দলগুলোর কার্যকর অঙ্গীকার আদায়ে সরকার-কমিশন অনেকটাই ব্যর্থ বলছেন বিশ্লেষকরা
টুইট ডেস্ক: অনিশ্চয়তা, উৎকন্ঠা, হামলা ও সংঘর্ষের পথ পেরিয়ে জুলাই সনদ স্বাক্ষরিত হয়েছে। তবে সংলাপে অংশ নেয়া ৩৩ দলের মধ্যে ২৪টি দল সনদে স্বাক্ষর করেছে। সনদে বাস্তবায়নের আইনী ভিত্তি না থাকায় গণঅভুত্থানের নেতৃত্বদানকারী ছাত্র নেতাদের দল এনসিপি অনুষ্ঠানে যায়নি। আর স্বাধীনতা ঘোষণাপত্র সনদে না থাকায় বামপন্থী চার দল অনুষ্ঠান বর্জন করে। আবার অনুষ্ঠানে থাকলেও গণফোরাম সনদে স্বাক্ষর করেনি।
এমন বিভেদের মধ্যে সনদ স্বাক্ষরিত হলেও প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস এটিকে বাংলাদেশের নবজন্ম হিসেবে দেখছেন। যদিও এই সনদ নতুন বাংলাদেশ গড়ার কার্যক্রমকে কতটা এগিয়ে নেবে তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন বিশেষজ্ঞরা।বাংলাদেশ ভ্রমণ প্যাকেজ
সংবিধান বিশেষজ্ঞ ড. শাহদীন মালিক বলেছেন, ভালো কথা লিখলেই যদি সব ঠিক হয়ে যেত তাহলে বিশ্বে কোনো খারাপ দেশ থাকতো না। সোভিয়েত ইউনিয়ন ভেঙে যাওয়ার পর রাশিয়ার জন্য খুব সুন্দর সংবিধান লেখা হয়েছিল। কিন্তু সেই সংবিধানের ফলাফল ভ্লাদিমির পুতিন।
খসড়া ও স্বাক্ষরিত সনদে একই বিষয়ে দুই অবস্থানের সমালোচনা করেছেন বিশেষজ্ঞরা। একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে অর্জিত স্বাধীনতার ঘোষণাপত্র প্রথমে না রাখা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন তারা।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উন্নয়ন অধ্যয়ন বিভাগের অধ্যাপক আসিফ মোহাম্মদ শাহান বলেছেন, স্বাধীনতার ঘোষণাপত্রে সাম্য, সামাজিক ন্যায়বিচার ও মানবিক মর্যাদার ভিত্তিতে রাষ্ট্র গঠনের কথা বলা হয়েছে। এটি জুলাই সনদেও রয়েছে। কিন্তু আবার ১৫০ এর ২ নং অনুচ্ছেদে মুজিবনগর ঘোষণাপত্র বাদ দেয়ার কথা বলা হচ্ছে। ফলে এই দুইটি বিষয় পরস্পরবিরোধী হয়ে যাচ্ছে। এছাড়া, দলগুলোর কার্যকর অঙ্গীকার আদায়ে অন্তর্বর্তী সরকার এবং ঐক্যমত কমিশন অনেকটাই ব্যর্থ বলেও মন্তব্য করেছেন তিনি।
তবে সমালোচনা সত্ত্বেও শীর্ষ দলগুলোর এক হয়ে সনদ স্বাক্ষরকে ইতিবাচক হলেও সবদলকে সনদ বাস্তবায়নের প্রক্রিয়া নিয়ে যৌক্তিকভাবে ঐক্যমতে আসতে হবে বলে জানান বিশ্লেষকরা।
ড. শাহদীন মালিক বলেছেন, জুলাই সনদ সংবিধানের ওপরে হলে সংবিধান তার জায়গায় থাকবে না। একাত্তর ও চব্বিশকে মুখোমুখি দাড় করালে দেশে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি তৈরি হবে।
আসিফ মোহাম্মদ শাহান বলেছেন, আগামী নির্বাচিত সংসদের দুইটি ভূমিকা থাকতে হবে। তা হচ্ছে প্রথম ৬০-৯০ দিন সংসদ গণপরিষদ ও সরকারের ভূমিকা পালন করবে। আগামী সংসদ সাংবিধানিক ক্ষমতা প্রয়োগের মাধ্যমে বিষয়গুলোকে মেনে নিলে আদালতে তা নিয়ে প্রশ্ন তোলা কঠিন হবে।
গণভোট প্রসঙ্গে শাহদীন মালিক বলেন, সারা বিশ্বে দ্বিতীয় ধাপে গণভোট হয়। প্রথমে নির্বাচিত প্রতিনিধিরা ও এরপর জনগণ ভোট দিয়ে থাকেন। এখন প্রচলিত রীতি-নীতির বাইরে গিয়ে উদ্ভট আইনি ও রাজনৈতিক ব্যবস্থা করলে তার খেসারত আরও ২০ থেকে ২৫ বছর ধরে দিতে হবে।