প্রথম আলোর মনগড়া সংবাদ ও সেনা হেফাজতের বিভ্রান্তিকর তথ্য
প্রথম আলো প্রকাশিত প্রতিবেদনকে সমালোচকরা মনগড়া ও প্রমাণহীন বলছেন।
টুইট প্রতিবেদক: প্রথম আলোতে ১২-১৩ অক্টোবর প্রকাশিত কয়েকটি প্রতিবেদন ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে শেয়ারকৃত ভিডিও-অ্যাকাউন্টের পোস্টে তীব্র সমালোচনা লক্ষ্য করা গেছে।
বিশেষ করে, প্রথম আলোকে ‘মনগড়া সংবাদ’ ছাপানোর মাধ্যমে সেনাবাহিনীকে অপমান করার চেষ্টা করা হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
প্রতিবেদনের মূল বিষয়
প্রথম আলো প্রকাশিত ‘কর্মকর্তাদের সেনা হেফাজতে রেখে ট্রাইব্যুনালে আনা-নেওয়ার চিন্তা’ শিরোনামের প্রতিবেদনে বলা হয়েছিল।
আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের (ICT) মানবতাবিরোধী মামলায় গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারির পর ১৫ জন সেনা কর্মকর্তাকে সেনাবাহিনী বিচার শেষ না হওয়া পর্যন্ত নিজস্ব হেফাজতে রাখবে এবং নির্দিষ্ট তারিখে ট্রাইব্যুনালে হাজির করবে। প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছিল যে সেনাবাহিনীর ‘একটি ভাবনা’ রয়েছে, যা কোনো অফিসিয়াল সূত্র দ্বারা প্রমাণিত নয়।
সমালোচনার কারণ
সেনাবাহিনী এবং বিভিন্ন মিডিয়া বিশ্লেষক প্রথম আলোর প্রতিবেদনকে মনগড়া ও প্রমাণহীন হিসেবে অভিহিত করেছেন। সেনাবাহিনীর ১১ অক্টোবরের সংবাদ সম্মেলনে মেজর জেনারেল হাকিমুজ্জামান কেবল হেফাজতের তথ্য দিয়েছেন, ‘ট্রাইব্যুনালে আনা-নেওয়ার চিন্তা’ বা কোনো পরিকল্পনার কথা উল্লেখ করেননি।
সমালোচকদের বক্তব্য
BanglaVision News: ইউটিউবে বুলেটিনে বলা হয়েছে, “গ্রেফতারের আদেশ পাওয়াদের সেনা হেফাজতে রেখে কোর্টে আনা-নেওয়ার মনগড়া দাবি তৈরি করা হয়েছে। প্রথম আলোর প্রতিবেদন বিভ্রান্তিকর।”
The Daily Star ইউটিউব চ্যানেল: “প্রথম আলোর মনগড়া সংবাদ সেনাবাহিনীকে অপমান করছে। কোনো প্রমাণ ছাড়া ‘চিন্তা’ বলে গুজব ছড়ানো হচ্ছে, যা জাতীয় নিরাপত্তার জন্য হুমকি।”
Bangladesh Times ফেসবুক গ্রুপ: “প্রথম আলো অফিসের সামনে সেনা-পুলিশ মোতায়েন হয়েছে। প্রতিবেদনটি প্রমাণহীন এবং দেশবিরোধী।”
রাজনৈতিক নেতারা (বিএনপি সমর্থক): “প্রথম আলো ভারতীয় স্বার্থ রক্ষায় সেনাবাহিনীকে লক্ষ্য করে মনগড়া সংবাদ প্রচার করছে।”
সাধারণ নাগরিক ও সেনা সমর্থক মন্তব্য: “প্রথম আলোর মনগড়া তথ্য জনগণকে বিভ্রান্ত করছে, সেনাবাহিনীকে অপমান করছে।”
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ও ভিডিও বিশ্লেষণ
১৩ অক্টোবর @revolt_71 হ্যান্ডেলের এক্স (পূর্বের টুইটার) পোস্টে প্রথম আলো ও ডেইলি স্টারকে ‘ভারতের দালাল’ হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে। পোস্টে বলা হয়েছে:
“শয়তানি করা ছাড়া প্রথম আলোর ভাত হজম হবে না। ভারতের দালালি করা ছাড়া এরা থাকতে পারবে না। প্রথম আলো এবং ডেইলি স্টারকে সাইজ করতেই হবে। আমাদের অর্জিত বিপ্লবকে প্রথম আলো ও ডেইলি স্টার ভারতের কাছে বিক্রি করতে প্রস্তুত।”
পোস্টের সঙ্গে একটি ১০ মিনিট ৪ সেকেন্ডের ভিডিও সংযুক্ত ছিল, যেখানে একজন বয়স্ক বাঙালি ব্যক্তি নীল পর্দার সামনে বসে হাতে ইশারা করে প্রথম আলো ও ডেইলি স্টারের বিরুদ্ধে যুক্তি উপস্থাপন করেছেন। ভিডিওটিতে কোনো সাবটাইটেল নেই, কেবল বাংলায় কথোপকথন চলছে।
২০২৪ সালের জুলাই-অগাস্টের ছাত্র-জনতা আন্দোলনের পর থেকেই মিডিয়ার ওপর বিতর্ক তৈরি হয়েছে।
নভেম্বর ২০২৪-এ শিক্ষার্থীরা বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রথম আলো ও ডেইলি স্টারের প্রতিবেদনকে ভুল তথ্য এবং রাজনৈতিক প্রভাবের জন্য বয়কট করেছে।
ঢাকা, রাজশাহী ও বগুড়ার অফিসে বিক্ষোভ এবং কিছু হামলার ঘটনা ঘটে।
প্রথম আলোর এই প্রতিবেদনটি মনগড়া ও প্রমাণহীন হিসেবে সমালোচিত। সেনাবাহিনী ও সামাজিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন, এটি জনগণকে বিভ্রান্ত করার উদ্দেশ্যপ্রণোদিত প্রচেষ্টা এবং জাতীয় ঐক্য ক্ষুণ্ণ করছে।
মিডিয়া-সামরিক সম্পর্ক ও গণমাধ্যমের নিরপেক্ষতা বিষয়েও প্রশ্ন উত্থাপন করেছে।