বাংলাদেশ-তুরস্ক যৌথ উদ্যোগে তৈরি হবে জ্যামার সিস্টেম ও সামরিক যন্ত্রাংশ

  • বাংলাদেশ-তুরস্ক যৌথ উদ্যোগে সামরিক যোগাযোগ সরঞ্জাম উৎপাদনের নতুন প্রস্তাব।
  • জ্যামার সিস্টেম ও নির্ভুল যন্ত্রাংশে প্রযুক্তি হস্তান্তর ও প্রশিক্ষণ অন্তর্ভুক্ত।

টুইট ডেস্ক: বাংলাদেশ ও তুরস্কের মধ্যে প্রতিরক্ষা সহযোগিতার নতুন অধ্যায় শুরু হচ্ছে। বাংলাদেশ সরকার তুর্কি সামরিক যোগাযোগ সরঞ্জাম দেশে যৌথভাবে উৎপাদনের একটি প্রস্তাব দিয়েছে। প্রস্তাব অনুযায়ী, উভয় দেশের অংশীদারিত্বে জ্যামার সিস্টেম, উচ্চ-নির্ভুলতার যন্ত্রাংশ এবং ইলেকট্রনিক ওয়ারফেয়ার (EW) প্রযুক্তি উৎপাদনের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।

প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের সূত্র জানিয়েছে, এই যৌথ উদ্যোগের লক্ষ্য বাংলাদেশের প্রতিরক্ষা শিল্পকে আত্মনির্ভরশীল করা। প্রকল্পটি বাংলাদেশ অর্ডন্যান্স ফ্যাক্টরিজ (বিওএফ) এবং তুরস্কের শীর্ষ প্রতিরক্ষা কোম্পানিগুলোর মাধ্যমে বাস্তবায়িত হবে। ইতিমধ্যে চট্টগ্রাম ও নারায়ণগঞ্জে যৌথ উৎপাদন কেন্দ্র স্থাপনের প্রস্তুতি চলছে, যেখানে অস্ত্র, গোলাবারুদ ও সামরিক যান উৎপাদিত হচ্ছে।

নতুন প্রস্তাবে যোগাযোগ সরঞ্জামের পাশাপাশি জ্যামার ও উচ্চ-নির্ভুলতার সামরিক যন্ত্রাংশ অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে, যা তুরস্কের আধুনিক প্রযুক্তি ও বাংলাদেশের দক্ষ শ্রমশক্তির সমন্বয়ে তৈরি হবে।

তুরস্কের রাষ্ট্রদূত মুস্তফা ওসমান তুরান বলেছেন, “এই সহযোগিতা শুধু বিক্রয় নয়, বরং প্রযুক্তি হস্তান্তর ও দীর্ঘমেয়াদী পার্টনারশিপের ভিত্তিতে গড়ে উঠবে।” তিনি জানান, তুর্কি কোম্পানিগুলো বাংলাদেশে মিসাইল, যোগাযোগ সরঞ্জাম ও ইলেকট্রনিক জ্যামার প্রযুক্তি স্থানান্তরে আগ্রহী।

বিশেষজ্ঞদের মতে, এই প্রকল্প বাংলাদেশের সামরিক সক্ষমতা ও আঞ্চলিক অবস্থানকে আরও শক্তিশালী করবে। গ্লোবাল ফায়ারপাওয়ার ইনডেক্সে ২০২৪ সালে বাংলাদেশের অবস্থান ছিল ৩৭তম, যা পূর্বের ৪০তম স্থান থেকে উন্নতি।

প্রতিরক্ষা বিশ্লেষক ব্রিগেডিয়ার (অব.) এম. সাখাওয়াত হোসেন বলেন, “তুর্কির সঙ্গে এই যৌথ উদ্যোগ বাংলাদেশের সামরিক আধুনিকীকরণের মাইলফলক। জ্যামার সিস্টেম ও নির্ভুল যন্ত্রাংশের যৌথ উৎপাদন সেনাবাহিনীর যোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ ক্ষমতা বৃদ্ধি করবে।”

আসন্ন উচ্চপর্যায়ের বৈঠকে এই প্রস্তাবের চূড়ান্ত অনুমোদন দেওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। সফল হলে এটি দক্ষিণ এশিয়ায় তুরস্কের প্রভাব বৃদ্ধি এবং বাংলাদেশকে ভবিষ্যতের প্রতিরক্ষা রপ্তানিকারক দেশ হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করতে সহায়তা করবে।