বিশ্বের সব ধরনের বিমান ইঞ্জিনে চীনের দখল
চীনের WS-20 ইঞ্জিনসহ Y-20B বিমান: বিশ্বজুড়ে বিমান প্রযুক্তিতে আধিপত্যের নতুন ঘোষণা
বিশ্ব ডেস্ক: বিশ্বের প্রতিটি ধরনের সামরিক বিমান ইঞ্জিন এখন চীনের দখলে। চীন প্রথমবারের মতো সম্পূর্ণ দেশীয় প্রযুক্তিতে নির্মিত WS-20 হাই-বাইপাস টার্বোফ্যান ইঞ্জিন দিয়ে পরিচালিত Y-20B স্ট্র্যাটেজিক ট্রান্সপোর্ট বিমান সফলভাবে পরিচালনায় এনেছে। এর ফলে দেশটি প্রমাণ করেছে যে, তারা আধুনিক বিশ্বে ব্যবহৃত সব ধরণের বিমান ইঞ্জিন প্রযুক্তি নিজেরাই তৈরি ও ম্যাস প্রোডাকশনে সক্ষম।
কী এই Y-20B এবং WS-20 ইঞ্জিন?
Y-20B হলো একটি কৌশলগত পরিবহন বিমান, যা অনেকটা মার্কিন C-17 Globemaster-এর চীনা সংস্করণ।
এই বিমানটি চালিত হচ্ছে WS-20 ইঞ্জিন দ্বারা, যা উচ্চ থ্রাস্ট, কম জ্বালানি ব্যয়, এবং দীর্ঘ পাল্লার ক্ষমতা প্রদান করে।
WS-20 ইঞ্জিনের থ্রাস্ট ক্ষমতা, প্রায় 31,000 পাউন্ড। এটি পূর্বে ব্যবহৃত রাশিয়ান D-30KP-2 ইঞ্জিনের চেয়ে অনেক উন্নত। এই ইঞ্জিন PLA Air Force-কে নিজস্ব প্রযুক্তিতে সম্পূর্ণ নির্ভরশীল করেছে।
চলতি বছরেই কার্যক্রমে এসেছে Y-20B। ২০২৪ সালের শেষের দিকে স্যাটেলাইট ছবিতে প্রথম দেখা যায় Y-20B বিমান WS-20 ইঞ্জিনসহ বিভিন্ন ঘাঁটিতে স্থাপিত হয়েছে। বিশেষ করে Kaifeng ঘাঁটিতে বহু সংখ্যক Y-20B দেখা গেছে, যা ইঙ্গিত করে যে এটি এখন চীনের স্থায়ী বিমান বহরে যুক্ত হয়েছে।
চীনের WS-20 ইঞ্জিন এবং Y-20B বিমান তাদের বিমান বাহিনীর সক্ষমতাকে বহু গুণে বাড়িয়ে দিয়েছে ।
এক ট্যাংক জ্বালানিতে দীর্ঘ দূরত্ব পাড়ি দেওয়া সম্ভব, বর্ধিত লোড বহনে সক্ষমতা অর্জন, YY-20 রিফুয়েলিং ট্যাংকার বিমান তৈরির পথ তৈরি, ম্যাস প্রোডাকশন সক্ষমতা চীনকে বিশ্বব্যাপী বিমান ইঞ্জিন বাজারে স্বয়ংসম্পূর্ণ করেছে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই অর্জনের মাধ্যমে চীন এখন পশ্চিমা বিশ্বের Rolls Royce Trent, GE CF6, Pratt & Whitney PW4000 ইঞ্জিন প্রযুক্তির সঙ্গে সমানতালে প্রতিযোগিতায় নামতে সক্ষম।
বিশ্বব্যাপী প্রতিক্রিয়া
বিশ্বের প্রতিরক্ষা বিশ্লেষকদের মতে, WS-20 এর সফল বাস্তবায়ন শুধু প্রযুক্তিগত সাফল্য নয়—এটি চীনের কৌশলগত ক্ষমতার উদ্ঘাটন। এটি PLA-কে এখন থেকে আরও স্বাধীনভাবে বাণিজ্যিক ও সামরিক পরিবহন এবং রিফুয়েলিং পরিচালনা করতে সক্ষম করবে।
Y-20B এর মাধ্যমে চীন প্রমাণ করেছে যে, তারা শুধু ফাইটার জেট নয়—বিশ্বের যেকোনো ধরনের বিমান ইঞ্জিন প্রযুক্তিতেও এখন মাস্টারি ও ম্যাস-প্রোডাকশন সক্ষমতা অর্জন করেছে।
এটি শুধু তাদের নিজস্ব সামরিক প্রয়োজনে নয়, ভবিষ্যতে রপ্তানির ক্ষেত্রেও বড় প্রতিযোগী হয়ে উঠতে পারে।