প্রচার পর্ব পেরিয়ে এখন ব্যালটের অপেক্ষা

ফাইল ছবি

টুইট ডেস্ক : কড়াকড়ির মধ্যেই আচরণবিধি ভাঙার অহরহ ঘটনা ঘটল, প্রার্থিতাও বাতিল হলো একজনের; আর প্রার্থীদের পাল্টাপাল্টিতে বিএনপির বজর্নের মধ্যেও সরব ছিল ভোটের মাঠ। প্রচারের সেই পর্ব পেরিয়ে এখন ভোটের অপেক্ষা। আজ শুক্রবার সকাল ৮টায় শেষ হয়েছে প্রার্থীদের প্রচার প্রচারণা।

প্রতীক বরাদ্দ পেয়ে ১৮ দিন ধরে অনবরত প্রচারের পর মনোযোগ এখন কেন্দ্রে ভোটার আনা আর শান্তিপূর্ণ পরিবেশ বজায় রাখা। নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরা দেশজুড়ে শান্তি শৃংঙ্খলা ঠিক রাখার কাজে নেমে গেছেন। নির্বাচন কমিশনও প্রস্তুতির কার্যক্রম শেষ করেছে।

রোববার ভোটের আগে প্রচার শেষে এখন ভোটের বাকি প্রস্তুতি নিতে দুই দিন সময় পাচ্ছেন ১ হাজার ৯৭০ জন প্রার্থী। পোলিং এজেন্ট চূড়ান্ত করা থেকে কর্মীদের ভোটের দিনের আগে ও পরের দায়িত্ব ভাগ করে দেওয়ার মধ্য দিয়ে ব্যালেটে জনগণের রায় কী হবে সেই প্রতীক্ষায় সময় কাটবে তাদের। নির্বাচন সংশ্লিষ্ট আরেক পক্ষের নজর থাকছে পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণেও।

ভোট বর্জন করে বিএনপির হরতাল-অবরোধের মধ্যেই শতাধিকের বেশি আসনে স্বতন্ত্রদের স্বতস্ফুর্ত অংশগ্রহণ অনেক স্থানে নির্বাচনে উত্তাপ ছড়িয়েছে। এরপরও অধিকাংশ এলাকায় শান্তিপূর্ণ পরিবেশে প্রচার চললেও অন্তত অর্ধশত আসনে হামলা, মারামারি, গোলযোগ ও পাল্টাপাল্টি অভিযোগের ঘটনা ভোটের আলোচনাকে সরব রেখেছে। এমন পরিস্থিতির মধ্যে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীদের সব ধরনের প্রচার শেষ হয়েছে শুক্রবার সকাল ৮টায়।

নির্বাচন কমিশন বলছে, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে; বড় ধরনের গোলযোগের শঙ্কা নেই। শান্তিপূর্ণ ভোটের সব ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।

বৃহস্পতিবার প্রচার শেষের আগের সন্ধ্যায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জাতির উদ্দেশে ভাষণে সবাইকে ভোট দিতে আসার আহ্বান জানিয়েছেন। সাংবিধানিক প্রক্রিয়াকে ব্যাহত করে, এমন যে কোনো ধারণায় প্রশ্রয় না দেওয়ার আহ্বান জানিয়ে সরকারপ্রধান অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের প্রত্যাশার কথা তুলে ধরেন।

ভোটের আগে ও পরে বিএনপির ৪৮ ডাকা ঘণ্টা হরতালের পরও অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের প্রত্যাশা রেখে তিনি বলেন, “গণতন্ত্র ও আইনের শাসনে বিশ্বাসী রাজনৈতিক দলসমূহ এবং প্রতিষ্ঠানের প্রতি অনুরোধ, সাংবিধানিক প্রক্রিয়া ব্যাহত হয় এমন কোনো উদ্ভট ধারণাকে প্রশ্রয় দেবেন না এবং ইন্ধন যোগাবেন না।”

দলের প্রার্থী ১৫৩৬, স্বতন্ত্র ৪৩৬

একজন প্রার্থীর মৃত্যুতে ৭ জানুয়ারি নির্বাচন হবে ২৯৯ আসনে। বিএনপিবিহীন এ ভোটে থাকছে আওয়ামী লীগ, জাতীয় পার্টিসহ ২৮টি দল, যাদের প্রার্থী রয়েছে ১ হাজার ৫৩৬ জন। স্বতন্ত্র প্রার্থী রয়েছেন ৪৩৬ জন, যাদের অন্তত তিন ভাগের এক ভাগই আওয়ামী লীগের স্থানীয় ও কেন্দ্রীয় পদাধিকারী।

দলীয় ও স্বতন্ত্র প্রার্থীদের এমন প্রতিদ্বন্দ্বিতার মধ্যে টানা ১৮ দিন ধরে চলেছে অনেকটাই জমজমাট প্রচার। এখন পর্যন্ত নির্বাচনি আচরণবিধি লঙ্ঘন ও অপরাধ সংক্রান্ত ৬০০টি অভিযোগ এসেছে।

এবারের নির্বাচনে ভোটারদের কেন্দ্রে আসার নানা উদ্যোগ ও প্রার্থীদের সব ধরনের প্রচেষ্টার মধ্যে ভোট বর্জনে আহ্বান জানিয়ে বিএনপি ভোটারদের কেন্দ্রে আসার নিরুৎসাহিত করছে এবং হরতালও ডেকেছে।

এরমধ্যেই ভোটের প্রস্তুতি এগিয়ে নিয়ে গেছে নির্বাচন কমিশন। প্রচারের শেষ দুই দিনে এলাকায় এলাকায় পৌঁছে গেছে সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর অতিরিক্ত সদস্য। নির্বাহী হাকিম ও বিচারিক হাকিম রয়েছেন তিন সহ্রস্রাধিক।

এবার ভোটের দিন সকালে ব্যালট যাবে বেশির ভাগ কেন্দ্রে। শুধু দুর্গম কেন্দ্রে কঠোর নিরাপত্তায় যাবে শনিবার বিকালে। রোববার ভোর ৬টার মধ্যে পৌঁছবে বাকি ৩৯ হাজার ৬১ কেন্দ্রে।