অতিমাত্রায় কীটনাশকে পরিবেশ বিপর্যয়ের আশঙ্কা
নিজস্ব প্রতিবেদক: কৃষিতে কীটনাশকের ব্যবহারে জনস্বাস্থ্য ও পরিবেশের উপর নানাবিধ ক্ষতিকর প্রভাব নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান বারসিক। আজ বুধবার (৩০ জুলাই) রাজশাহী মহানগরীর সাহেব বাজার জিরো পয়েন্ট এলাকার ওয়ারিসান হোটেল কনফারেন্স হলে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এই তথ্য তুলে ধরা হয়।
“জনস্বাস্থ্য ও পরিবেশের উপর কীটনাশকের ক্ষতিকর প্রভাব” বিষয়ক মাঠ পর্যায়ের অনুসন্ধানমূলক সমীক্ষার ভিত্তিতে এ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে বারসিক বরেন্দ্র অঞ্চল, রাজশাহী। সকাল ১১টা ২০ মিনিট থেকে দুপুর ১২টা ৩০ মিনিট পর্যন্ত চলা সম্মেলনে বারসিকের পরিচালক পাভেল পার্থ সভাপতিত্ব করেন।
অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন মো. শহিদুল ইসলাম, নৃবিজ্ঞানী ও আঞ্চলিক সমন্বয়ক, বারসিক বরেন্দ্র অঞ্চল; উপেন রবিদাস, সভাপতি, আদিবাসী যুব পরিষদ, রাজশাহী জেলা; এবং আতিকুর রহমান (আতিক), যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক, বরেন্দ্র ইয়ুথ ফোরাম বরেন্দ্র অঞ্চল রাজশাহী ও সাধারণ সম্পাদক, ইয়ুথ অ্যাকশন ফর সোস্যাল চেঞ্জ (ইয়্যাস) রাজশাহী।
সংবাদ সম্মেলনে বক্তারা বলেন, “কৃষিতে কীটনাশকের অনিয়ন্ত্রিত ও অতি ব্যবহারে জনস্বাস্থ্য এবং পরিবেশ উভয়ই চরম হুমকির মুখে পড়েছে। বিশেষ করে কৃষি জমিতে ব্যবহৃত রাসায়নিক কীটনাশক আশেপাশের জলজ ও স্থলজ জীববৈচিত্র্যে বিপর্যয় ডেকে এনেছে।”
মাঠ পর্যায়ের গবেষণায় দেখা গেছে, কীটনাশক প্রয়োগের পরপরই স্থানীয় পুকুরের মাছ, ব্যাঙ ও মৌমাছি জাতীয় পরাগবাহি পোকা এবং কিছু পাখি হঠাৎ করে কমে গেছে বা বিলুপ্ত হয়েছে।
বক্তারা আরও বলেন, “এই অবস্থা অব্যাহত থাকলে ভবিষ্যতে প্রাণবৈচিত্র্য রক্ষা করা কঠিন হয়ে পড়বে। একই সঙ্গে মানুষের স্বাস্থ্যেও দীর্ঘমেয়াদি নেতিবাচক প্রভাব পড়বে-যার মধ্যে রয়েছে ক্যানসার, প্রজনন ক্ষমতা হ্রাস, স্নায়বিক সমস্যা ইত্যাদি।”
সম্মেলনে বক্তারা কয়েকটি সুপারিশও তুলে ধরেন:
নিষিদ্ধ কীটনাশকের বিপণন ও ব্যবহার কঠোরভাবে বন্ধ করা।
গ্রাম ও স্থানীয় পর্যায়ে কীটনাশক ব্যবহার সম্পর্কিত স্বাস্থ্য তথ্য নিবন্ধন পদ্ধতি চালু করা।
প্রাণবৈচিত্র্যের জন্য ক্ষতিকর সব কীটনাশক সম্পূর্ণরূপে নিষিদ্ধ করা।
মিডিয়া, স্কুল ও সামাজিক সংগঠনের মাধ্যমে কীটনাশকের ক্ষতিকর দিক নিয়ে সচেতনতা বৃদ্ধি করা।
সম্মেলন শেষে বারসিকের পক্ষ থেকে সরকারের সংশ্লিষ্ট দপ্তর ও নাগরিক সমাজের প্রতি কীটনাশক ব্যবহারে সতর্কতা অবলম্বনের আহ্বান জানানো হয়।