আগুনে পুড়ল বেনাপোল এক্সপ্রেস, নিহত ৪

টুইট ডেস্ক : সাত জানুয়ারির দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ঠেকাতে বিএনপির ডাকা হরতালের আগের রাতে রাজধানীর গোপীবাগে আগুনে পুড়ল বেনাপোল এক্সপ্রেস। শুক্রবার রাতে এ ঘটনায় অন্তত চারজনের মৃত্যু হয়েছে বলে ঢাকার ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের মিডিয়া সেল কর্মকর্তা তালহা বিন জসিম জানিয়েছেন।

এছাড়া আসিফ (৩০) নামের এক যুবক ৮ শতাংশ পুড়ে যাওয়া শরীর নিয়ে ঢাকার শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে ভর্তি হয়েছেন বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে জানিয়েছেন ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পুঁলিশ ফাঁড়ির পরিদর্শক বাচ্চু মিয়া।

বেনাপোল থেকে দেড় শতাধিক যাত্রী নিয়ে ট্রেনটি ঢাকায় আসছিল। পদ্মা সেতু হয়ে ঢাকায় ঢোকার পর কমলাপুর রেলস্টেশনে পৌঁছানোর আগে সায়েদাবাদ থেকে গোলাপবাগের পথে ওই ট্রেনে আগুন জ্বলতে দেখা যায়।

আগুনে চারটি বগি ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার কথা জানিয়েছেন রেলওয়ে পুলিশের ঢাকা বিভাগীয় নিয়ন্ত্রণ কক্ষের অপারেটর মোখলেছুর রহমান। তিনি বলেন, “সায়দাবাদ এলাকা অতিক্রমকালে বেনাপোল এক্সপ্রেসের ‘চ’ বগিতে প্রথমে আগুন দেখা যায়। এরপর পাওয়ার কার এবং আরো দুটি বগিতে আগুন ছড়িয়ে যায়।”

র‌্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন শুক্রবার রাত সাড়ে ১০ ঘটনাস্থলে সাংবাদিকদের বলেন, “আমরা আনুমানিক সোয়া ৯টার দিকে জানতে পারি আগুন লেগেছে। দুর্বৃত্তরা আগুন দিয়েছে না-কি নাশকতাকারীরা দিয়েছে না কি অন্য কোনোভাবে আগুন লেগেছে, তা আমাদের গোয়েন্দারা তদন্ত করছেন। ট্রেনের চালকসহ ট্রেনে থাকাদের সঙ্গে কথা বলে জানার চেষ্টা করছি, কীভাবে আগুনটি লেগেছে।”

ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের পরিদর্শক আনোয়ার হোসেন জানান, শুক্রবার রাত ৯টা ৫মিনিটে চলন্ত ট্রেনে আগুন লাগার খবর পান তারা। আগুন নেভাতে মোট আটটি ইউনিট সেখানে পাঠানো হয়। তারা দুই ঘণ্টার চেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আনেন। র‌্যাব ও বিজিবি সদস্যরাও উদ্ধারকাজে সহায়তা করেন।

শুক্রবার রাতে রাজধানীর গোপীবাগে আগুনে পুড়ে যাওয়া বেনাপোল এক্সপ্রেস ট্রেনের একটি কোচ থেকে একজনের মরদেহ বের করে নিয়ে আসেন ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা।

মাসুদ রানা নামে একজন প্রত্যক্ষদর্শী জানান, তিনি ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখেন একজন ব্যক্তি জানালা থেকে মাথা বের করে রেখেছেন। তারা কয়েকজন মিলে তাকে বের করার চেষ্টা করেন। কিন্তু তিনি বলছিলেন তার স্ত্রী এবং সন্তান পুড়ে গেছে, তিনিও অনেকখানি পুড়ে গেছেন। শেষ পর্যন্ত ওই ব্যক্তিকে জ্বলে পুড়ে মরতে দেখলাম।

নির্বাচন বর্জন করা বিএনপির হরতাল অবরোধের মধ্যে গত দুই মাসে প্রায় তিনশ যানবাহন নাশকতার শিকার হয়েছে। এর মধ্যে ট্রেনে আগুন দেওয়া এবং রেললাইন কেটে রাখার কয়েকটি ঘটনায় অন্তত পাঁচজনের প্রাণ গেছে।

এর মধ্যে ১৯ ডিসেম্বর ভোরে ঢাকার তেজগাঁও এলাকায় মোহনগঞ্জ এক্সপ্রেস ট্রেনে আগুন দেওয়া হলে এক নারী ও তাঁর শিশু সন্তানসহ চারজন মারা যান। যাত্রীবেশে ট্রেনে উঠে সেখানে আগুন দেওয়া হয়েছিল বলে পুলিশের তরফ থেকে সে সময় জানানো হয়েছিল।