বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের হাতে শক্তিশালী আরকে-৩ কর্সার মিসাইল

৫৫০ মিমি ইস্পাত ভেদ করা লেজার-গাইডেড মিসাইল এখন বিজিবির সীমান্তচৌকিতে।
ক্রাজ স্পার্টান গাড়িতেও লাগানো হচ্ছে কর্সার: বিজিবির দ্রুতগতির অ্যান্টি-ট্যাঙ্ক ইউনিট তৈরি।
টুইট ডেস্ক: বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) মিয়ানমার সীমান্তে নিজেদের অ্যান্টি-ট্যাঙ্ক ক্ষমতা বহুগুণ বাড়িয়ে দিয়েছে ইউক্রেনের তৈরি আধুনিক আরকে-৩ কর্সার (RK-3 Corsar) লাইট অ্যান্টি-ট্যাঙ্ক গাইডেড মিসাইল (এটিজিএম) সিস্টেমের মাধ্যমে।
এই মিসাইল এখন বিজিবির বিভিন্ন ব্যাটালিয়ন ও সীমান্তচৌকিতে মোতায়েন করা হয়েছে, বিশেষ করে টেকনাফ, উখিয়া, নাইক্ষ্যংছড়ি এবং সেন্ট মার্টিন দ্বীপে।
২.৫ কিলোমিটার পাল্লার এই হালকা মিসাইলটি কাঁধে বা ত্রিপদে বসিয়ে ছোড়া যায় এবং আধুনিক ট্যান্ডেম ওয়ারহেডের সাহায্যে বিস্ফোরক রিঅ্যাক্টিভ আর্মার (ইআরএ) থাকা সত্ত্বেও ৫৫০ মিলিমিটার পর্যন্ত সাঁজোয়া ইস্পাত ভেদ করতে সক্ষম। লেজার-গাইডেড এই মিসাইল রাতেও থার্মাল ইমেজারের সাহায্যে নিখুঁতভাবে লক্ষ্যভেদ করতে পারে।
বিজিবি সূত্রে জানা গেছে, ২০১৯-২০ সাল থেকে এই মিসাইল ক্রয় প্রক্রিয়া শুরু হয় এবং ২০২১ সালে প্রথম ব্যাচ বাংলাদেশে পৌঁছায়। ২০২৩ সালে বিজিবির তৎকালীন উচ্চ পদমর্যাদার অফিসারগন এর প্রক্রিয়া শুরু করেন। ফ্যাক্টরি অ্যাকসেপ্টেন্স টেস্টে অংশ নেন বলে ধারণা করা হয়। বর্তমানে বিজিবির প্রশিক্ষণ কেন্দ্রগুলোতে কর্সার মিসাইলের সিমুলেটর ব্যবহার করে নতুন রিক্রুটদের প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে।
এই মিসাইল কেবল হাতে বহন করা যায় না, ইউক্রেনীয় ক্রাজ স্পার্টান আর্মার্ড গাড়ির ওপরেও লাগানো হয়েছে। প্রতিটি গাড়ি থেকে একসঙ্গে চারটি মিসাইল ছোড়া যায় এবং আরও আটটি রিজার্ভে রাখা যায়।
বিজিবির একজন জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, “মিয়ানমার সীমান্তে যেকোনো ধরনের সাঁজোয়া হুমকি মোকাবিলায় কর্সার আমাদের আত্মবিশ্বাস অনেক বাড়িয়ে দিয়েছে। এটি খুবই হালকা, দ্রুত মোতায়েন করা যায় এবং পাহাড়ি এলাকার জন্য আদর্শ।”
প্রতিরক্ষা বিশ্লেষকদের মতে, আরাকান আর্মি ও মিয়ানমার সেনাবাহিনীর মধ্যে চলমান সংঘাতের প্রেক্ষাপটে বাংলাদেশ সীমান্তে সাঁজোয়া যানের অনুপ্রবেশের আশঙ্কা বেড়েছে। এই পরিস্থিতিতে আরকে-৩ কর্সারের মোতায়েনকে বিজিবির সক্ষমতার একটি বড় অগ্রগতি হিসেবে দেখা হচ্ছে।
বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ এখন দক্ষিণ এশিয়ার মধ্যে প্রথম বাহিনী যারা এই আধুনিক ইউক্রেনীয় অ্যান্টি-ট্যাঙ্ক মিসাইল ব্যবহার করছে।
সূত্র ও ছবি সংগৃহিত








