আয়-ব্যয় বেড়েছে বেকায়দায় থাকা জাতীয় পার্টির

টুইট ডেস্ক: আন্দোলন-অভ্যুত্থানের রাজনৈতিক চাপের মধ্যে থেকেও বেড়েছে জাতীয় পার্টির আয় ও ব্যয়-দুই-ই। ২০২৪ পঞ্জিকা বছরে আগের বছরের তুলনায় আয় যেমন বেড়েছে, তেমনি ব্যয়ও হয়েছে বেশি।

বুধবার (৩০ জুলাই) দুপুরে জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য রেজাউল ইসলাম ভূঁইয়ার নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধি দল নির্বাচন কমিশনের সচিব আখতার আহমেদের কাছে দলটির ২০২৪ সালের আর্থিক বিবরণী জমা দেয়।

২০২৪ সালে আয় ও ব্যয়
দলটির দেওয়া হিসাব অনুযায়ী, ২০২৪ সালে জাতীয় পার্টির আয় হয়েছে ২ কোটি ৬৪ লাখ ৩৮ হাজার ৯৩৮ টাকা এবং ব্যয় হয়েছে ১ কোটি ৭৯ লাখ ৮৮ হাজার ৪৪ টাকা। এই হিসেবে বছর শেষে দলের হাতে ছিল ৮৪ লাখ ৫০ হাজার ৮৯৪ টাকা।

প্রতিনিধি দলে আরও ছিলেন খলিলুর রহমান খলিল, মো. নুরুজ্জামান ও মাহমুদ আলম।

আগের বছরের তুলনা
২০২৩ সালে দলটির আয় ছিল ২ কোটি ২২ লাখ ২ হাজার ৪০৫ টাকা এবং ব্যয় হয়েছিল ১ কোটি ১৩ লাখ ১৮ হাজার ৫২৫ টাকা।

২০২২ সালে আয় হয়েছিল ২ কোটি ২৯ লাখ ১৪ হাজার ৯৬৮ টাকা এবং ব্যয় ১ কোটি ২৮ লাখ ৩৭ হাজার ৫৪২ টাকা। বছর শেষে ব্যাংকে জমা ছিল ১ কোটি ৭ লাখ ৭৭ হাজার ৪২৬ টাকা।

২০২১ সালে আয় দেখানো হয়েছিল ২ কোটি ৯ লাখ ৮৫ হাজার ১৫৪ টাকা এবং ব্যয় ছিল ৮৪ লাখ ৬৮ হাজার ১৩৪ টাকা। জমা ছিল ১ কোটি ২৫ লাখ ১৭ হাজার ২০ টাকা।

২০২০ সালে দলটির ব্যয় ছিল ৭৬ লাখ ৪ হাজার ১২০ টাকা এবং উদ্বৃত্ত ছিল ৫১ লাখ ৬৮ হাজার ৭৫৭ টাকা ৫৪ পয়সা।

দলটির মূল আয় আসে মনোনয়ন ফরম বিক্রি, সদস্যদের চাঁদা, প্রকাশনা বিক্রিসহ বিভিন্ন উৎস থেকে। ব্যয়ের বড় অংশ যায় প্রচার কার্যক্রম, অফিস ব্যয় ও কর্মচারীদের বেতনে।

বেকায়দায় জাতীয় পার্টি
সাবেক সামরিক শাসক হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ প্রতিষ্ঠিত দলটি এখন বেকায়দায় রয়েছে। অভ্যুত্থানপন্থী বিভিন্ন সংগঠন তাদের কার্যক্রমে নিষেধাজ্ঞা চাচ্ছে, পূর্ববর্তী সময়ের ভূমিকার জন্য দলটিকে ‘ফ্যাসিস্টের দোসর’ বলেও অভিযুক্ত করছে।

জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সংলাপে অংশ নেওয়ার সুযোগও পায়নি জাতীয় পার্টি। প্রধান উপদেষ্টা বিভিন্ন সময়ে রাজনৈতিক নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করলেও সেখানে আমন্ত্রণ পাননি দলটির কেউ। এছাড়া গত অগাস্টের পর থেকে দলীয় কর্মসূচি করতেও পারছে না জি এম কাদেরের নেতৃত্বাধীন দলটি। বরং কর্মসূচি পালন করতে গিয়ে একাধিকবার হামলার শিকার হয়েছে।

নিয়মিত হিসাব জমা
গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ অনুযায়ী, প্রতি বছর ৩১ জুলাইয়ের মধ্যে রাজনৈতিক দলগুলোকে আগের বছরের আয়-ব্যয়ের হিসাব জমা দিতে হয় নির্বাচন কমিশনে। সে অনুযায়ী দলটি হিসাব জমা দিয়েছে।

বর্তমানে ইসিতে নিবন্ধিত দল রয়েছে ৫০টি। তবে আওয়ামী লীগের নিবন্ধন স্থগিত থাকায় এবার তারা আর্থিক বিবরণী দেয়নি। নিয়ম অনুযায়ী পরপর তিন বছর আয়-ব্যয়ের হিসাব না দিলে দলের নিবন্ধন বাতিলের সুযোগ রয়েছে কমিশনের হাতে।