ষষ্ঠ বাংলাদেশি হিসেবে ‘আমা দাবলাম’ জয় তৌকিরের

টুইট ডেস্ক: ষষ্ঠ বাংলাদেশি হিসেবে হিমালয়ের অন্যতম টেকনিক্যাল পর্বত ‘আমা দাবলাম’ চূড়া স্পর্শ করেছেন আহ্সানুজ্জামান তৌকির। গত ৪ নভেম্বর নেপালের স্থানীয় সময় দুপর ১টার দিকে ৬ হাজার ৮১২ মিটার উচ্চতার আমা দাবলাম চূড়া স্পর্শ করেন তিনি।

পর্বতারোহণ বিষয়ক অর্গানাইজেশন রোপ ফোরের পৃষ্ঠপোষকতা ও তত্বাবধানে এই অভিযানটি পরিচালিত হয়। তার এই অভিযানে সঙ্গী হিসাবে ছিলেন রোপফোরের আরেকজন তরুণ পর্বতারোহী আবরারুল আমিন অর্ণব।

চূড়ায় পৌঁছে তৌকির বলেন, ‘আমা দাবলাম’ আমার কাছে শুধু একটা পর্বত নয়- এটা ছিল নিজের সীমা পরীক্ষা করার যাত্রা। পৃথিবীর অন্যতম সুন্দর এই পর্বতের চূড়ায় দাঁড়িয়ে যখন লাল-সবুজ পতাকাটা তুলে ধরলাম, মনে হলো- এটি শুধু আমার সফলতা নয়, এটি বাংলাদেশের সকল তরুণের স্বপ্নের স্পন্দন।

গত ১২ অক্টোবর দুঃসাহসিক এই অভিযানের জন্য দেশ ছেড়েছিলেন তৌকির। এরপর প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি নিয়ে শুরু হয় মূল অভিযান। হিমালয়ের পাহাড়ি পথ ধরে ট্রেকিং করে তিনি বেস ক্যাম্পে পৌঁছান ২২ অক্টোবর। সেখানে পৌঁছে তিনি শুরু করেন উচ্চতার সাথে মানিয়ে নেওয়ায় কৌশল যা এক্লিমাটাইজ রোটেশন নামে পরিচিত। পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী তাদের ২৯ অক্টোবর সামিটের কথা থাকলেও ২৭ অক্টোবর থেকে হিমালয়ের তীব্র তুষারপাত শুরু হয়। এই আবহাওয়ার মধ্যেই তৌকির অবস্থান করেন আমা দাবলাম ক্যাম্প-১ এ যার উচ্চতা প্রায় ১৯ হাজার ফিট। ২৮ অক্টোবর আবহাওয়া আরো খারাপ হলে তাদের শেরপা লিডার সিদ্ধান্ত নেন বেস ক্যাম্পে ফিরে যাবার। তীব্র এই তুষার ঝড়ের মধ্যে লম্বা পথ পাড়ি দিয়ে তাদের দল বেস ক্যাম্পে পৌছায়।

বেস ক্যাম্পে পৌঁছে শুরু হয় নতুন দুশ্চিন্তা। খবর আসে তীব্র তুষারপাতের কারনে ফিক্সড রোপ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। আবহাওয়া ভালো হতে শুরু করলেও নতুন রুট ওপেন না করা পর্যন্ত সামিট পুশ সম্ভব নয়। এভাবেই কেটে যায় ৫ দিন তরপর রুট ওপেনের সুখবর আসে। নভেম্বরের ২ তারিখ শুরু হয় আবার সামিট বিট এই দিনে তৌকির পৌঁছে যায় ১৯ হাজার ফিট উচ্চতার ক্যাম্প-১ এ, এরপর ৩ তারিখ ইয়োলো টাওয়ার খ্যাত ১৯ হাজার ৬৮৫ ফিট উচ্চতার ক্যাম্প-২ পৌঁছে কিছু সময় বিশ্রাম নিয়ে শুরু করেন সামিট পুশ। প্রতিকূল আবহাওয়াকে উপেক্ষা করে ৪ নভেম্বর ২২ হাজার ৩৪৯ ফিট উচ্চতার আমা দাবালাম চূড়ায় পৌছান তিনি।

তরুণ এই পর্বতারোহী এবারের স্বপ্ন পৃথিবীর সর্বোচ্চ চূড়া ‘মাউন্ট এভারেস্ট’। এই লক্ষ নিয়েই তিনি এগোচ্ছে এখন প্রয়োজন সঠিক পৃষ্ঠপোষকতা। পৃষ্ঠপোষকতা পেলে ২০২৬ সালেই পৃথিবীর সর্বোচ্চ চূড়ায় আবারো উড়াতে চান বাংলাদেশের পতাকা।