ভারত-বাংলাদেশ উত্তেজনা বাড়ছে
টুইট প্রতিবেদন: ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে সাম্প্রতিক উত্তেজনা নতুন মাত্রা পেয়েছে, যা কূটনৈতিক সম্পর্ক, বাণিজ্য এবং নিরাপত্তা ইস্যুতে গভীর প্রভাব ফেলছে। এই উত্তেজনার কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছে ভারতের সিলিগুড়ি করিডোর, যা “চিকেনস নেক” নামে পরিচিত এবং ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলকে মূল ভূখণ্ডের সঙ্গে সংযুক্ত করে।
কূটনৈতিক টানাপোড়েন
২০২৪ সালের আগস্টে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পদত্যাগের পর বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকার চীন ও পাকিস্তানের সঙ্গে সম্পর্ক জোরদার করছে। এই পরিবর্তনের ফলে ভারত-ভিত্তিক কূটনৈতিক প্রভাব হ্রাস পেয়েছে, যা দুই দেশের মধ্যে পারস্পরিক সন্দেহ ও কৌশলগত প্রতিযোগিতা বাড়িয়েছে ।
বাণিজ্যিক সম্পর্কের অবনতি
ভারত সম্প্রতি বাংলাদেশের ৭৭০ মিলিয়ন মার্কিন ডলারের পণ্য আমদানিতে সীমাবদ্ধতা আরোপ করেছে, যা মোট আমদানির ৪২%। এই পদক্ষেপটি বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের নেতাদের মন্তব্যের প্রতিক্রিয়া হিসেবে নেওয়া হয়েছে, যেখানে তারা ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের সমৃদ্ধি ব্যাহত করার ইঙ্গিত দিয়েছেন ।
বাংলাদেশের রপ্তানিকারকরা এই সীমাবদ্ধতাকে “অ-শুল্ক বাধা” হিসেবে উল্লেখ করেছেন, যা তাদের রপ্তানি প্রতিযোগিতায় নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে ।
নিরাপত্তা উদ্বেগ ও সিলিগুড়ি করিডোর
আসাম রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্ব শর্মা সতর্ক করেছেন যে, যদি বাংলাদেশ ভারতের সিলিগুড়ি করিডোরকে লক্ষ্য করে, তবে ভারত বাংলাদেশের দুটি করিডোরকে লক্ষ্য করতে পারে । এই মন্তব্য বাংলাদেশের একটি ইসলামপন্থী গোষ্ঠীর “গ্রেটার বাংলাদেশ” মানচিত্র প্রচারের প্রতিক্রিয়ায় এসেছে, যা ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলকে অন্তর্ভুক্ত করেছে ।
ভবিষ্যতের দিকনির্দেশনা
এই উত্তেজনাপূর্ণ পরিস্থিতিতে, দুই দেশের মধ্যে কূটনৈতিক সংলাপ ও পারস্পরিক শ্রদ্ধার ভিত্তিতে সম্পর্ক পুনর্গঠন জরুরি। বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, কৌশলগত গভীরতা কেবলমাত্র সামরিক শক্তি বা রাজনৈতিক সমর্থনের মাধ্যমে অর্জন করা যায় না; এটি অর্জন করতে হয় পারস্পরিক সম্মান, সংযম এবং প্রতিবেশীদের সমানভাবে দেখার মাধ্যমে ।
বর্তমান পরিস্থিতি দক্ষিণ এশিয়ার আঞ্চলিক স্থিতিশীলতা ও অর্থনৈতিক সহযোগিতার জন্য একটি বড় চ্যালেঞ্জ। এই সংকট কাটিয়ে উঠতে, উভয় দেশকে কূটনৈতিক সংলাপ, বাণিজ্যিক সহযোগিতা এবং নিরাপত্তা ইস্যুতে পারস্পরিক বোঝাপড়া বৃদ্ধির দিকে মনোনিবেশ করতে হবে।