বান্দরবানে সেতুহীন জীবনে বন্দি কাশেমপাড়া, ঝুঁকিতে শিশু-কিশোররা

বান্দরবানে সেতু নির্মাণে ধীরগতি, ভোগান্তিতে হাজারো মানুষ।

নিজস্ব প্রতি‌নি‌ধি: বান্দরবান পৌরসভার ৯নং ওয়ার্ডের কাশেমপাড়া এলাকায় সেতু ভেঙ্গে নতুন সেতু নির্মাণের উদ্যোগ শুরু হলেও কাজ থমকে যাওয়ায় মানবিক বিপর্যয়ের মধ্যে পড়েছেন এলাকার প্রায় ৬ হাজার মানুষ। বিশেষ করে বিদ্যালয়গামী শিশু-কিশোরদের জীবন প্রতিদিনই ঝুঁকির মুখে পড়ছে।

২০২৪ সালের জুলাই মাসে পুরাতন সেতুটি ভেঙে নতুন সেতুর কাজ হাতে নেয় পৌরসভা। কিন্তু বর্ষার অতিবৃষ্টিতে কাজ বন্ধ করে ঠিকাদার অন্যত্র চলে যায়। ফলে প্রবেশপথে একমাত্র সেতু হারানো এই এলাকার মানুষকে অস্থায়ীভাবে কাঠ ও বাঁশ দিয়ে তৈরি সাঁকোর ওপর ভরসা রাখতে হচ্ছে। প্রতিদিন শিক্ষক-শিক্ষার্থীসহ সাধারণ মানুষ এই ঝুঁকিপূর্ণ সাঁকোতে দুর্ঘটনার শিকার হচ্ছেন।

কাশেমপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক উ সিং প্রু মারমা জানান, “আমাদের শতাধিক শিক্ষার্থী প্রতিদিন এই সাঁকো পার হয়ে স্কুলে আসে। জীবনের ঝুঁকি নিয়ে ক্লাসে আসা শিশুদের বেদনা আমাদের হৃদয়কে কাঁদায়।”

স্থানীয় বাসিন্দা আবু তৈয়ব ও আবুল কালাম জানান, জনসাধারণের সুবিধার্থে নতুন সেতু নির্মাণের উদ্যোগ প্রশংসনীয় হলেও পুরাতন সেতু ভেঙ্গে কাজ বন্ধ করে দেওয়ায় মানুষ এখন চরম দুর্ভোগে আছে। বিশেষ করে শিশুরা প্রতিদিন স্কুলে আসতে গিয়ে নানা দুর্ঘটনার শিকার হচ্ছে, যা একটি বড় মানবিক সংকটে পরিণত হয়েছে।

নির্মাণ কাজের মালামাল বিদ্যালয়ের মাঠে ফেলে রাখায় শিক্ষা কার্যক্রমও বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। শিক্ষকরা বলছেন, শিশুদের জীবনের ঝুঁকি ও পড়াশোনার ক্ষতি—উভয় সমস্যাই এখন তাদের স্থায়ী যন্ত্রণা হয়ে দাঁড়িয়েছে।

প্রসঙ্গত, এশিয়ান ডেভেলপমেন্ট ব্যাংকের অর্থায়নে প্রায় ২৩ লাখ টাকায় মায়াধন কনস্ট্রাকশন নামের একটি প্রতিষ্ঠানকে সেতুটি নির্মাণের দায়িত্ব দেওয়া হলেও সময়সীমা শেষ হয়ে গেলেও কাজ সম্পন্ন হয়নি।

পৌরসভার প্রশাসক এস. এম. মনজুরুল হক জানান, বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করা হচ্ছে। ইতোমধ্যে প্রকৌশল শাখার টিম ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। আশা করা যাচ্ছে দ্রুতই কাজ শুরু হবে এবং শিশু-কিশোরসহ এলাকার মানুষের ভোগান্তি দূর হবে।