ঢাকা-ওয়াশিংটনের ১ বিলিয়ন ডলার চুক্তি: ভারতের বাজারে ধস

ভারতের সয়ামিল রপ্তানিতে বড় ধাক্কা – দ্য হিন্দু
টুইট ডেস্ক: বাংলাদেশের তিন শীর্ষ এডিবল অয়েল রিফাইনারি – সিটি গ্রুপ, মেঘনা গ্রুপ ও ডেলটা অ্যাগ্রো – যুক্তরাষ্ট্রের ইউএস সয়াবিন এক্সপোর্ট কাউন্সিল (USSEC)-এর সঙ্গে ১ বিলিয়ন ডলার (প্রায় ১২ হাজার কোটি টাকা) মূল্যের সয়াবিন আমদানি চুক্তি সই করেছে। আগামী ১২ মাসে এই সয়াবিন বাংলাদেশে আসবে।
ঢাকার শেরাটন হোটেলে ৪ নভেম্বর সন্ধ্যায় অনুষ্ঠানে যুক্তরাষ্ট্রের চার্জ দ্য অ্যাফেয়ার্স ট্রেসি অ্যান জ্যাকবসন উপস্থিত ছিলেন। তিনি বলেন, “গত বছর ৭৭৯ মিলিয়ন ডলারের কৃষি বাণিজ্য হয়েছে। এই চুক্তির ফলে ২০২৫-এ তা ১ বিলিয়ন ছাড়াবে।”
বাংলাদেশে যুক্তরাষ্ট্রের সয়াবিনে বিপুল লেনদেন: তিন শীর্ষ রিফাইনারি ১ বিলিয়ন ডলারের চুক্তি সই
বাংলাদেশের তিন শীর্ষ এডিবল অয়েল রিফাইনারি – সিটি গ্রুপ, মেঘনা গ্রুপ ও ডেলটা অ্যাগ্রো – যুক্তরাষ্ট্রের US Soybean Export Council (USSEC)-এর সঙ্গে ১ বিলিয়ন ডলার মূল্যের সয়াবিন আমদানি চুক্তি সম্পন্ন করেছে।
চুক্তি অনুযায়ী, আগামী ১২ মাসের মধ্যে ২৫-৩০ লাখ টন সয়াবিন বাংলাদেশে পৌঁছাবে। প্রতি টন মূল্য ধরা হয়েছে ৩৫০-৪০০ ডলার, যা ভারতের সয়ামিলের তুলনায় উল্লেখযোগ্যভাবে সস্তা।
চুক্তির আনুষ্ঠানিক অনুষ্ঠান ৪ নভেম্বর ঢাকার শেরাটন হোটেলে অনুষ্ঠিত হয়। অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন যুক্তরাষ্ট্রের চার্জ দ্য অ্যাফেয়ার্স ট্রেসি অ্যান জ্যাকবসন, যিনি বলেন,
“গত বছর বাংলাদেশের সঙ্গে কৃষি বাণিজ্য ৭৭৯ মিলিয়ন ডলারে সীমাবদ্ধ ছিল। এবার এই চুক্তির মাধ্যমে এটি ১ বিলিয়ন ডলার ছাড়াবে।”
ভারতীয় রপ্তানিতে ধস
দ্য হিন্দু বিজনেসলাইন-এর প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এই চুক্তির ফলে ভারত থেকে সয়ামিল আমদানি ২০২৫-২৬ সালে আরও কমতে পারে।
২০২৩-২৪ সালে ভারত থেকে সয়ামিল এসেছে ৩.০২ লাখ টন।
২০২৪-২৫ সালে এসেছে মাত্র ১.৬৩ লাখ টন, যা ৪৬% কম।
সোপা নির্বাহী পরিচালক ডি.এন. পাঠক বলেন, “বাংলাদেশ যুক্তরাষ্ট্র থেকে সস্তায় সয়াবিন কিনছে। এর ফলে ভারতীয় সয়ামিলের বাজারে প্রভাব পড়বে। আমাদের লক্ষ্য এখন ভারত থেকে ক্রয় আরও কমানো।”
অর্থনৈতিক প্রভাব
যুক্তরাষ্ট্রের সয়াবিন প্রতি টন ৩০-৪০ ডলার সস্তা, যেখানে ভারতের সয়ামিলে রয়েছে ১৩% ডিউটি ও লজিস্টিক খরচ।
খাদ্যতেলের দাম বাংলাদেশে ৫-৭% কমার সম্ভাবনা। পোলট্রি ও মাছের ফিড খরচ কমার ফলে মাংস, ডিম ও মাছের দামও সস্তা হবে।
বাংলাদেশ-যুক্তরাষ্ট্র কূটনৈতিক ও বাণিজ্যিক সম্পর্ক মজবুত হবে, ভারতের একক প্রভাব কমবে।
বাংলাদেশের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের সাম্প্রতিক বাণিজ্য ২০২৪ সালে ৯ বিলিয়ন ডলার অতিক্রম করেছে। বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, এই চুক্তি ভারত-যুক্তরাষ্ট্র-বাংলাদেশ বাণিজ্য সম্পর্ককে নতুন মাত্রা দেবে।
মাহবুব গ্রুপ ও কেজিএস গ্রুপের সঙ্গে পৃথক Letter of Intent (LoI) সই হয়েছে। এতে যুক্তরাষ্ট্রের সয়াবিন রপ্তানি বাংলাদেশে তিনগুণ বাড়ানোর সম্ভাবনা তৈরি হবে।
বাংলাদেশ যুক্তরাষ্ট্রের সয়াবিন আমদানি বাড়িয়ে খাদ্য ও তেল শিল্পের খরচ কমাতে সক্ষম হচ্ছে। ভারত থেকে নির্ভরশীলতা কমানোর মাধ্যমে দেশের খাদ্য নিরাপত্তা ও বাজার স্থিতিশীলতার দিকে বড় পদক্ষেপ নেওয়া হলো।






