ইন্দোনেশিয়া ৪৫০ মিলিয়ন ডলারে ইতালির অবসরপ্রাপ্ত এয়ারক্রাফট ক্যারিয়ার কিনছে
ইতালির এয়ারক্রাফট ক্যারিয়ার ‘গারিবাল্ডি’ কিনছে: হেলিকপ্টার ও তুর্কি ড্রোনের জন্য রিফিট পরিকল্পনা
বিশ্ব ডেস্ক: ইন্দোনেশিয়া দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় এয়ারক্রাফট ক্যারিয়ার-অপারেটর দেশগুলোর তালিকায় যোগ দিতে যাচ্ছে। দেশটির জাতীয় উন্নয়ন পরিকল্পনা মন্ত্রণালয় (বাপেনাস) ইতালির অবসরপ্রাপ্ত এয়ারক্রাফট ক্যারিয়ার আইটিএস গুজেপ্পে গারিবাল্ডি (C-551) কেনার জন্য ৪৫০ মিলিয়ন ডলারের বৈদেশিক ঋণ অনুমোদন করেছে।
জাহাজটি হেলিকপ্টার এবং তুর্কি বায়রাক্তার টিবি৩ নৌ-ড্রোন বহনের জন্য রিফিট করা হবে, যা ইন্দোনেশিয়ান নৌবাহিনীর অপারেশনাল ক্ষমতা বাড়াবে এবং ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলে নতুন শক্তির ভারসাম্য তৈরি করবে।
ইতালির গারিবাল্ডির ইতিহাস
‘গারিবাল্ডি’ ১৯৮৫ সালে ইতালির ফিনকান্তিয়েরি শিপইয়ার্ডে নির্মিত হয় এবং এটি ইতালির প্রথম ফুল-ডেক এয়ারক্রাফট ক্যারিয়ার। ১৪,১০০ টনের এই জাহাজ মূলত অ্যান্টি-সাবমেরিন ওয়ারফেয়ার (ASW) ক্যারিয়ার হিসেবে ব্যবহৃত হয় এবং এভি-৮বি হ্যারিয়ার II জেটসহ বিভিন্ন হেলিকপ্টার পরিচালনা করেছে। ২০২৪ সালের অক্টোবরে অবসর নেয়ার পর থেকে এটি তারান্তোর ডকে সংরক্ষিত রয়েছে। ইতালীয় শিপবিল্ডার ফিনকান্তিয়েরি জানিয়েছে, সঠিক রিফিটের পরও জাহাজটির আরও ১৫-২০ বছরের সার্ভিস লাইফ বাকি রয়েছে।
অনুমোদিত ঋণ ও রিফিট পরিকল্পনা
৪৫০ মিলিয়ন ডলারের এই ঋণটি মূলত গারিবাল্ডি অধিগ্রহণ, বিশেষ সরঞ্জাম, অবকাঠামো এবং আধুনিকীকরণ কাজে ব্যয় হবে। রিফিট পরিকল্পনায় চারটি খাতকে গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে: স্ট্রাকচারাল পরিবর্তন, সেন্সর আপগ্রেড, কমান্ড মডিউল উন্নয়ন এবং ড্রোন অপারেশনের সক্ষমতা।
এছাড়া নতুন হেলিকপ্টার কেনার জন্যও এই বাজেটের একটি অংশ বরাদ্দ থাকবে। ইন্দোনেশিয়া ইতোমধ্যেই তুর্কি কোম্পানি বায়কার টেক-এর সঙ্গে ৬০টি বায়রাক্তার টিবি৩ ড্রোন কেনার প্রাথমিক চুক্তি করেছে, যার মধ্যে নৌ-ভার্সনও রয়েছে।
সম্ভাব্য কৌশলগত প্রভাব
গারিবাল্ডি অধিগ্রহণের মাধ্যমে ইন্দোনেশিয়া হবে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার প্রথম এয়ারক্রাফট ক্যারিয়ার পরিচালনাকারী দেশ। এটি দেশের মেরিটাইম সার্ভেইল্যান্স, প্রতিরোধ ক্ষমতা এবং ফোর্স প্রোজেকশন বহুগুণ বাড়াবে। বিশেষজ্ঞদের মতে, নতুন ক্যারিয়ার নির্মাণের তুলনায় অবসরপ্রাপ্ত জাহাজটি কিনে রিফিট করা অনেক সাশ্রয়ী এবং দ্রুত ক্ষমতা বাড়ানোর একটি কার্যকর পদক্ষেপ।
এই সিদ্ধান্ত ইন্দোনেশিয়াকে শুধু আঞ্চলিক শক্তি হিসেবে নয়, বরং চীন ও অন্যান্য প্রতিদ্বন্দ্বী দেশের মোকাবেলায় এক নতুন কৌশলগত অবস্থানে দাঁড় করাবে। পাশাপাশি ইতালি, তুরস্ক ও ইন্দোনেশিয়ার মধ্যে প্রতিরক্ষা সহযোগিতাও নতুন উচ্চতায় পৌঁছাবে।