রাজশাহীর আ.লীগ নেতা আক্কাছ ঢাকায় গ্রেপ্তার
নিজস্ব প্রতিবেদক : বিভিন্ন অপরাধে একাধিক মামলা ও অভিযোগে অভিযুক্ত রাজশাহীর বাঘা পৌরসভার সাবেক মেয়র আক্কাছ আলীকে ঢাকায় গ্রেফতার করেছে মহানগর গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশ। বৃহস্পতিবার (৩১ জুলাই) তাকে রাজধানী থেকে আটক করা হয়।
আক্কাছ আলী বাঘা পৌরসভার সাবেক মেয়র, উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও রাজশাহী জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য। তিনি বাঘা উপজেলার কলিগ্রামের মৃত সোলায়মান মণ্ডল চৈতীর ছেলে।
পুলিশের বিশেষ শাখার প্রতিবেদন অনুযায়ী, আক্কাছ আলীর বিরুদ্ধে বাঘা থানা ও আদালতে মোট ২২টি মামলা এবং ১৭টি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) রয়েছে। এসব মামলার মধ্যে রয়েছে হত্যা, ধর্ষণ, দুর্নীতি, চাঁদাবাজি, সন্ত্রাস, মাদকদ্রব্য সেবন ও ছিনতাইয়ের মতো গুরুতর অভিযোগ।
২০২৪ সালের ২২ জুন বাঘা পৌরসভায় দুর্নীতিবিরোধী মানববন্ধন চলাকালে আওয়ামী লীগ নেতা আশরাফুল ইসলাম বাবুলের ওপর আক্কাছ আলীর নেতৃত্বাধীন সন্ত্রাসী বাহিনী হামলা চালায়। বাবুল ৪ দিন পর রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে মারা যান। এ ঘটনায় দায়ের হওয়া হত্যা মামলার প্রধান আসামি আক্কাছ আলী। ওই মামলায়ও ২০২৪ সালের ৫ জুলাই তিনি ঢাকা থেকে গ্রেফতার হয়েছিলেন।
আক্কাছ আলীর বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) পৃথক দুটি মামলা করেছে। ২০২৪ সালের ২৮ অক্টোবর দুদকের রাজশাহী কার্যালয়ের উপসহকারী পরিচালক বোরহান উদ্দিন বাদী হয়ে জেলা ও দায়রা জজ আদালতে মামলাগুলো দায়ের করেন।
তাঁর বিরুদ্ধে আরও যেসব অভিযোগ রয়েছে, তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো—
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে কালো পতাকা প্রদর্শন
মাতাল অবস্থায় নারীকে বিবস্ত্র করা
পৌর কার্যালয়ে বসে মদ্যপান
আদালতকর্মী ও পুলিশের ওপর হামলা
চোরাচালানের মালামাল ছিনিয়ে নেওয়া
ধর্ষণ, সহিংসতা, চাঁদাবাজি ও টেন্ডারবাজি
সাবেক সংসদ সদস্য শাহরিয়ার আলমকে হত্যার হুমকি
পুলিশের গোপন তালিকায় আক্কাছ আলী স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের তালিকাভুক্ত একজন ‘সন্ত্রাসী’ হিসেবেও চিহ্নিত। বাঘা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আফম আছাদুজ্জামান বলেন, “আমরা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম থেকে আক্কাছ আলীর গ্রেফতারের খবর জেনেছি। এখনো আনুষ্ঠানিক কোনো বার্তা পাইনি।”
আক্কাছ আলী ২০০৬ সালের ২৯ মার্চ বাঘা পৌরসভার চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন এবং সর্বশেষ ২০২২ সালের ২৯ ডিসেম্বর মেয়র নির্বাচিত হন। তবে মেয়াদ শেষ হওয়ার আগেই তিনি নানা অপরাধে আলোচনার কেন্দ্রে চলে আসেন।