প্রতিক মাসগুলোতে করা বিভিন্ন জরিপে দেখা গেছে, অ্যাটালকে ফ্রান্সের সবচেয়ে জনপ্রিয় রাজনীতিবিদদের মধ্যে একজন হিসেবে বিবেচনা করা হচ্ছে।

‘ম্যাক্রোঁর অনুগত এই রাজনীতিবিদ কোভিড চলাকালীন সময় সরকারের মুখপাত্র হিসেবে একটি পরিচিত মুখ হয়ে গিয়েছিলেন। যোগাযোগে অসাধারণ দক্ষতার জন্যও তিনি খ্যাতি অর্জন করেছেন।’

ফ্রান্সের প্রথম গে প্রধানমন্ত্রী অ্যাটাল বলেন, “ফ্রান্সের ইতিহাসে সবচেয়ে কম বয়সী প্রেসিডেন্ট ফ্রান্সের ইতিহাসের সবচেয়ে কম বয়সী প্রধানমন্ত্রীকে নিয়োগ দিচ্ছেন। আমি এটাকে একটি সাহসিকতার প্রতীক হিসেবে দেখতে চাই।”

‘নতুন প্রধানমন্ত্রী হিসেবে নিয়োগ পাওয়ার মাধ্যমে অ্যাটাল ৬২ বছর বয়সী ফ্রান্সের সদ্য সাবেক প্রধানমন্ত্রী এলিজাবেথ বোর্ন এর স্থলাভিষিক্ত হয়েছেন।’

ম্যাক্রোঁ ও অ্যাটাল তাদের নতুন সরকার গঠনে কিছু দিন সময় নিতে পারেন। প্রেসিডেন্ট এর বাসভবনের একজন কর্মকর্তা জানিয়েছেন, এই সপ্তাহে মন্ত্রিসভার নিয়মিত বৈঠক হওয়ার সম্ভাবনা কম।