ইলন মাস্কের ‘আমেরিকা পার্টি’ গঠনকে ‘হাস্যকর’ বললেন ট্রাম্প
বিশ্ব ডেস্ক: যুক্তরাষ্ট্রের অন্যতম শীর্ষ ধনকুব ও প্রযুক্তি উদ্যোক্তা ইলন মাস্ক নতুন একটি রাজনৈতিক দল গঠনের ঘোষণা দিয়েছেন। দলটির নাম দিয়েছেন ‘আমেরিকা পার্টি’।
তবে মাস্কের এই উদ্যোগকে ‘হাস্যকর’ বলে মন্তব্য করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ও আসন্ন নির্বাচনে রিপাবলিকান দলের সম্ভাব্য প্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্প।
রবিবার (৬ জুলাই) স্থানীয় সময় নিউ জার্সির মোরিসটাউনে অবস্থিত ট্রাম্প ন্যাশনাল গলফ ক্লাব থেকে ওয়াশিংটনে ফেরার পথে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে ট্রাম্প এই মন্তব্য করেন। তিনি বলেন, “তৃতীয় একটি রাজনৈতিক দল গঠনের চিন্তা হাস্যকর। রিপাবলিকান পার্টির সঙ্গে আমরা দারুণ সাফল্য পেয়েছি। ডেমোক্র্যাটরা পথ হারিয়েছে। আমেরিকার রাজনীতি সবসময়ই দুই-দলীয় ছিল এবং তৃতীয় দল কেবল বিভ্রান্তি বাড়ায়।”
ট্রাম্প আরও বলেন, “এই দেশের রাজনৈতিক কাঠামো দুই দলকে ঘিরেই তৈরি। তৃতীয় দল কখনোই কার্যকর হয়নি। মাস্ক হয়তো মজা করছে, কিন্তু এটা আসলে হাস্যকর।”
এ মন্তব্য দেওয়ার পর ট্রাম্প তার নিজস্ব সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম Truth Social-এ আরো এক ধাপ এগিয়ে গিয়ে লেখেন, “গত পাঁচ সপ্তাহে ইলন মাস্ক পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণহীন হয়ে পড়েছে—সে এখন একেবারে একটি রেল দুর্ঘটনার মতো।”
মাস্কের দল গঠনের পেছনের কারণ
শনিবার (৫ জুলাই) এক ভিডিও বার্তায় ইলন মাস্ক তার নতুন রাজনৈতিক দল ‘আমেরিকা পার্টি’র ঘোষণা দেন। তিনি অভিযোগ করেন, “ট্রাম্পের কর ছাড় এবং অবাধ ব্যয়ের নীতির ফলে যুক্তরাষ্ট্র দেউলিয়ার পথে হাঁটছে। বিদ্যমান দুই প্রধান দল—রিপাবলিকান ও ডেমোক্র্যাট—উভয়ই দেশকে সঠিকভাবে নেতৃত্ব দিতে ব্যর্থ হয়েছে। তাই জনগণের জন্য একটি বিকল্প দরকার।”
তিনি আরও জানান, ‘আমেরিকা পার্টি’ হবে প্রযুক্তিনির্ভর, স্বাধীন ও উদ্ভাবন-ভিত্তিক রাজনীতির প্রতীক। মাস্কের দাবি, তার দল ভবিষ্যতের মার্কিন নেতৃত্বে ‘নতুন দিকনির্দেশনা’ দেবে এবং আগামী নির্বাচনে তিনি নিজে অংশ না নিলেও দলের পক্ষ থেকে প্রার্থী দাঁড় করানো হবে।
রাজনীতিতে মাস্ক বনাম ট্রাম্প?
রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, মাস্কের এ ঘোষণার পর ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রতিক্রিয়া আসা অবশ্যম্ভাবী ছিল। কারণ মাস্কের মতপ্রকাশ এবং সমাজমাধ্যমে সরব ভূমিকা তাকে ইতিমধ্যেই রিপাবলিকান ভোট ব্যাংকের একটি অংশে প্রভাব বিস্তারের সুযোগ করে দিয়েছে। তবে রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকরা এটাও মনে করছেন যে, মাস্কের এই নতুন দল আদৌ কতটা প্রভাব ফেলতে পারবে, তা সময়ই বলে দেবে।
যুক্তরাষ্ট্রের রাজনীতিতে ইতোমধ্যেই মাস্ক বনাম ট্রাম্প বিতর্ক নতুন উত্তাপ ছড়াচ্ছে। সামনে প্রেসিডেন্ট নির্বাচন থাকায় এই ধরণের অবস্থান রাজনীতিকে আরও বহুমাত্রিক করে তুলবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। এখন দেখার বিষয়, ইলন মাস্কের ‘আমেরিকা পার্টি’ কী শুধুই আলোচনার খোরাক হবে, নাকি বাস্তবিক প্রভাব ফেলতে পারবে আমেরিকার রাজনীতিতে।