খাগড়াছড়িতে আঞ্চলিক সংঘর্ষে নিহত ৪, পাহাড়ে উত্তেজনা
অশান্ত পাহাড়, জনমনে আতঙ্ক: খাগড়াছড়িতে দীঘিনালায় গোলাগুলিতে নিহত ৪
আবু রাসেল সুমন, জেলা প্রতিনিধি, খাগড়াছড়ি: খাগড়াছড়ির দীঘিনালায় আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে পাহাড়ের দুই আঞ্চলিক সশস্ত্র সংগঠন ইউপিডিএফ (প্রসীত গ্রুপ) ও জনসংহতি সমিতি (জেএসএস-মূল)-এর মধ্যে ভয়াবহ গোলাগুলিতে অন্তত ৪ জন নিহত হয়েছে বলে খবর পাওয়া গেছে।
ঘটনাটি ঘটেছে শুক্রবার (২৫ জুলাই) রাত ৮টার দিকে দীঘিনালা উপজেলার দুর্গম বাবুছড়া ইউনিয়নের ডোলছড়ি এলাকায়।
স্থানীয় সূত্র ও প্রশাসনের তথ্য অনুযায়ী, শুক্রবার (২৫ জুলাই) রাত ৮টার দিকে দীঘিনালা উপজেলার দুর্গম বাবুছড়া ইউনিয়নের ডোলছড়ি এলাকায় এই গুলিবিনিময়ের ঘটনা ঘটে। সংঘর্ষের সময় দুই পক্ষ থেকে তিনশ থেকে চারশ রাউন্ড গুলি ছোড়া হয় বলে প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান।
পুলিশ বলছে, এখনো নিশ্চিত নয় নিহতদের পরিচয়:
দীঘিনালা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. জাকারিয়া জানিয়েছেন, “এলাকাটি অত্যন্ত দুর্গম হওয়ায় এখন পর্যন্ত লাশ উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি। বাস্তব অবস্থার পরিপ্রেক্ষিতে লাশ উদ্ধার আদৌ সম্ভব হবে কি না, সেটি নিয়েও সন্দেহ রয়েছে। আমরা সতর্কতার সঙ্গে পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছি।”
স্থানীয়দের মধ্যে আতঙ্ক
ডোলছড়ি এলাকার বাসিন্দারা জানান, হঠাৎ রাত ৮টার দিকে গুলির শব্দে পুরো এলাকা কেঁপে ওঠে। সবাই ঘরের মধ্যে আতঙ্কিত অবস্থায় ছিল। সাধারণ মানুষ এমন ঘটনার পুনরাবৃত্তিতে হতাশ ও উদ্বিগ্ন। স্থানীয় এক বাসিন্দা বলেন, “এই রক্তপাত কবে থামবে? পাহাড়ে কবে শান্তির সুবাতাস বইবে?”
সংগঠনগুলোর অবস্থান
সংঘর্ষে ইউপিডিএফের চার সদস্য নিহত হওয়ার খবর ছড়িয়ে পড়লেও ইউপিডিএফ-এর পক্ষ থেকে বিষয়টি ‘গুজব’ হিসেবে উড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। ইউপিডিএফ সংগঠক অংগ্য মারমা এক বিবৃতিতে জানান, “আমাদের কোনো সদস্য সংঘর্ষে নিহত হয়নি। এ ধরনের গুজব আমাদের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করার একটি সুপরিকল্পিত প্রচেষ্টা।”
এ বিষয়ে জনসংহতি সমিতি (জেএসএস)-এর পক্ষ থেকে কোনো মন্তব্য পাওয়া যায়নি।
এই সহিংসতা শুধু হতাহতের ঘটনাই নয়, বরং পাহাড়ে দীর্ঘদিন ধরে চলা দ্বন্দ্ব ও অস্ত্রের দাপটের বাস্তব চিত্র। বিশেষজ্ঞদের মতে, রাজনৈতিক সমাধান ও পার্বত্য শান্তি চুক্তির পূর্ণ বাস্তবায়ন ছাড়া এ ধরনের রক্তক্ষয় থামানো সম্ভব নয়।