হামাসের আহ্বান: প্রতি সপ্তাহে ৩ দিন আন্তর্জাতিক বিক্ষোভ

হামাসের বৈশ্বিক বিক্ষোভের আহ্বান: প্রতি সপ্তাহে দূতাবাসগুলোর সামনে বিক্ষোভের ডাক।

টুইট ডেস্ক: ফিলিস্তিনের ইসলামপন্থী সংগঠন হামাস একটি বৈশ্বিক আন্দোলনের ডাক দিয়েছে। বিশ্বের বিভিন্ন দেশের মানুষ প্রতি শুক্রবার, শনিবার ও রবিবার যুক্তরাষ্ট্র, ইসরায়েল ও তাদের মিত্র দেশগুলোর দূতাবাস, কনস্যুলেট ও কূটনৈতিক মিশনগুলোর সামনে বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করে।

হামাস জানিয়েছে, যতদিন না ইসরায়েল গাজা উপত্যকায় “সামরিক আগ্রাসন” বন্ধ করছে, ততদিন এই কর্মসূচি অব্যাহত থাকবে।

হামাসের আহ্বান কী বলছে:

হামাস এক বিবৃতিতে বলেছে, “আমরা বিশ্বের সব সম্মানিত নাগরিক ও সংগঠনকে আহ্বান জানাচ্ছি—ইসরায়েলের নৃশংসতা ও জাতিগত নিধনের বিরুদ্ধে অবস্থান নিতে। আমরা চাই তারা যেন প্রতি সপ্তাহের শুক্র, শনি ও রবিবার যুক্তরাষ্ট্র, ইসরায়েল ও তাদের মিত্র দেশগুলোর দূতাবাসগুলোর সামনে শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভ করে।”

এই আহ্বানটি দেওয়া হয় এমন সময়, যখন গাজা উপত্যকা এখনও ইসরায়েলি বিমান ও স্থল অভিযানে ধ্বংসপ্রাপ্ত, এবং মানবিক পরিস্থিতি প্রতিনিয়ত অবনতির দিকে যাচ্ছে।

২০২৫ সালের মে মাসে শুরু হওয়া ইসরায়েলি অভিযানে গাজা ইতোমধ্যেই ভয়াবহ ধ্বংসের সম্মুখীন হয়েছে। হামাসের দাবি অনুযায়ী, এখন পর্যন্ত প্রায় ৩৫,০০০ ফিলিস্তিনি নিহত এবং ৭৫,০০০-এর বেশি মানুষ আহত হয়েছে। বহু হাসপাতাল, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এবং ধর্মীয় স্থাপনাও ধ্বংস হয়েছে।

ইসরায়েল বলছে, তারা হামাসের সন্ত্রাসী অবকাঠামো লক্ষ্য করে আঘাত করছে এবং নিজেদের আত্মরক্ষার জন্যই এই অভিযান।

যুক্তরাষ্ট্র ইসরায়েলের একনিষ্ঠ মিত্র হিসেবে অভিযানে সরাসরি অস্ত্র, গোয়েন্দা সহায়তা এবং কূটনৈতিক সমর্থন দিয়ে যাচ্ছে। হামাস এই ভূমিকার তীব্র সমালোচনা করে বলেছে, “এই যুদ্ধের পেছনে যুক্তরাষ্ট্রের অস্ত্র ও সমর্থন আছে বলেই ইসরায়েল এতটুকু নির্বিচারে হত্যা চালাতে পারছে।”

ইতোমধ্যেই লন্ডন, প্যারিস, জোহানেসবার্গ, ইসলামাবাদ, ঢাকাসহ অনেক শহরে ফিলিস্তিন সংহতি বিক্ষোভ অনুষ্ঠিত হয়েছে। তবে এই প্রথম হামাস নিয়মিত ও ধারাবাহিকভাবে সাপ্তাহিক আন্তর্জাতিক কর্মসূচি পালনের আনুষ্ঠানিক আহ্বান জানাল।

জাতিসংঘ ও অন্যান্য সংস্থার তথ্য অনুযায়ী, গাজার ৮০ শতাংশ মানুষ বাস্তুচ্যুত, খাদ্য, ওষুধ এবং বিশুদ্ধ পানির তীব্র সংকটে রয়েছে। রেড ক্রস ও ওয়ার্ল্ড ফুড প্রোগ্রাম জানায়, পরিস্থিতি “চরম মানবিক বিপর্যয়ে” রূপ নিচ্ছে।

এই আন্দোলন শুধু একটি রাজনৈতিক বার্তা নয়, বরং একটি মানবিক অবস্থান, যা আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে যুদ্ধবিরতির জন্য চাপ সৃষ্টিতে সক্রিয় হওয়ার আহ্বান জানায়।হ