সাবেক এমপির বেয়াই পরিচয়ে ৪ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগ

নিজস্ব প্রতিবেদক: চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জ উপজেলার একজন পাথর আমদানিকারক ব্যবসায়ী মাহিদুর রহমান তার প্রায় ৪ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগ করেছেন।

এই অভিযোগ তিনি তুলেছেন নাটোরের উত্তর বড়গাছার বাসিন্দা মীর হাবিবুর কনস্ট্রাকশন লিমিটেডের নির্বাহী পরিচালক মীর হাবিবুর আলম বোখতিয়ারের বিরুদ্ধে।

৮ জুলাই (মঙ্গলবার) দুপুরে রাজশাহী নগরীর একটি রেস্টুরেন্টে এক সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে অভিযোগটি প্রকাশ করেন মাহিদুর রহমান। সংবাদ সম্মেলনে তিনি লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন এবং বিভিন্ন প্রমাণপত্র উপস্থাপনেরও ঘোষণা দেন।

মাহিদুর রহমান জানান, তিনি “মেসার্স নয়ন এন্টারপ্রাইজ” নামক প্রতিষ্ঠানের স্বত্বাধিকারী এবং দীর্ঘদিন ধরে সোনামসজিদের শিয়ালমারা এলাকায় পাথর আমদানি করে আসছেন। একইসঙ্গে তার মতো আরও অনেক ব্যবসায়ীও ওই এলাকায় নিয়মিত পাথর আমদানি করেন এবং মীর হাবিবুর আলমের প্রতিষ্ঠানকে পাথর সরবরাহ করে থাকেন।

তার ভাষ্য অনুযায়ী, এ পর্যন্ত তিনি মীর হাবিবুর আলমের কাছে মোট ১৯ কোটি ৩৪ লাখ ১২ হাজার ৩৭৯ টাকার পাথর সরবরাহ করেছেন। এর মধ্যে ৩ কোটি ৯৫ লাখ ১২ হাজার ৩৭৯ টাকা এখনো বকেয়া রয়েছে। বহুবার যোগাযোগের পরও পাওনা টাকা পরিশোধ না করে মীর হাবিব নানা অজুহাতে সময়ক্ষেপণ করছেন।

অভিযোগে মাহিদুর বলেন, “মীর হাবিব নিজেকে সাবেক সংসদ সদস্য শফিকুল ইসলামের বেয়াই হিসেবে পরিচয় দেন। তিনি আরও বলেন, তাঁর সঙ্গে নাকি বিভিন্ন মন্ত্রী ও সংসদ সদস্যদের গভীর যোগাযোগ আছে। এসব পরিচয় ব্যবহার করে তিনি ভয়ভীতি দেখান এবং প্রভাব খাটান।”

মাহিদুর আরও বলেন, “মীর হাবিব নিয়মিতভাবে সড়ক ও জনপথ (সওজ) বিভাগের কোটি কোটি টাকার বিল উত্তোলন করেন। অথচ আমাদের প্রাপ্য টাকা ফিরিয়ে দেন না। এতে আমাদের ব্যবসা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। আমরা ব্যাংক ঋণের চাপে পড়েছি। পরিবার নিয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছি।”

ভুক্তভোগী এই ব্যবসায়ী জানান, তিনি রাজশাহীর রাজপাড়া থানার ওসি, সওজের অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী, সেনাবাহিনীসহ একাধিক সরকারি দপ্তরে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। কিন্তু এখনো কোনো ধরনের আইনি সহায়তা বা প্রতিকার পাননি।

মাহিদুর রহমান আরও বলেন, “আমার কাছে প্রমাণ হিসেবে লিখিত চুক্তিপত্র, ভিডিও এবং দপ্তরে দেওয়া অভিযোগপত্র রয়েছে। আমি চাই সাংবাদিকরা এই প্রতারণার চিত্র জনসমক্ষে তুলে ধরুন, যাতে আমরা আমাদের ন্যায্য পাওনা ফেরত পাই।”

সংবাদ সম্মেলনের শেষদিকে মাহিদুর রহমান ঘোষণা দেন, “যে সাংবাদিক মীর হাবিবুর আলমকে আইনের আওতায় আনতে সহায়তা করবেন, তাঁকে আমি ব্যক্তিগতভাবে ১ লাখ টাকা পুরস্কার দেব।”

তিনি প্রশাসনের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেন, “এই প্রতারকের বিরুদ্ধে দ্রুত ব্যবস্থা নিতে হবে। যাতে আমরা ব্যবসা বাঁচাতে পারি এবং আমাদের পাওনা আদায় নিশ্চিত হয়।”