সৌদি–মার্কিন ১৪২ বিলিয়ন ডলারের চুক্তিতে পাকিস্তানি পাইলটরা প্রশিক্ষক
সৌদি আরবের সামরিক আধুনিকীকরণ: ১৪২ বিলিয়ন ডলারের মার্কিন চুক্তিতে পাকিস্তানি পাইলটদের প্রশিক্ষণ, যুদ্ধের প্রস্তুতি?
আন্তর্জাতিক ডেস্ক: সৌদি আরব এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে ১৪২ বিলিয়ন ডলারের ঐতিহাসিক অস্ত্র চুক্তির আওতায় সৌদি বিমানবাহিনী ব্যাপক আধুনিকীকরণের দিকে এগোচ্ছে। এই চুক্তির কাঠামো অনুযায়ী পাকিস্তানি পাইলটরা সৌদি এফ-৩৫, এমকিউ-৯ রিপার, রাফাল এবং ইউরোফাইটার টাইফুনের মতো উন্নত অস্ত্রে প্রশিক্ষণ দেবেন বলে খবর প্রকাশিত হয়েছে।
যদিও চুক্তির মূল অংশ মে ২০২৫-এ ঘোষণা করা হয়, পাকিস্তানি পাইলটদের প্রশিক্ষণের অংশটি নতুন এবং বিশেষভাবে মধ্যপ্রাচ্যের উত্তেজনাপূর্ণ পরিস্থিতিতে নতুন মাত্রা যোগ করেছে।
মে ২০২৫-এ মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের রিয়াদ সফরের সময় এই চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। হোয়াইট হাউস এটি “ইতিহাসের সবচেয়ে বড় প্রতিরক্ষা বিক্রয় চুক্তি” হিসেবে অভিহিত করেছে। চুক্তির লক্ষ্য সৌদি বিমানবাহিনীকে আধুনিকীকরণ করা এবং ইয়েমেনের হুথি হামলা ও ইরানী প্রক্সি গ্রুপের বিরুদ্ধে প্রতিরক্ষা ক্ষমতা বৃদ্ধি করা। লকহিড মার্টিন, আরটিএক্স, বোয়িং, নর্থ্রপ গ্রুম্যান ও জেনারেল অ্যাটমিক্সের মতো কোম্পানিগুলো চুক্তিতে সরাসরি যুক্ত।
প্রধান অস্ত্রসমূহ ও গুরুত্বপূর্ণ সংযোজন
এমকিউ-৯বি সিগার্ডিয়ান ড্রোন: ২০ বিলিয়ন ডলারের চুক্তিতে ১০০-এর বেশি ড্রোন, যা নজরদারি, গোয়েন্দা সংগ্রহ ও নির্ভুল আঘাতের জন্য ব্যবহার হবে।
প্যাট্রিয়ট মিসাইল সিস্টেম: হুথি হামলা থেকে সুরক্ষা প্রদান করবে। নতুন সংস্করণ আগের তুলনায় আরও কার্যকর।
এফ-১৫ এবং ইউরোফাইটার টাইফুন আপগ্রেড: বিদ্যমান ফ্লিটকে এফ-১৫ইএক্স স্ট্যান্ডার্ডে উন্নীত করা হবে, যাতে পেলোড এবং নেটওয়ার্ক ক্ষমতা বাড়ানো যায়।
এআইএম-১২০সি-৮ অ্যামরাম মিসাইল: ৩.৫ বিলিয়ন ডলারে ১০০০টি মিসাইল, যা দূরপাল্লার এয়ার-টু-এয়ার যুদ্ধের জন্য ব্যবহৃত হবে।
যদিও এফ-৩৫-এর সরাসরি বিক্রয় অসম্ভব, কারণ ইসরায়েলের কোয়ালিটেটিভ মিলিটারি এজ (QME) বজায় রাখতে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র সৌদিকে এফ-৩৫ বিক্রি করতে পারছে না। রাফালের ক্ষেত্রে ফ্রান্সের সঙ্গে আলাদা আলোচনার সম্ভাবনা রয়েছে।
পাকিস্তানি পাইলটদের ভূমিকা
পোস্টে দাবি করা হয়েছে যে পাকিস্তানি পাইলটরা এই অস্ত্রগুলোতে সৌদি সেনাদের প্রশিক্ষণ দেবেন। এটি পাকিস্তান ও সৌদি আরবের দীর্ঘমেয়াদি সামরিক সহযোগিতার সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ। ২০২১ সালে যৌথ মহড়ার অভিজ্ঞতা এবং পাকিস্তানি পাইলটদের এফ-১৬ ও জে-এফ-১৭ অভিজ্ঞতা এই প্রশিক্ষণে সহায়ক হবে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এটি সৌদির জন্য “রেন্টেড সোলজার” কৌশল, যাতে তারা সরাসরি যুদ্ধে প্রবেশ না করেও শক্তি প্রদর্শন করতে পারে।
ভূ-রাজনৈতিক প্রভাব
পাকিস্তানি পাইলটদের প্রশিক্ষণ এবং উন্নত অস্ত্রের সংযোজন সৌদি আরবকে ইসরায়েল, হুথি এবং অন্যান্য সম্ভাব্য শত্রুর বিরুদ্ধে শক্তি প্রদর্শনের সুযোগ দিচ্ছে। যদিও কিছু তথ্য সোশ্যাল মিডিয়ায় বিতর্কিত, বিশেষজ্ঞরা মনে করেন এটি মধ্যপ্রাচ্যে শক্তির ভারসাম্য এবং প্রতিরক্ষা কৌশলকে নতুনভাবে প্রভাবিত করতে পারে।
১৪২ বিলিয়ন ডলারের মার্কিন চুক্তি সৌদি আরবের সামরিক আধুনিকীকরণে এক নতুন অধ্যায়ের সূচনা করছে। উন্নত যুদ্ধবিমান, ড্রোন, মিসাইল সিস্টেম এবং পাকিস্তানি প্রশিক্ষণের মাধ্যমে সৌদি বিমানবাহিনী আরও সক্ষম হয়ে উঠছে, যা মধ্যপ্রাচ্যের উত্তেজনাপূর্ণ নিরাপত্তা পরিস্থিতিতে বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ।