নতুন রাজনৈতিক বার্তা নিয়ে রাস্তায় নামছে এনসিপি
১ থেকে ৩০ জুলাই সারাদেশে চলবে পদযাত্রা, ৩ আগস্ট ইশতেহার ঘোষণার ঘোষণা
টুইট নিউজ২৪: বাংলাদেশের রাজনৈতিক অঙ্গনে নতুন বার্তা নিয়ে আবারও মাঠে নামছে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)। দলটি ঘোষণা দিয়েছে, আগামী ১ জুলাই থেকে ৩০ জুলাই পর্যন্ত সারা দেশে ‘জুলাই পদযাত্রা’ কর্মসূচি পালন করবে তারা। এই কর্মসূচির মূল শ্লোগান—‘দেশ গড়তে জুলাই পদযাত্রা’।
রোববার রাজধানীর বাংলামটরে রূপায়ণ টাওয়ারে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এনসিপির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম এই কর্মসূচির ঘোষণা দেন।
পদযাত্রার কর্মসূচি: তিনটি বড় ধাপ
নাহিদ ইসলাম জানান, জুলাই পদযাত্রা হবে একটি প্রতীকী ও সংগঠিত গণআন্দোলন, যা নতুন রাজনৈতিক বিকল্প গড়ার উদ্দেশ্যে নেওয়া হচ্ছে। কর্মসূচিতে রয়েছে—
১ জুলাই – শহীদ আবু সাঈদের কবর জিয়ারতের মাধ্যমে ‘জুলাই পদযাত্রা’র সূচনা।
৩ আগস্ট – ছাত্র-জনতার পক্ষ থেকে ইশতেহার ও “জুলাই ঘোষণাপত্র” পাঠ।
৫ আগস্ট – “ছাত্র-জনতার মুক্তি দিবস” পালন।
কেন এই পদযাত্রা?
সংবাদ সম্মেলনে এনসিপির আহ্বায়ক বলেন,
“জুলাই ঘোষণাপত্র দেওয়ার প্রতিশ্রুত সময় শেষ হয়ে গেছে। সরকারের পক্ষ থেকে আমরা কোনো কার্যকর পদক্ষেপ দেখিনি। সরকার ব্যর্থ। তাই আমরা, জনগণের পক্ষ থেকে, সেই দায়িত্ব নিজেরা নিচ্ছি।”
তিনি আরও বলেন, “বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ গড়ার লড়াই শুধু নির্বাচনী রাজনীতিতে সীমাবদ্ধ নয়। মানুষ এখন নেতৃত্ব চায়—জবাবদিহিতার, স্বচ্ছতার, কর্মনির্ভর ও জাতীয় উন্নয়নের নেতৃত্ব। এনসিপি সেই দাবির রাজনৈতিক প্ল্যাটফর্ম হিসেবে এগোচ্ছে।”
জনগণকে সঙ্গে নেয়ার বার্তা
নাহিদ ইসলাম দৃঢ় কণ্ঠে বলেন,
“আমরা কারো বিকল্প নই, আমরা ভবিষ্যতের পথচলা। এই পদযাত্রা হবে বাংলাদেশের সাধারণ মানুষের আকাঙ্ক্ষার প্রতিনিধিত্ব।”
তিনি জানান, পদযাত্রায় তরুণ, ছাত্র, নারী, শ্রমিক, কৃষক—সকল শ্রেণির প্রতিনিধিদের যুক্ত করার পরিকল্পনা রয়েছে। দেশব্যাপী স্থানীয় পর্যায়ে এনসিপির নেতাকর্মীরা ইতোমধ্যে প্রস্তুতি নিচ্ছেন।
রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট ও বিশ্লেষণ
২০২৪ সালের বিতর্কিত জাতীয় সংসদ নির্বাচন ও রাজনৈতিক অনাস্থার পটভূমিতে এনসিপির এই কর্মসূচি বিশেষ তাৎপর্যপূর্ণ। জনবিচ্ছিন্ন রাজনীতির বিরুদ্ধে বিকল্প শক্তি হিসেবে এনসিপির অবস্থান সুদৃঢ় করতে পারে এই পদযাত্রা।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, সরকার ও প্রচলিত বিরোধী দলগুলোর মধ্যে জনসম্পৃক্ততার অভাবে অনেক তরুণই বিকল্প রাজনৈতিক চেতনার খোঁজ করছেন—যা এনসিপির মতো উদীয়মান দলের জন্য সুযোগ তৈরি করছে।
‘জুলাই পদযাত্রা’ কেবল একটি কর্মসূচি নয়, বরং একটি নতুন রাজনৈতিক চিন্তা ও চেতনার প্রতীক। এনসিপি যদি এই কর্মসূচিতে সুশৃঙ্খলতা, স্পষ্ট বার্তা ও জনগণের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে পারে—তবে তা হতে পারে বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ রাজনীতিতে একটি নতুন বাঁক।