১৮৯ কোটি টাকা আত্মসাৎ: গ্রেপ্তার ইসলামী ব্যাংকের সাবেক চেয়ারম্যান

অগ্রণী ব্যাংকের আছাদগঞ্জ শাখায় নিয়ম ভেঙে ঋণ নিয়ে ১৮৯ কোটি ৮০ লাখ টাকা আত্মসাৎ—দুদকের মামলায় গ্রেপ্তার ইসলামী ব্যাংকের সাবেক চেয়ারম্যান ওবায়েদ উল্লাহ আল মাসুদ।

টুইট ডেস্ক: ইসলামী ব্যাংকের সাবেক চেয়ারম্যান ও অগ্রণী ব্যাংকের সাবেক মহাব্যবস্থাপক (ঢাকা সার্কেল-২) ওবায়েদ উল্লাহ আল মাসুদকে ১৮৯ কোটি টাকার ঋণ কেলেঙ্কারি মামলায় গ্রেপ্তার করা হয়েছে। বুধবার (১৯ নভেম্বর) ঢাকার মহানগর দায়রা জজ মো. সাব্বির ফয়েজ তাকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন। আদালতের বেঞ্চ সহকারী মো. রিয়াজ হোসেন বিষয়টি নিশ্চিত করেন।

বুধবার সকালে ধানমণ্ডির নিজ বাসা থেকে দুদক তাকে গ্রেপ্তার করে। পরে বিকেলে আদালতে হাজির করা হলে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা দুদকের উপসহকারী পরিচালক মোহাম্মদ শাহ জালাল তাকে কারাগারে রাখার আবেদন করেন। আদালত আবেদন মঞ্জুর করেন। এ সময় আসামিপক্ষ থেকে কোনো জামিন আবেদন করা হয়নি।

গত ২৮ সেপ্টেম্বর দুদক অগ্রণী ব্যাংকের চট্টগ্রাম আছাদগঞ্জ শাখা থেকে নিয়ম ভেঙে ঋণ নেওয়ার মাধ্যমে ১৮৯ কোটি ৮০ লাখ টাকা আত্মসাতের অভিযোগে মোট ১১ জনের বিরুদ্ধে মামলা করে। অভিযোগে বলা হয়, মেসার্স মিজান ট্রেডার্সের নামে ছোলা ও গম আমদানির জন্য ঋণ মঞ্জুর করা হলেও প্রকৃত সুবিধাভোগী ছিল নুরজাহান গ্রুপ ও তাদের সহযোগী প্রতিষ্ঠান জাসমীর ভেজিটেবল ওয়েল লিমিটেড।

দুদক জানায়, বেতনভোগী কর্মকর্তা মিজানুর রহমানকে ব্যবহার করে প্রতারণার মাধ্যমে ঋণ অনুমোদন ও বিপুল অঙ্কের অর্থ উত্তোলন করা হয়। নুরজাহান গ্রুপের একটি বেনামি প্রতিষ্ঠানের নামে ব্যাংক হিসাব খোলা থেকে শুরু করে হিসাব পরিচালনার দায়িত্ব দেওয়া হয় জাসমীর ভেজিটেবল অয়েলের এমডি জহির আহমেদকে। পরে ঋণের শর্ত না মেনে পরিকল্পিতভাবে ব্যাংকের ৫১ কোটি টাকা, যা সুদে আসলে বর্তমানে ১৮৯.৮০ কোটি টাকায়, পরিণত হয়েছে—তা আত্মসাৎ করা হয়।

মামলায় অভিযুক্ত অন্য ১০ জন হলেন—অগ্রণী ব্যাংকের সাবেক এমডি ও সিইও সৈয়দ আব্দুল হামিদ, সাবেক প্রিন্সিপাল অফিসার ও মহাব্যবস্থাপক মোস্তাক আহমেদ, সাবেক উপমহাব্যবস্থাপক মো. আবুল হোসেন তালুকদার, সাবেক মহাব্যবস্থাপক মোহাম্মদ শামস উল ইসলাম, সাবেক উপমহাব্যবস্থাপক তাজরীনা ফেরদৌসী, সাবেক মহাব্যবস্থাপক মো. মোফাজ্জল হোসেন, মেসার্স মিজান ট্রেডার্সের মালিক মো. মিজানুর রহমান, জাসমীর ভেজিটেবল ওয়েল লিমিটেডের এমডি জহির আহমেদ, পরিচালক টিপু সুলতান এবং ফরহাদ মনোয়ার।

দুদকের তদন্তে উঠে এসেছে, পুরো ঘটনাটি ছিল একটি সু-পরিকল্পিত ঋণ প্রতারণা, যার মাধ্যমে সরকারি ব্যাংকের বিপুল অর্থ হাতিয়ে নেওয়া হয়।